বিয়ে মানেই আমাদের দেশে উদযাপন-হইহই! নাচ-গান-ভুরিভোজ, নানা রীতি রেওয়াজ, এই সব মিলিয়ে বিয়ে। বিয়ে মানে শুধুই কি আর বিয়ের দিন? নাহ...আগে পরে মিলিয়ে ৫-৭ দিনের ঘটনার ঘনঘটা! তবে দেশের সবচেয়ে ধনী পরিবারে বিয়ে হলে, তা দেখতে কেমন হয়, দেখছে গোটা দুনিয়া। মুকেশ এবং নীতা আম্বানির ছোট ছেলে অনন্ত আম্বানি এবং রাধিকা মার্চেন্টের বিয়ে এবং প্রাক বিয়ে মিলে উদযাপন চলছে সাত দিন নয়, সাত মাস ধরে।
অনন্ত-রাধিকার বিয়ের উদযাপন শুরু হয়েছিল রাজস্থানে, গত ডিসেম্বরে। মরুশহরের এক মন্দিরে অনন্ত, রাধিকার পানিপ্রার্থণা করলেন আনুষ্ঠানিক ভাবে,। সাক্ষী থাকল পরিবার-পরিজনেরা। মাস সাতেক আগের সে উদযাপন ছিল ছিমছাম।
রোকা, অর্থাৎ বাগদান সারা হলে নতুন বছরের শুরুতে হল এনগেজমেন্ট পার্টি, সে পার্টি আলো করলেন বলিউডের তাবড় তাবড় তারারা, শাহরুখ, দীপিকা, রনভির, আলিয়া ভাট, রণবীর কাপুররা।
দ্বিতীয় উদযাপনের সময়ও ভারতবাসী জানেই না, পিকচার অভি বাকি হ্যায়। বিয়ে নয়, প্রিওয়েডিংকেও এমন মেগা ইভেন্ট করে তোলা যায়, সারা বিশ্বের হু'জ হুদের নিয়ে আসা যায়, ভারতে, তাও কোথায়? রাজধানী নয়, গুজরাটের জামনগরে, প্রথমবার দেখল গোটা বিশ্ব। আমন্ত্রিতের তালিকায় ১২০০ নাম, তাও আবার যে সে নাম নয়, মার্ক জুকারবার্গ থেকে বিল গেটস, এলেন তিনদিন ব্যাপী চলা সেই চোখ ঝলসে দেওয়া অনুষ্ঠানে, পারফর্ম করলেন রিহানা। জামনগরের ৫০,০০০ গ্রামবাসীকে পাত পেড়ে খাওয়াল আম্বানি পরিবার। বলিউডের তিন খান একসঙ্গে মঞ্চ আলো করলেন।
এবার এল এপ্রিল, খাতায়-কলমে বসন্ত, হবু কনের মনে তো বটেই। বন্ধুদের সঙ্গে জমিয়ে ব্রাইডাল শাওয়ার উপভোগ করলেন রাধিকা। কনের বান্ধবীরা সাজলেন গোলাপি সিল্কের পাজামা স্যুটে, রাধিকা সাজলেন আইভরিতে।
আবার প্রি ওয়েডিং। সে কী! মার্চে হল, না? তাতে কী? কোথায় লেখা আছে, এক বিয়েতে একবারই প্রাক বিবাহ উদযাপন হবে? আম্বানি পরিবার যখন, একটু বাড়তি সেলিব্রেশন তো হবেই। অতএব প্রিওয়েডিং পার্ট টু! এবার উদযাপন দেশের বাইরে, চারদিন ধরে উদযাপন হল ইওরোপিয়ান ক্রুজে। বলিউডের তারকা মুখ ছাড়াও জল-পরীদের রূপকথায় অংশ নিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যান্ড ব্যাকস্ট্রিট বয়েজ, কেটি পেরি।
জুলাই...দেখতে দেখতে বিয়ের মাস এসে উপস্থিত, বছরের সবচেয়ে চর্চিত বিয়েটি হতে চলেছে দিন দশেকের মধ্যেই। মেগা ইভেন্ট-এর দিন দশেক বাকি থাকতেই গণবিবাহের আয়োজন করল আম্বানি পরিবার। ৫০ টিরও বেশি আর্থিকভাবে পিছিয়ে থাকা পরিবারের জন্য গণবিবাহের আয়োজন করা হয়। দম্পতিদের পরিবার সমেত প্রায় ৮০০ জন উপস্থিত ছিলেন এই বিয়ের আসরে।
ডি ডে এগিয়ে আসছে একটু একটু করে, এবার হল মামেরু। গুজরাতি বিয়েতে কনেকে কনের মামা বিয়ের উপহার দেন, সেই আচারকে বলে মামেরু।
গায়ে গলুদ-মেহেন্দি-সঙ্গিত
এবার আসল প্রিওয়েডিং। মানে প্রাকবিবাহ যাবতীয় আচার-রীতি। একে একে হল, গায়ে হলুদ-মেহেন্দি-সঙ্গীত। সে উদযাপনেও তারার মেলা। গান গাইতে মুম্বইতে উড়ে এলেন জাস্টিন বিবার।
এবার ডি ডে। ১২ জুলাই। ভারতীয় রূপকথায় নয়া মাপকাঠি হয়ে থাকতে চলেছে এই দিন। রাধিকা মার্চেন্ট-অনন্ত আম্বানির 'বিগ ফ্যাট ওয়েডিং'-এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। যে দিন, চারহাত এক হবে, যে দিন, পেরোলে বলা যায় ...অ্যান্ড দে লিভ হ্যাপিলি এভার আফটার...