গত কয়েকদিন ধরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় শুরু হয়েছে খণ্ড যুদ্ধ। পরিচালক শিবপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে দেবভক্তদের হুমকি দেওয়ার ঘটনা নিয়ে সরগরম টলিউড। মঙ্গলবার থেকে শিবপ্রসাদকে লাগাতার হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলে ফুঁসে উঠেছিলেন পরিচালকের স্ত্রী তথা স্বনামধন্যা চিত্রনাট্যকার জিনিয়া সেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এর বিরুদ্ধে সরব হয়ে তিনি লিখেছিলেন, ‘‘সোশাল মিডিয়াতে ফ্যান ক্লাবের উপদ্রব ও হুমকি জীবনের একটি অংশ । মুক্তির দিনে কাউন্টার ভোটিং, ‘অন্তহীন’ ট্রোলিং উপেক্ষা করে শিবপ্রসাদের ছবিগুলি জনপ্রিয় হয়েছে বলেও সেদিন তিনি জানিয়েছিলেন ৷” এরপর পুষ্পার ঢঙে বলেন, ‘ঝুকেগা নেহি’।
এরপর থেকেই দেবভক্তদের ‘টনিক’ আরও বাড়তে থাকে। পরিচালককে গালিগালাজ, ভয় দেখানো তো চলছেই, ছাড়া পাননি পরিচালকের স্ত্রীও। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে কাজে লাগিয়ে বিকৃত করা হয়েছে পরিচালকের স্ত্রীয়ের ছবি। সেই ছবি ছড়িয়েও দেওয়া হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। এর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে সস্ত্রীক পুলিশের দ্বারস্থ হন শিবপ্রসাদ।
বুধবার শিবপ্রসাদ এবং জিনিয়া যান রাজ্য পুলিশের সদর দফতর ভবানী ভবনে ৷ পাশাপাশি লালবাজারের সাইবার সেলেও তাঁরা অভিযোগ জানিয়েছেন। দম্পতি রবীন্দ্র সরোবর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন এবিষয়ে। সংবাদমাধ্যমকে জিনিয়া বলেন, "বুধবার সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ আমাকে ট্যাগ করে আমার বিকৃত ছবি সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়। সঙ্গে সঙ্গে ছবি মুছে অভিযুক্তকে ব্লক করে দিই।”
এই বিষয়ে দেবের নীরব থাকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন জিনিয়া। তিনি জানান, “সমস্ত বন্ধু, ঘনিষ্ঠরা পাশে। কেবল যাঁকে সামনে রেখে এত কাণ্ড সেই তিনি-ই নিরুত্তর।"
জিনিয়া সেন বলেন, "একটাই কথা বলব, এরকম পরিস্থিতি বাংলা সিনেমা ইন্ডাস্ট্রির এর আগে হয়নি । এরকম ফ্যান ক্লাবের উৎপাত আগে দেখা যায়নি কখনও । যেখানে একটা ধর্ষণ-কাণ্ড হয়ে বসে আছে শহরে । সেখানে দাঁড়িয়ে আবারও এরকম কুরুচিপূর্ণ কথাবার্তা । এদের বড় রকমের শাস্তি হওয়া উচিত । আর সেটার ব্যবস্থা আমরা করব ।’’
জিনিয়া শিবপ্রসাদের পাশে দাঁড়িয়ে মুখ খুলেছেন রুদ্রনীল ঘোষ, ঋতাভরী চক্রবর্তীরাও। অভিনেত্রী সোশাল মিডিয়ায় লিখেছেন, ঋতাভরী জানান ‘নোংরামির একটা সীমা আছে। এই রেপ মেন্টালিটিকেও জাস্টিফাই করা হবে? তারকারা না হয় দাঁতে দাঁত চেপে ট্রোল সহ্য করে, কিন্তু ঘরের বউ, দিদি কাউকে একা ছাড়বে না?’
রুদ্র সোশ্যাল মিডিয়ায় লেখেন, “ নিশ্চই ভাই Dev তার এসব দেবতুল্য ফ্যান(দেবীয়ান) ভাইদের কথা জানে না!! জানলে নিশ্চই সে তার অফিসিয়াল প্রোফাইল থেকে এদের একবার বোঝাতো যে, সে সত্যি অবিবাহিত এবং সে কারো বাপ নয়, বরং সে বাংলা ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির একজন নিষ্ঠাবান লড়াকু ও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিনেমাযোদ্ধা। এসব দেখলে নিশ্চই বোঝাতো, এই ধরণের "লাগাতার অকারণ বেশী মিষ্টি পরিবেষণে" কারো না কারো ডায়োবিটিস হতে পারে এবং তার এসব দেখে তারও কষ্ট হয়। উত্তম কুমার বেঁচে থাকলে হয়তো এসব কান্ড দেখে মুচকি হেসে পোস্ট করতেন, " সেটা বড় কথা নয়"
যদিও এই ব্যাপারে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি দেব। কিন্তু ‘খাদান’-এর প্রথম হল ভিজিটের পর দেব নিজে বলেছিলেন ‘বহুরূপী’ চব্বিশের বিগেস্ট হিট। আর এই সাফল্য ‘খাদান’কে সাহায্য করেছে দর্শককে বেঁধে রাখার ক্ষেত্রে। অথচ ফ্যান ক্লাবের রেষারেষিতে টলিউড এখন আধাআধি।