সুখকর্তা, দুঃখহর্তা, বাধা বিঘ্নহর্তা...সিদ্ধিবিনায়কের আরাধনায় মেতে গোটা দেশ । ধূমধাম করে গনপতি বাপ্পাকে স্বাগত জানিয়ে পুজো হচ্ছে বাংলার বিভিন্ন প্রান্তে । কিন্তু, এত আয়োজন, পুজোর জাঁকজমকের মধ্যেও সকলের মন ভারাক্রান্ত । প্রায় এক মাস হতে চলল । আর জি করের ঘটনায় এখনও বিচার পাননি না নির্যাতিতা । প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সর্বত্র । এমনই এক অশান্ত সময়ে বাপ্পার আগমন । বিশ্বাস করা হয়, যে কোনও সমস্যায়, গনেশকে স্মরণ করলে, তিনি সমস্ত বাধা, বিঘ্ন দূরে করে দেন । দুঃখ দূর করে সুখের চাদর মেলে দেন । তাই তো গনেশ চতুর্থীতে বিঘ্নহর্তার কাছে টলিউডের কলাকুশলীদের একটাই প্রার্থনা, এই অশান্ত সময় যেন খুব তাড়াতাড়ি কেটে যায় । মানুষের মধ্যে যেন চৈতন্য আনেন সিদ্ধিদাতা ।
প্রত্যেক বারের মতো এবারও বাড়িতে গনেশ পুজোর আয়োজন করেছেন টলি সুপারস্টার দেব । সোশ্যাল মিডিয়ায় গনেশজির ছবি শেয়ার করে দেব লিখেছেন, 'ভগবান আমাদের সবাইকে সৎবুদ্ধি দিক ।'
আর জি করের প্রতিবাদে সাধারণ মানুষের মতো টলি তারকারাও রাস্তায় নেমেছেন । হাতে হাতে ধরে বিচার চাইছেন তাঁরাও । এবার গনেশ মূর্তিকে প্রতিবাদের মাধ্যম করলেন অপরাজিতা আঢ্য । তিনি একটি গনেশ মূর্তি তৈরি করেছেন । সেই ছবি শেয়ারও করেছেন । দেখা গিয়েছে, গণেশমূর্তির পরনে চিকিৎসকের সাদা অ্যাপ্রন এবং গলায় স্টেথোস্কোপ। গণেশের কোলে একটি ছোট্ট হাতি । অপরাজিতার কথায়, গনেশের কাছে তিনি নির্যাতিতার বিচার চেয়েছেন । যেন কিছু চাপিয়ে না দেওয়া হয়। পাড়ার দাদা-কাকা বা কোন নেতা কী বলবেন, সেটা নিয়ে যেন না ভাবতে হয়। সঠিক গণতন্ত্র কায়েম হোক । এটাই প্রার্থনা তাঁর ঈশ্বরের কাছে ।
অপরাজিতার গনেশ মূর্তি তৈরির পিছনে একটি গল্পও রয়েছে । জানা গিয়েছে, মুম্বই গিয়ে একটি সমস্যায় পড়েছিলেন অভিনেত্রী । পরে সেই সমস্যা থেকে বেরিয়েই মুম্বইয়ের সিদ্ধিবিনায়ক মন্দিরে গিয়েছিলেন অপরাজিতা আঢ্য । সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, নিজের হাতে গণেশমূর্তি গড়বেন । এবছরই সেই গনেশ মূর্তি গড়লেন ।
আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদের পাশাপাশি ঝাড়গ্রামের অন্তঃসত্ত্বা হাতি-হত্যার বিষয়টিও তাঁর গনেশ মূর্তিতে দেখা গিয়েছে । গণেশের কোলে সেই অন্তঃসত্ত্বা হস্তিনীকেও রেখেছেন । সেইসঙ্গে লিখেছেন, "আমার গণপতির পরনে চিকিৎসকের পোশাক, তাতে ধর্ষকদের হাতের রক্ত ছাপ; গণেশের কোলে সেই অন্তঃসত্ত্বা হস্তিনী, যার নৃশংস খুন মন থেকে মুছে ফেলতে পারি না কিছুতেই।"
আর জি করের পাশাপাশি, অন্তঃসত্ত্বা হাতিকে জ্বলন্ত শলাকা মেরে খুনের ঘটনাতেও চলছে বিক্ষোভ । যেভাবে একটি মা হাতিকে খুন করা হল, তারপরেও কীভাবে এই দেশে গনেশ চতুর্থী পালন করা হচ্ছে ? প্রশ্ন তুলেছেন স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় । সোশ্যাল মিডিয়া, অন্তঃসত্ত্বা হাতির একটি ছবি পোস্ট করেছেন । যে ছবিতে সভ্যাতার আঘাতে রক্তাক্ত দেখা যাচ্ছে শিকল বাঁধা গণেশকে। গর্ভের সন্তানও রক্তাক্ত। ক্যাপশনে লেখা, "চিন্তা করো মনুষ্যকূল তুমি কোথায় চলেছো ?? মা হাতিকে হত্যা করার পরে “ গণেশ চতুর্থীর - সত্যিই কোন মানে আছে ??"
বাড়িতে গনেশ পুজো করেছেন মিমি চক্রবর্তীও । গণপতি বাপ্পার ছবি শেয়ার করে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন । এছাড়া, গনেশ পুজোর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, শ্রাবন্তী, মধুমিতা থেকে অঙ্কুশ হাজরারা ।