ধর্মের নামে হিংসা, হানাহানির সময়ে দাঁড়িয়ে, হাতে গোনা যে ক'টা উৎসব মানুষে মানুষে সব বিভাজন ভুলিয়ে দেয়, হোলি তার মধ্যে অন্যতম। মূলত হিন্দুদের মধ্যে রঙ খেলার প্রচলন, এ কথা সত্যি। কিন্তু, তাই বলে কি ভারতবর্ষের ইতিহাসে মুসলমান ধর্মাবলম্বীরা কখনও হোলি খেলেননি? আলবাত খেলেছেন। যে সে মানুষেরা নন, নবাবরাই হোলি খেলতেন, তাও আবার কখন? না, রমজানের সময়ে! আজ বলব, মন ভাল করে দেওয়া তেমন এক গল্প। নবাবের শহর লখনউয়ে হোলি খেলার গল্প।
নবাব আসিফ উদ দৌলা নাকি মহা ধূমধাম করে হোলি খেলতেন, গোটা শহরর সব ধর্মের মানুষ রঙের উৎসবে শামিল হতেন আজ থেকে আড়াইশ বছর আগে।
দেশের বাকি শহরে, একমাসের জন্য হলেও লখনৌ শহরে মহরম চলে দু'মাস ধরে। মহরম তো আসলে শোকযাপন। লখনউয়ের শেষ নবাব ওয়াজিদ আলি শাহের রাজত্বকালে একবার মহরম আর হোলি, একই সময় পড়েছে। একই সঙ্গে শোক আর আনন্দ উদযাপন সম্ভব? নবাব ওয়াজিদ আলি শাহ ঠিক করলেন দিনভর রং খেলবে লখনৌবাসী, সূর্যাস্তের পর মহরম পালন করা হবে। সেই সময় থেকেই মহরমে অংশ নেন এই শহরের হিন্দুরাও।
ভারত বহু ভাষা, বহু সংস্কৃতির দেশ, তাই, মজার বিষয় হলো, ভারতে একই উৎসবকে ঘিরে রয়েছে নানারকম উদযাপন নানা রকম সংস্কৃতি। রঙের উৎসব দোল, তার সবচেয়ে বড় উদাহরণ।
দেখে নেওয়া যাক সারা দেশে কোথায় কীভাবে উদযাপিত হয় এই উৎসব
লাটমার হোলি
উত্তরপ্রদেশের বারসানায় লাটমার হোলি খুব জনপ্রিয়। নাম শুনেই বোঝা যায়, মহিলারা পুরুষদের তাড়া করে লাঠি নিয়ে, এটাই খেলার নিয়ম।
লাড্ডু হোলি
মিষ্টিমুখ ছাড়া কীসের উদযাপন? উত্তরভারতের অনেক জায়গায় প্রচলিত লাড্ডু হোলি। লাড্ডু ছুড়েই হোলি খেলা হয়। ভক্তরা একে ঈশ্বরের আশীর্বাদ হিসেবেই গ্রহণ করেন।
বসন্ত উৎসব
বাংলায় শান্তিনিকেতনের বসন্ত উৎসব দেখতে আসেন সারা দেশ থেকে। দোল পূর্ণিমার দিন নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে উদযাপন করা হয় দিনটা।
ফুলোকি হোলি
মথুরার কাছে ব্রজে খেলা হয় ফুলো কি হোলি, সারা আকাশ বাতাস ছেয়ে থাকে ফুলে। একে অন্যের গায়ে আবির লাগানোর বদলে এখানে ছোড়া হয় গোলাপ, পদ্ম, গাঁদা ফুল।