যে মশলার জন্যই সারা বিশ্বের কাছে ভারতের পরিচিতি, সেই মশলাতেই কিনা বিষ! বাজার থেকে গুঁড়ো মশলা কিনে এনে রান্না করেন তো? সতর্ক হোন৷ হয়তো অজান্তে ক্যানসারের বিষ ঢুকিয়ে দিচ্ছেন নিজের এবং পরিজনদের শরীরে।
হংকংয়ের সেন্টার ফর ফুড সেফটি বা সিএফএস সম্প্রতি দুটি বিখ্যাত ভারতীয় মশলার ব্র্যান্ড এমডিএইচ এবং এভারেস্টের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। অভিযোগ, এই দুই ব্র্যান্ডের তিন ধরনের গুঁড়ো মশলায় ইথেলিন অক্সাইড নামক কীটনাশক পাওয়া গিয়েছে। এই মর্মে গত ১৮ এপ্রিল এই নোটিফিকেশন জারি করেছে সিঙ্গাপুর।
ইলেথিন অক্সাইডকে গ্রেড ১ কারসিনোজেনিক হিসেবে চিহ্নিত করে থাকেন চিকিৎসকেরা। শরীরে মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে ইথিলিন অক্সাইড গেলে তা মানব দেহের ক্যানসার কোষকে সক্রিয় করে তোলে। যে কোনও দেশের খাদ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা খাদ্যে ইথেলিন অক্সাইডের সর্বোচ্চ মাত্রা নির্দিষ্ট করে দেয়। এমডিএইচ এবং এভারেস্টের তিন ধরনের মশলায় সেই মাত্রা ছাড়িয়েছে।
Srijit Mukherji: সৌরসেনীকে ওজন বাড়ানোর 'আল্টিমেটাম' সৃজিতের! কেন এমন নির্দেশ?
নিয়মমাফিক নজরদারিতেই ধরা পড়েছে, এমডিএইচ গ্রুপের মাদ্রাজ কারি পাউডার, সম্বর মশালা পাউডার এবং এভারেস্টের ফিশ কারি মশালায় ইথেলিন অক্সাইড যথেষ্ট বেশি পরিমাণে আছে। এই প্রসঙ্গে এখনও ওই দুই সংস্থা কোনও বিবৃতি দেয়নি।
চিকিৎসকেরা বলে থাকেন, ইথিলিন অক্সাইড একবার শরীরে গেলে, তার প্রতিক্রিয়া সঙ্গে সঙ্গে হয়না। বরং অল্প পরিমাণে এই উপাদান খাবারে মেশানোর ছাড়পত্রও দেওয়া হয়। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত পরিমাণে মেশালে তার তার দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতি হয় মারাত্মক।
এ তো গেল মশলার কথা। দিন কয়েক আগে বেবিফুডে মাত্রাতিরিক্ত চিনি মেশানোর অভিযোগ উঠেছিল আন্তর্জাতিক সংস্থা নেসলের ভারতীয় শাখার বিরুদ্ধে।
রোজকার ডায়েটে চিনির আধিক্য নিয়ে বহুদিন ধরেই সতর্ক করে আসছেন চিকিৎসকরা। চিকিৎসকদের দাবি ,খাদ্যে অধিক পরিমাণে চিনির ব্যবহার শরীরে নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। পাবলিক আই নামক একটি সংস্থার তদন্তে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। বিদেশে বিক্রি হওয়া নেসলে বেবি ফুড সুগারফ্রি হলেও অভিযোগ, ভারতে বহুল জনপ্রিয় বেবিফুড সেরেলাকের এক চামচে ৩ গ্রাম চিনি মেশানো হয় নির্দেশ অমান্য করেই। নেসলের দাবি, আন্তর্জাতিক নির্দেশিকা মেনে বিগত ৫ বছরে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত চিনির পরিমাণ কমানো হয়েছে বেবিফুডে।
অতিরিক্ত চিনি শিশুর শরীরে প্রবেশ করলে, ওবেসিটি, ডায়াবেটিস বা হাই প্রেসারের মতো ক্রনিক রোগের শিকার হতে পারে শিশুরা।
অতীতে ইন্সট্যান্ট নুডলস ব্র্যান্ড ম্যাগির বিরুদ্ধেও এ হেন অভিযোগ উঠেছিল।
বাজারে বিক্রি হওয়া পণ্যের অধিকাংশেরই খাদ্যগুণ, উপকরণ না জেনে আমরা নিয়মিত কিনছি, খাচ্ছি। দু' একটা তদন্তে কখনও কখনও ভয়াবহ কিছু তথ্য সামনে আসে। সময়ের সাথে সাথে আমরা ভুলেও যাই তা। তবে একটি বিষয় স্পষ্ট, প্রক্রিয়াজাত খাবারেই ভেজাল, ক্ষতিকারক রাসায়নিক থাকার আশঙ্কা অনেক গুণে বেশি। ক্রেতারা আরও একটু সচেতন হলে শরীরের বড়সড় ক্ষতি এড়ানো বা ক্ষতির পরিমাণ কমানো একটু সহজ হয়।