আমরা নাকি নিজেদের শারীরিক সৌন্দর্যের বিচার ভীষণ নিখুঁতভাবে করতে পারি৷ শুধু তাই নয়, অধিকাংশ মানুষই এমন কাউকেই সঙ্গী হিসাবে বেছে নেন, যিনি শারীরিক সৌন্দর্যের দিক থেকে তাঁর সঙ্গে মানানসই৷ সাম্প্রতিক একটি গবেষণা তো সেই কথাই বলছে। গবেষণা আরও বলছে, নিজের সৌন্দর্য সম্পর্কে 'আত্মবিশ্বাসী'রা এমন কাউকেই সঙ্গী হিসাবে বেছে নেন, যিনিও নিজেও নিজেকে সুন্দর এবং আকর্ষণীয় বলে মনে করেন।
প্রায় ১৩০০ বিপরীত লিঙ্গের যুগল এবং ২৭ জন ব্যক্তিকে নিয়ে এই গবেষণা করেছেন ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গ্রেগরি ওয়েবস্টার। তাঁকে সাহায্য করেছেন ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ফ্রেডোনিয়ার নিউ ইয়র্ক স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। গত ২৫ মে গবেষণার ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে পার্সোনালিটি অ্যান্ড ইনডিভিজুয়াল ডিফারেন্সেস অ্যাকাডেমিক জার্নালে।
গবেষণার ফলাফল বলছে, সাধারণত অধিকাংশ ললল যুগল নিজেদের শারীরিক সৌন্দর্য সম্পর্কে মোটামুটি একই মতামত পোষণ করেন। অর্থাৎ, যে পুরুষরা নিজেদের আর্কষণীয় বলে মনে করেন, তাঁরা সেই সব নারীদেরই ডেট করেন, যাঁরা নিজেদের সুন্দরী বলে মনে করেন। কাপলদের বলা হয়েছিল নিজেদের সৌন্দর্যের রেটিং দিতে। সেই রেটিং-এর ভিত্তিতেই এই তথ্য জানা গিয়েছে। আবার এই যুগলদের ছবি দেখানো হয়েছিল একদম অপরিচিত ব্যক্তিদের। তাঁরা কিন্তু সৌন্দর্য সম্পর্কে মোটামুটি নিরপেক্ষ মতামত দিয়েছেন।
১৯৮৮ সালের একটি গবেষণাও খতিয়ে দেখেছেন গবেষকরা। ২৭টি ভিন্ন ভিন্ন গবেষণার তথ্য রয়েছে তার মধ্যে। শারীরিক আকর্ষণ কীভাবে যুগলদের একজনকে অন্যের সঙ্গে বেঁধে রাখে, তা নিয়ে বিশদ চর্চা হয়েছে সেই গবেষণায়। গত ৩৪ বছরে গবেষণার পদ্ধতি অনেক বদলেছে। পুরনো গবেষণাকে নতুনভাবে দেখা শুরু হয়েছে।
ওয়েবস্টার বলেছেন, গত কয়েক দশকে বহু কিছু বদলেছে। অনলাইন ডেটিং কিছু মৌলিক পরিবর্তন ঘটিয়েছে। কারণ সেক্ষেত্রে প্রথম যা দেখে আকর্ষণ তৈরি হয়, তা কিন্তু ছবি। রক্তমাংসের মানুষটি নয়। কিন্তু এর বিপরীত যুক্তিও আছে। আকর্ষণীয় বলতে মানুষ যা কিছু বুঝে এসেছে চিরকাল, সময়-সমাজ ও সংস্কৃতি ভেদে তা মোটামুটি একই রয়েছে।
গবেষকরা বিভিন্ন ধরনের যুগলের সঙ্গে কথা বলেছেন৷ একদম কমবয়সী যুগল, কিছুদিন মাত্র ডেট করছে, তাদের সঙ্গে যেমন কথা বলেছেন, তেমনই দীর্ঘদিনের প্রবীণ দম্পতিদের সঙ্গেও কথা বলেছেন তাঁরা।
গবেষণায় উঠে এসেছে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। দীর্ঘদিন ধরে একটি সম্পর্কে থাকা পুরুষরা নিজেদের শারীরিক সৌন্দর্যকে সঠিকভাবে বিচার করতে পারেন৷ তাঁদের বিচার হয় অনেক বাস্তবসম্মত। মানুষ যে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আগের মতো আকর্ষণীয় থাকে না, সেই সহজ সত্যটি তাঁরা সহজেই বুঝতে পারেন।