বাংলায় গণতন্ত্র আছে, তাই রাজ্যে বেশি পরিমাণে অভিযোগ দায়ের করা যায়। কিন্তু উত্তরপ্রদেশ-গুজরাত-মধ্যপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতে মানুষকে অভিযোগ দায়ের পর্যন্ত করতে দেওয়া হয় না। বুধবার নবান্নে রাজ্যের প্রশাসনিক বৈঠকে এমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠক থেকে তাঁর নির্দেশ, এবার থেকে থানায় ঘুরবেন রাজ্য পুলিশের পদস্থ কর্তারা। এর পাশাপাশি কোন অভিযোগ ঠিক, কোনটা ভুল, তার খতিয়ে দেখবেন রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য। তিনি মনে করেন, ভুয়ো অভিযোগের চাপে সত্যি অভিযোগ ধামাচাপা পড়ে যাচ্ছে। এদিনও পুলিশকে ঠিক সময় চার্জশিট পেশ করতে নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী।
এর আগেও বারবার তিনি জানিয়েছেন, দুর্নীতির প্রশ্নে কোনও অভিযোগ সহ্য করবে না। এদিনও নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে সেই কথা ফের স্পষ্ট করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। যে দলের যত বড় নেতাই হোন না কেন, দুর্নীতিতে নাম জড়ালে কাউকে ছাড়া হবে না ৷ বিশেষকরে অবৈধ বালি তোলা, তোলাবাজি, চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার মতো অভিযোগ এলে যে দলের যত বড় নেতাই হোন না কেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন, নিজের দল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারাও ছাড় পাবেন না।
এই প্রসঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'যে যত বড় নেতাই হোক, যে দলেরই হোক না কেন, দুর্নীতিতে নাম জড়ালে কাউকে ছাড়া হবে না ৷ কেউ কেউ তোলাবাজি করে বেরান, চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তুললে, অবৈধ ভাবে বালি তুললে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে ৷ অনেকে কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি দেবে বলেও টাকা তুলছে ৷ আমি সব খবর রাখি ৷ আমি যখন বলছি বড় নেতাকেও ছাড়া হবে না, তখন কাউকে ছাড়া হবে না৷' একই সঙ্গে অবশ্য মুখ্যমন্ত্রী স্পষ্ট করে দিয়েছেন, কোনও নেতার ব্যক্তিগত দুর্নীতির দায় দলের হতে পারে না ৷
আগামী কয়েক মাসের মধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরের বেশ কিছু জায়গায় বড় লগ্নির প্রস্তাব আছে। তাই মুখ্যমন্ত্রী মনে করে রাজ্য়ের অন্যতম জেলা এখন পূর্ব মেদিনীপুর। কিন্তু এই জেলায় পুলিশের একাংশে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তিনি। এই জেলার বিভিন্ন থানার আইসি কারও কারও ব্যক্তিগত তাঁবেদারি করছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি ৷ রাজনৈতিক মহলের দাবি, নাম না করলেও ঘুরিয়ে বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীর দিকেই নিশানা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী।