কুড়মালি ভাষা(Kurmali Language), আদিম জনজাতির ভাষা। এবার সেই ভাষায় রবি ঠাকুরের 'গীতাঞ্জলি'-এর অনুবাদ করে বাংলা সাহিত্যের এক নতুন দিগন্ত খুলে দিলেন পুরুলিয়ার(Purulia) কবি অভিমুন্য মাহাত(Abhimanyu Mahato)। পেশায় সাংবাদিক এই মানুষটির চার বছরের দীর্ঘ অধ্যাবসায়ের ফসল এই 'গিতেক নেহর' ('গীতাঞ্জলি'-এর কুড়মালি অনুবাদ)। কুড়মালি(Kurmali Language) ছাড়া আর কোনও ভাষা যাঁরা জানেন না, তাঁরাও এবার কবিগুরুর এই কালজয়ী সৃষ্টির স্বাদ নিতে পারবেন।
আমাদের রাজ্য ছাড়াও ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, ছত্তিশগড়, বিহার, অসম সহ দেশের বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বসবাস করেন কুড়মি জনজাতির মানুষ। তাঁদের ভাষা হল এই কুড়মালি। এই ভাষায় ভারতে প্রায় ৪ কোটি মানুষ কথা বলেন। বাংলা(West Bengal) এবং ঝাড়খণ্ড(Jharkhand) এই ভাষাকে স্বীকৃতি দিলেও কেন্দ্রীয় সরকার এখনও স্বীকৃতি দেয়নি। শুধু তাই নয়, ঝাড়খণ্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে(Jharkhand State University) কুড়মালিকে ভাষা হিসেবে পড়ানো হয়। ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন স্কুলে নবম শ্রেণি থেকে কুড়মালি ভাষা পড়ানো হয়।
কিন্তু এহেন কম জনপ্রিয় ভাষার নিজস্ব কোনও লিপি নেই। মূলত বাংলা, ওড়িশি, অসমিয়া, হিন্দি ভাষার লিপি ব্যবহৃত হয়। 'গিতেক নেহর' বইটিতে অভিমন্যু বাংলা হরফে ব্যবহার করেছেন কুড়মালি ভাষা। ভূমিকা লিখেছেন কবি শঙ্খ ঘোষ(Bengali Poet Sankha Ghosh)। তবে বইটিকে বাংলা 'গীতাঞ্জলি'-এর(Rabindranath Tagore's Gitanjali) অনুবাদ বলতে রাজি নন অভিমন্যু মাহাত। বাংলা 'গীতাঞ্জলি'তে(Song Offerings) ১৫৭টি কবিতা থাকলেও এতে আছে মোট ১০৩টি কবিতা।
দীর্ঘদিন ধরেই লেখালেখির সাথে যুক্ত অভিমন্যুর(Abhimanyu Mahato) উল্লেখযোগ্য কিছু কবিতার বই হল 'মাটি', 'খিলিপান', 'আওলা বরষা ধনি', 'লাঙল, শুনছ?' ইত্যাদি। ২০১৪ সালে 'মাটি' কাব্যগ্রন্থের জন্য পান সাহিত্য আকাদেমি পুরষ্কার(Sahitya Academy Award)। এবার কুড়মালি সমাজের প্রতি তাঁর এই উপহার কতটা সাফল্যের মুখ দেখে, সেটাই দেখার।