দেবী কালীকে নিয়ে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের (Mahua Moitra) মন্তব্যের জেরে উত্তাল দেশ। বুধবার মধ্যপ্রদেশের ভোপালে তাঁর নামে এফআইআর দায়ের করা হয়। রাজ্য বিজেপির মহিলা মোর্চা ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে গ্রেফতারির দাবি তোলেন। রাজ্য সরকারকে ৮ দিনের সময় দেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikary)। এদিকে মহুয়ার পাশে দাঁড়িয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর।
এদিন শুভেন্দু অধিকারী বলেন, "পয়গম্বর বিতর্কে নূপুর শর্মার গ্রেফতারির দাবি তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কালী নিয়ে তো এরকম কিছু হচ্ছে না। আমরা চার-পাঁচদিন অপেক্ষা করব। তারপরও যদি রাজ্য সরকার কোনও কড়া পদক্ষেপ না করে তাহলে সব FIR এক জায়গায় করে আদালতে যাব।”
মঙ্গলবার কলকাতার এক অনুষ্ঠানে দেবী কালীকে নিয়ে একটি মন্তব্য করেন কৃষ্ণনগরের সাংসদ মহুয়া মৈত্র। তার জেরে বিতর্ক তৈরি হয়। এরপরই বিজেপির কর্মী সমর্থকরা মহুয়াকে আক্রমণ শুরু করেন। টুইটারে তারাপীঠের উল্লেখ করে মহুয়া পাল্টা জবাব দেন। এরপরই বেঁকে বসে তাঁর নিজের দল তৃণমূল কংগ্রেস। এরপরই টুইটারে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসকে টুইটারে আনফলো করেন মহুয়া। বুধবারও সকাল থেকে দেশজুড়ে মহুয়ার মন্তব্যের জেরে উত্তাল হয় দেশের রাজনীতি। মহুয়ার মন্তব্যকে সমর্থন করেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুর। তিনি জানিয়েছেন, মহুয়ার ওপর আক্রমণ দেখে তিনি স্তম্ভিত। দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ বিভিন্ন ধরনের উপাসনা করে। এটা হিন্দুরা ভাল করেই জানেন। দেশ এমন জায়গায় এসে পৌঁছেছে, যে কেউ কিছু ধর্ম নিয়ে বলতে পারবে না। যেখানে মানুষ বলবে না, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত লাগেনি। মহুয়া মৈত্র কাউকে আঘাত দেওয়ার জন্য কিছু বলেননি।
আরও পড়ুন: দেবী কালী নিয়ে মন্তব্য, টুইটারে তৃণমূলকে আনফলো করলেন মহুয়া মৈত্র
বুধবার সকালে নিজেও ফের টুইট করেন মহুয়া মৈত্র। তিনি লেখেন, "আমি কালীর উপাসক। কোনও কিছুকেই ভয় পাই না। বিজেপি যা করতে পারে করে নিক।" এরপরই টুইটারে মহুয়া মৈত্র লেখেন, "আমি তোমাদের অজ্ঞতাকে ভয় পাই না। তোমাদের গুন্ডাদের ভয় পাই না। তোমাদের পুলিশকে ভয় পাই না। তোমাদের সমালোচনাকে তো নয়ই।"
তৃণমূল আগেই জানিয়েছিল, মহুয়ার পাশে নেই দল। এবার দেবী কালী নিয়ে তাঁর মন্তব্যের সমালোচনা করলেন প্রবীণ সাংসদ সৌগত রায়। তিনি বলেন, "আমরা আগেই জানিয়েছিলাম, ওর মন্তব্যের সঙ্গে দল একমত নয়। এখন আমরা বলছি, কালী তথ্যচিত্রের পোস্টারে যে ছবি দেওয়া হয়েছে, তাও আমরা সমর্থন করি না।" তিনি জানান, দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে ধর্মীয় বিতর্কের মধ্যে যে চায় না তৃণমূল।