বাংলায় শুরু দানার দাপট। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আগেই কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে শুরু হল বৃষ্টি। আলিপুর জানিয়েছে, উপকূলের জেলাগুলিতে বাড়বে বৃষ্টির দাপট। কলকাতায় প্রভাব থাকবে হালকা থেকে মাঝারি। দিল্লির মৌসম ভবন জানিয়েছে, সাগর থেকে এখন ৬০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে দানা। এখন থেকে ফুঁসতে শুরু করেছে সাগর। দিঘা, পুরী থেকে পর্যটকদের সরানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে।
মঙ্গলবার থেকেই বঙ্গপোসাগরে গভীর নিম্নচাপ তৈরি হয়েছে। যার প্রভাবে বাংলা ও ওড়িশার উপকূলের অঞ্চলে মাঝে মধ্যেই আকাশ মেঘলা হয়ে যাচ্ছে। বুধবার মৌসম ভবন জানিয়েছে, ওড়িশার পারাদীপ থেকে এখনও ৫২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থান করছে ঘূর্ণিঝড়। বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবার ভোরের মধ্যে এই ঝড় আছড়ে পড়তে পারে ওড়িশার ভিতরকণিকা ও ধামরা বন্দরের মাঝামাঝি কোনও স্থানে। উপকূলে আছড়ে পড়ার সময় ঝড়ের গতিবেগ পৌঁছবে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১২০ কিলোমিটারে।
মৌসম ভবনের দাবি, বাংলার থেকে ওড়িশার বেশ কিছু জেলার উপর দানার প্রভাব সবচেয়ে বেশি হতে পারে। সেই কারণে, ভদ্রক, কেন্দাপাড়া, জগৎসিংপুরের বাসিন্দাদের ধীরে ধীরে নিরাপদ জায়গায় সরিয়ে আনার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। প্রতিটি জেলায় রাখা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলাকে বাহিনীকে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে এই ছয় জেলায় ছয় অভিজ্ঞ আইএএস অফিসারকে মোতায়েন করা হয়েছে। বিভিন্ন জেলায় মোতায়েন হয়েছে ২৮৮টি উদ্ধারকারী দল। ১৪ জেলায় আগামী তিন দিনের জন্য স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। রাজ্যে বাতিল হয়েছে ২০০-রও বেশি ট্রেন।
দানার মোকাবিলায় বুধবার থেকে বাংলার নয় জেলায় স্কুল ও কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ৯৬ ঘণ্টা রাজ্যের সব স্কুল ও কলেজ বন্ধ থাকবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার সকালে উপকূলের প্রায় সব জেলায় দেখা গিয়েছে, মাইকিং করতে ব্যস্ত বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীরা। আলাদা করে সতর্ক করেছে উপকূল বাহিনী।
সবমিলিয়ে ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবিলায় প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। কলকাতাতেও আলাদা করে কন্ট্রোল রুম তৈরি করেছে পুরসভা। মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সবার ছুটি বাতিল করা হয়েছে। বিশেষ ভাবে নজর দেওয়া হয়েছে গঙ্গার ঘাটগুলিতে।