সন্ধে তখন ৭টা । বাইরে বৃষ্টি পড়ছে । রাজেন্দ্রনগরের কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টের লাইব্রেরিতে বসে তখন পড়াশোনা করছিলেন তানিয়া সোনি, শ্রেয়া যাদবরা । আইএএস পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন । চোখে অনেক স্বপ্ন, ভবিষ্যতের আইএএস অফিসার হওয়ার স্বপ্ন । কিন্তু, হঠাৎ জলের তোড়ে সব ভেসে গেল নিমেষেই, স্বপ্ন, আশা...সব শেষ । সংবাদপত্রের শিরোনামে এখন তাঁদের নাম । সব জায়গায় একটাই খবর হু হু করে ছড়িয়ে একটাই খবর, দিল্লির রাজেন্দ্রনগর কোচিং সেন্টারে জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে তিন আইএএস পড়ুয়ার । সেই তিন পড়ুয়ার মধ্যে রয়েছে তানিয়া সোনি, শ্রেয়া যাদবও । তাঁদের আরও এক সহপাঠী নেভিন দালউইনেরও মৃত্যু হয়েছে ।
কী ঘটেছে ?
কয়েকদিন ধরেই দিল্লিতে একনাগাড়ে বৃষ্টি হয়েই চলেছে । শনিবারও প্রবল বৃষ্টি হচ্ছিল । আর তার জেরে আচমকা হু হু করে জল ঢুকতে শুরু করেছিল কোচিং সেন্টারের বেসমেন্টে । সেইসময় বেসমেন্টের লাইব্রেরিতে পড়াশোনা করছিলেন ৩০ থেকে ৩৫ জন পড়ুয়া । জানা গিয়েছে, কিছু বুঝে ওঠার আগে হঠাৎ ৯ ফুটের বেসমেন্ট জলে ভরে যায় । অনেকে বেসমেন্ট থেকে উঠে আসতে পেরেছিলেন । তবে,অনেকেই বেরিয়ে আসার জন্য পর্যাপ্ত সময় পাননি । আটকে পড়েন বহু ছাত্র
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন দমকল এবং পুলিশ । শুরু হয় উদ্ধারকাজ । দড়ির সাহায্যে তুলে আনা হয় আটকে পড়া ছাত্রদের । কিন্তু, তখনও তানিয়া, শ্রেয়াদের খোঁজ পাচ্ছিলেন না তাঁর বন্ধুরা । বেশ কিছু ক্ষণ উদ্ধারকাজ চালানোর পরে প্রথমে তানিয়া ও শ্রেয়ার দেহ উদ্ধার হয় । তারও কিছু ক্ষণ পর জল থেকে তোলা হয় এক ছাত্রের দেহ ।
কী ভাবে বেসমেন্টে এত জল ঢুকল, সেই নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে । দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, নির্দিষ্ট কিছু ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে । ফরেন্সিক দল নমুনা সংগ্রহ করেছে । গোটা ঘটনার উপযুক্ত তদন্ত হবে ।
এদিকে, কোচিং সেন্টারের বাইরে শনিবার রাত থেকে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন পড়ুয়ারা । সকালের ছবিটাও একই । দিল্লি সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন পড়ুয়ারা । এই ঘটনায় লেগেছে রাজনীতির রংও । দিল্লি সরকারের অবহেলার কারণেই এই পরিস্থিতি, বলছে বিজেপি নেতৃত্ব ।