ঘরের মাঠে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে হেরে যাওয়ার কারণে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানে নেমে গিয়েছে টিম ইন্ডিয়া। সামনে রয়েছে বর্ডার-গাভাসকার ট্রফি। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সে দেশে পাঁচ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে ভারত। কিন্তু দলের যা পার্ফরম্যান্স, তা দেখে অনেকেই মনে করছেন বিরাট, রোহিত-সহ চার সিনিয়র ক্রিকেটার ফর্ম না ফিরে পেলে বার্তা দিতে পারে বিসিসিআই।
নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে হতাশজনক পারফরম্যান্স হয়েছে টিম ইন্ডিয়ার। ফলে অস্ট্রেলিয়ার বর্ডার-গাভাসকর সিরিজের আগে কিছুটা হলেও চাপে রয়েছে রোহিত ব্রিগেড। এর মধ্যেই রোহিত এবং বিরাটের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এমনকি রোহিত-বিরাট ছাড়াও সিরিজে ব্যর্থ হয়েছে ভারতীয় বোলাররা। বর্ডার-গাভাসকার ট্রফিতে কি পারফর্ম করতে পারবেন সিনিয়র ক্রিকেটাররা?
টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ের পর এই ফরম্যাট থেকে রাজার মতো বিদায় নিয়েছেন রোহিত শর্মা এবং বিরাট কোহলি। কিন্তু টেস্টে তাঁদের পারফরম্যান্স দেখে না খুশ সকলেই। এরমধ্যেই শোনা যাচ্ছে অবসরের জল্পনা। এই তালিকায় বিরাট-রোহিত ছাড়াও রয়েছেন রবীন্দ্র জাদেজা এবং রবিচন্দ্রন অশ্বিনও।
বর্ডার-গাভাসকার ট্রফিতে এর আগেও ভারতের ছ'জন কিংবদন্তি নিজেদের টেস্ট কেরিয়ারের ইতি টেনেছিলেন। কারা তাঁরা ?
অনিল কুম্বলে
ভারতের কিংবদন্তি লেগ স্পিনার হিসেবে এখনও যে নামটি মাথায় আসে সেটি অনিল কুম্বলে। এখনও পর্যন্ত তাঁকেই টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসের অন্যতম সেরা বোলার হিসেবে ধরা হয়। ভারতের এই কিংবদন্তি ক্রিকেটার নিজের টেস্ট ক্রিকেটের কেরিয়ারে ইতি টেনেছিলেন বর্ডার গাভাসকার ট্রফিতে। ২০০৮ সালে দিল্লিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে নিজের কেরিয়ারের শেষ টেস্ট খেলেছিলেন এই কিংবদন্তি। টেস্ট ক্রিকেটে তিনি মোট ৬১৯টি উইকেট নিয়েছিলেন।
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
ভারতের প্রাক্তন অধিনায়ক তথা প্রাক্তন বোর্ড সভাপতি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ও নিজের টেস্ট কেরিয়ারে ইতি টেনেছিলেন বর্ডার গাভাসকার ট্রফিতে। ২০০৮ সালে শেষ বার নাগপুরে টেস্টের জার্সি গায়ে চাপিয়েছিলেন মহারাজ। নিজের টেস্ট কেরিয়ারে মোট ১১৩টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন কলকাতার 'দাদা'। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ৭ হাজার ২১২ রান। অধিনায়ক হিসেবে ভারতকে ৪৯টি টেস্ট ম্যাচে ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন প্রিন্স অফ কলকাতা। এরমধ্যে ২১টি ম্যাচেই জয় এসেছিল।
রাহুল দ্রাবিড়
ভারতকে টি-২০ বিশ্বকাপ এনে দিয়েছেন রোহিতদের প্রাক্তন হেডস্যার রাহুল দ্রাবিড়। তিনিও শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধেই। ২০১২ সালে অ্যাডিলেডে টেস্ট কেরিয়ার ইতি হয়েছিল টিম ইন্ডিয়ার দ্য ওয়ালের। ভারতীয় দলের হয়ে টেস্ট ক্রিকেটে ১৩ হাজার ২৮৮ রান করেন তিনি। ১৬৪টি টেস্ট ম্যাচে তাঁর ৩৬টি সেঞ্চুরি আর ৬৩টি হাফ সেঞ্চুরি রয়েছে দ্রাবিড়ের ঝুলিতে।
ভিভিএস লক্ষণ
টিম ইন্ডিয়ার ডান হাতি মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হিসেবে যার নাম উঠে আসে ভিভিএস লক্ষণ। অসংখ্য হেরে যাওয়া ম্যাচে ভারতকে ঘুরে দাঁড় করিয়েছেন এই ক্রিকেটার। তিনিও ২০১২ সালে অ্যাডিলেডে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে শেষ টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলেন। মোট ১৩৪টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলেন তিনি। টেস্টে ক্রিকেটে ১৭টি সেঞ্চুরি করেছেন তিনি। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ৮ হাজার ৭৮১ রান।
বীরেন্দ্র সেহওয়াগ
টিম ইন্ডিয়ার আরও এক কিংবদন্তি নজফগড়ের নবাবও টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলেই। ২০১৩ সালে হায়দরাবাদে শেষ টেস্ট খেলেছিলেন তিনি। এই ডানহাতি ব্যাটসম্যান এবং ডানহাতি অফ ব্রেক বোলারের টেস্টে অভিষেক হয়েছিল ২০০১ সালে। মোট ১২ বছরের টেস্ট কেরিয়ারে ১০৪টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছেন সেহওয়াগ। তাঁর ঝুলিতে ৮ হাজার ৫৮৬ রান রয়েছে। ২৩টি সেঞ্চুরি করেছেন তিনি।
মহেন্দ্র সিং ধোনি
১০ বছর আগে সিরিজের মাঝপথেই আচমকাই টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণ করেছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে মেলবোর্নে শেষ টেস্ট খেলেন তিনি। সম্প্রতি জানা গিয়েছে, শততম টেস্ট থেকে ১০টি ম্যাচ বাকি থাকার সত্ত্বেও পরিবার পরিকল্পনার জন্য নিজের টেস্ট জীবন শেষ করেছিলেন ফর্মে থাকা মাহি। তাঁর অবসরের কয়েকমাস পরেই তাঁর কন্যা জিভার জন্ম হয়। ৯০টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছিলেন মাহি। এর মধ্যে ৬০টি ম্যাচে অধিনায়ক ছিলেন। তাঁর ঝুলিতে রয়েছে ৪ হাজার ৮৭৬ রান।
এবার এই ছ'জনের তালিকা দীর্ঘায়িত হবে? সেই তালিকায় কি নাম সংযোজন হবে বিরাট কোহলি ও রোহিত শর্মারা?