প্রথমে পাকিস্তান। তারপর অস্ট্রেলিয়া। বিরাট কোহলির ব্যাটিং যেন রূপকথার মতো। কে বলেন, তিনি ফর্মে নেই! কে বলেন, ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে তাঁর অবসর নেওয়ার সময় এসেছে। কেন তাঁকে চেজমাস্টার বলা হয়। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে তাঁর ব্যাট থেকে একের পর এক ইনিংস কিন্তু সেই কথাই বলছে। মঙ্গলবার প্রথম সেমিফাইনালে তাঁর ব্যাট থেকে এল ৯৮ বলে ৮৪ রানের সুসজ্জিত ইনিংস। মাত্র পাঁচটি বাউন্ডারি। আর এই নিয়ন্ত্রিত ইনিংসই কিন্তু ভারতকে জয় এনে দিল।
বিরাট শেষ করে আসতে পারেননি। কিন্তু শেষটা করলেন হার্দিক পান্ডিয়া। আহমেদাবাদে মহানদীর তীরে, তাঁর ঘরের মাঠে এই অস্ট্রেলিয়া যে যন্ত্রণা দিয়েছিল, তারই প্রতিশোধ নিলেন হার্দিক। যে সময় বল প্রতি রানের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছিল, ওই মোমেন্টামকে সঠিকভাবে তুলে ধরলেন। প্রথম ছয়ের পর যেন ১৪০ কোটি ভারতীয় হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। গ্যালারিতে তখন তাঁর নতুন ব্রিটিশ গার্লফ্রেন্ড জাসমিন ওয়ালিয়াকেও দেখা যায় ফ্লাইং কিস ছুঁড়ছেন। ম্য়াচের শেষও করলেন লম্বা ছয়ে। হার্দিকের ছয় মেরে ওই নির্লিপ্ত তাকানো যেন মহেন্দ্র সিং ধোনিকে মনে করিয়ে দেয়। চ্য়াম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালে তাঁর ব্যাটে ২৪ বলে যে ২৮ রান ইতিহাসে জায়গা করেই নেবে।
টস জিতে ব্য়াটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অজি অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। ট্রেভিস হেডের ক্য়াচ প্রথম ওভারেই মিস করেন মহম্মদ শামি। ৩৩ বলে ৩৯ রান করেন তিনি। বরুণ চক্রবর্তী ফেরান ট্রেভিস হেডকে। আরেক ওপেনার কুপার কনোলি শূন্য় রানে ফেরেন। কিন্তু স্টিভ স্মিথের ব্য়াট থেকে আসে ৭৩ রান। অ্যালেক্স ক্য়ারি করেন ৫৭ বলে ৬১ রান। ৪৯.৩ ওভারে ২৬৪ রান তোলে অস্ট্রেলিয়া। ৩ উইকেট নেন মহম্মদ শামি। ২টি করে উইকেট মহম্মদ শামি ও রবীন্দ্র জাদেজার।
জবাবে ব্য়াট করতে নেমে ৮ রানে ফেরেন শুভমান গিল। কনোলির বলে লেগ বিফোর হন রোহিত। কিন্তু বিরাট ও শ্রেয়স দাঁড়িয়ে যান। দুজনে ৯১ রানের পার্টনারশিপ তৈরি করেন। অ্যাডাম জাম্পার ডেলিভারিতে ৪৫ রান করে ফেরেন শ্রেয়স। বিরাট ও অক্ষর প্য়াটেলও বড় পার্টনারশিপ তৈরি করেন। কিন্তু নাথান এলিসের ডেলিভারিতে অক্ষর ফিরতেই চাপহয়ে যায়। কে এল রাহুল ও বিরাট বড় পার্টনারশিপ তৈরি করার চেষ্টা করেন। কিন্তু অ্য়াডাম জাম্পার পরের শিকার হন বিরাট। তখন ভারতের রান ২২৫। হাতে আরও ৭.২ ওভার। গ্যালারিতে প্রেসার তৈরি হচ্ছিল। ওই চাপ অবলীলায় কাটিয়ে দিলেন হার্দিক পান্ডিয়া। যার ডেলিভারিতে বিরাট ও শ্রেয়স আইয়ার ফিরেছেন, তাঁর ডেলিভারিতেই পরপর দুই বলে দুটো ছয়। কিন্তু পরের ওভারের শেষ বলেই আউট হন হার্দিকও। গ্লেন ম্য়াক্সওয়েলের ওভারে প্রথম বলেই ছয় কে এল রাহুলের। রোমহর্ষক লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ফাইনালে টিম ইন্ডিয়া।