তিনি উদ্ধব ঠাকরে নন, বিহারে বিজেপির হাত ছেড়ে গেরুয়া শিবিরকে সেই বার্তাই স্পষ্ট করে দিলেন নীতীশ কুমার। রাজনৈতিক মহলের দাবি, গত কয়েকদিন ধরেই একটা পালাবদলের আঁচ পাওয়া যাচ্ছিল পাটনার রাজনীতির অলিন্দে। বিশেষ করে, সংযুক্ত জনতা দল ভাঙার অভিযোগ উঠছিল বিজেপির বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক মহলের দাবি, ঠিক যে ভাবে মহারাষ্ট্রে পালাবদল ঘটিয়েছে গেরুয়া শিবির, ঠিক সেই ছকেই চলছিল পাটনায় পালাবদলের ছক। কিন্তু বর্ষীয়ান নীতীশ কুমারের মগজের কাছে আপাতত প্রথম রাউন্ডে পিছিয়ে গেল বিজেপি। কারণ, গদি যেতে পারে এই আঁচ করেই দ্রুত কংগ্রেস এবং পুরোন বন্ধু আরজেডির সঙ্গে নিজেই যোগাযোগ করেন নীতীশ। ১০ জনপথ থেকে সবুজ সংকেত জেতেই নীতীশের দিকে হাত বাড়িয়ে দেয় কংগ্রেসও। আর সোমবার রাতেই নীতীশকে নিয়ে সরকার গঠনে রাজি হয়ে যান তেজস্বী যাদব। সূত্রের খবর, নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের আগে পদত্যাগ করেছেন নীতীশ কুমার। উপ-মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে আছেন তেজস্বী যাদব। রাজ্যে বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে নতুন জোট সরকারের আবেদন করতেই বিকেলে রাজভবন যাওয়ার কথা নীতীশ কুমারের। অঙ্ক বলছে জেডিইউ, আরজেডি এবং কংগ্রেস মিলে জোট হলে ২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় নীতীশের পক্ষে থাকবেন ১৩৭ জন বিধায়ক। উল্টোদিকে বিজেপির সামর্থ ৭৪ জন।
নীতীশ কুমারের জেডিইউ-এর সঙ্গে বিজেপির স্নায়ুর লড়াই অনেক দিন ধরেই টের পাচ্ছিল রাজনীতির ময়দান। সম্প্রতি দুই শিবিরের সম্পর্কের চিড় আরও আলগা হয়। নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে নীতি আয়োগের বৈঠকে যোগ দেননি নীতীশ। যা ঘিরে এই পর্বে নয়া জল্পনা দানা বাঁধে। এমন আবহেই জেডিইউ ছাড়েন একদা নীতীশ-ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত জেডিইউ-এর প্রাক্তন জাতীয় সভাপতি আরসিপি সিং।নীতীশের আপত্তি সত্ত্বেও তাঁকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী করা হয়, এ নিয়ে জটিলতা বাড়ে। তাঁর সম্পত্তির হিসাব নিয়ে তদন্তের পথে হাঁটার ইঙ্গিত দেন নীতীশ।
মোদীর মন্ত্রিসভায় তাদের দলের কোনও প্রতিনিধি থাকবেন না বলে জানিয়ে দেয় জেডিইউ। রাজনৈতিক মহলের মতে, এরফলে নীতীশ বনাম বিজেপির দূরত্ব আরও স্পষ্ট হয়। এই ঘোষণার পরেই কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীকে ফোন করেন নীতীশ। যার জেরে এই পর্ব নয়া মাত্রা পায়। এর পরই দলের বিধায়কদের নিয়ে বৈঠক ডাকেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী। আরজেডি ও কংগ্রেসও আলাদা ভাবে বিধায়কদের নিয়ে বৈঠকে ডাকে।