এ বছরের, অর্থাৎ ২০২৪ সালের বিশ্ব পরিবেশ দিবসের থিম ছিল 'Our land. Our future. We are #GenerationRestoration'. দায়িত্ব নিতে হবে নতুন প্রজন্মকে, পরিবেশকে সুন্দর করে তোলার দায়িত্ব, এ পৃথিবীকে বাসযোগ্য করে তোলার দায়িত্ব। গোটা প্রজন্ম দায়িত্ব কতোটা নিল, এখনও জানা নেই, কিন্তু ২ বছরের আদভি কিন্তু নিজের কাঁধে একটা বিশাল দায়িত্ব নিয়ে ফেলেছে আজীবনের জন্য? কী তা? আদভি, এই পৃথিবীকে একটুও দূষিত করবে না, জন্ম থেকেই বদ্ধপরিকর পৌনে ২ বছরের মেয়েটা।
জন্মেই এমন প্রচারের আলোয় চলে এল কীভাবে আদভি? এশিয়া বুক অফ রেকর্ডে জ্বলজ্বল করছে আদভির নাম। এই দুনিয়ার প্রথম কার্বন নিউট্রাল শিশু সে। অর্থাৎ আদভি, তাঁর জীবদ্দশায় এতটুকু কার্বন রেখে যাবে না, নাহ পুরোটা সত্যি নয়, তেমন তো সম্ভবও নয়, তাহলে? বলা, ভাল, একটা মানুষ সারা জীবনে যতটা কার্বন পরিবেশে মিশিয়ে ফেলে, তা শুষে নেওয়ার মতো বিপুল সংখ্যক গাছ, আদভির বা-মামা রোপণ করেছেন, তাঁদের মেয়ের জন্মের সময়। ছ'হাজার গাছ পুতেছেন চেন্নাই-এর দম্পতি দীনেশ ক্ষত্রিয় এবং জনগনন্দিনী রামস্বামী। সাধারণত, প্রতি বছরে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের দ্বারা নিঃসৃত কার্বন ডাই অক্সাইডের পরিমাণ, ২ টন।
তাঁদের প্রথম সন্তানকে পৃথিবীতে আনার আগেই সন্তানকে কার্বন নিউট্রাল করার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছিলেন দীনেশ এবং জনগনন্দিনী।
সারা পৃথিবী এখন আদভিকে চেনে আরও একটা নামে, নোভা। ইতিমধ্যে তামিলনাড়ুর গ্রিন মিশনের আম্ব্যাসাডর ছোট্ট নোভা। তাঁর বাবা দীনেশ, আইআইটি মাদ্রাসের চাকরি ছেড়ে একটি এনজিও-র সঙ্গে যুক্ত হন, যাঁদের লক্ষ্য কার্বনমুক্ত পরিবেশ গড়া। স্বামী-স্ত্রী মিলে এতদিনে ৪ লক্ষ গাছ লাগিয়েছেন চেন্নাইতে।
থোড় বড়ি খাড়া জীবনে হাতে গোনা কয়েকজন মানুষের জীবন হয়, অন্যরকম, মনে রাখার মতো। নোভার জীবন, অনেকটা সেরকম। নোভার আত্মীয়-পরিজন তো বটেই, সারা বিশ্ব তাঁকে মনে রাখবে। নোভার বুক ভরা নিঃশ্বাসে যে বিষ নেই কোনও। এ পৃথিবী কি তা ভুলতে পারে?