মাত্র সাড়ে তিন বছরেই তির শেষ হয়ে গেল অর্জুনের (Arjun Singh)। গত কয়েক দিন ধরে জল্পনা উসকে রাখার পর রবিবার কলকাতায় ফের তৃণমূল কংগ্রেসে (Tmc) যোগ দিলেন বারাকপুরের সাংসদ (Barrackpor)। এদিন প্রথমে আলিপুর (Alipore) ও পরে ক্যামাক স্ট্রিটে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) দফতরে হাজির হয়ে তৃণমূলে ফিরলেন বারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিং। ২০১৯ সালে মার্চ মাসে তৃণমূল ছেড়ে দিল্লিতে গিয়ে বিজেপিতে (Bjp) যোগ দিয়েছিলেন অর্জুন। ২০১৯ সালে বারাকপুর লোকসভা থেকে সাংসদ। ২০২০ সালে বিজেপির অন্যতম সর্বভারতীয় সহ-সভাপতিও হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে সব কেমন 'বেসুরো' ঠেকছিল। বিশেষ করে গত কয়েকদিন আগেও তাঁকে দিল্লিতে ডেকে পাঠিয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎ প্রকাশ নাড্ডা (J P Nadda)। বৈঠক শেষে স্পষ্ট হয়ে যায়, অর্জুনকে আর বাগে রাখা যাবে না। কারণ, চট-বিদ্রোহের প্রথম দিন থেকেই আন্দোলনে পাশে চেয়েছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে (Mamata Banerjee)। আর সেই দিন থেকেই শুরু হয়েছে তাঁর তৃণমূলে ফেরার জল্পনা।
এদিকে, অর্জুনের তৃণমূলে ফেরাকে স্বাগত জানিয়েছেন উত্তর ২৪ পরগনার তৃণমূলের দুই শীর্ষ নেতা পার্থ ভৌমিক (Partha Bhowmik) এবং রাজ্যের মন্ত্রী জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিক (Joytipriya Mallick)। এরমধ্যে জ্য়োতিপ্রিয় জানিয়েছেন, ফিরতেই যখন হল, তাহলে যাওয়ার কী দরকার ছিল। কারণ, এই তিন বছর শুধু শুধু গন্ডগোল হল বলেই দাবি করেছেন জ্যোতিপ্রিয়। তৃণমূলের যখন এই প্রতিক্রিয়া, তখন বিজেপি (Bjp) নেতা শমীক ভট্টাচার্যের (Samik Bhattachariya) অভিযোগ, গত সাড়ে তিন বছরে উপহার হিসাবে তাঁর পুরোনো দল ১০০ বেশি মামলা দিয়েছে। অর্জুনকে নিশানা করে রোজই তপ্ত করে রেখেছিল ভাটপাড়ার পরিস্থিতি।
তবে রাজনৈতিক মহলের মতে অর্জুনের তৃণমূলের ফেরার পিছনে কোনও অস্বাভাবিক কিছু নেই। কারণ, গত তিন বছরে বিজেপিতে থেকে অর্জুনের কোনও সাফল্য নেই। বরং নির্বাচনে তাঁকে যেখানে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, সেখানেই হেরেছে বিজেপি। এমনকী আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের উপ-নির্বাচনেও শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে দায়িত্বে ছিলেন অর্জুন, সেখানে এবার ইতিহাস তৈরি করেছে তৃণমূল। আর শেষের কদিন চটকে হাতিয়ার করে যে ভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে ফুঁসছিলেন বারাকপুরের সাংসদ, তাতে তাঁর তৃণমূলে ফেরার ইঙ্গিত একপ্রকার স্পষ্ট হয়ে যায়।
রাজনৈতিক মহলের দাবি, গত সাড়ে তিন বছরে লোকসভা হোক বা বিধানসভা, ভোটের আগে একাধিক তৃণমূল নেতার নাম করে অর্জুনের দাবি ছিল তাঁরা বিজেপিতে আসছেন। কিন্তু বাস্তবে তাঁরা তৃণমূলেই থেকে গেলেন, বিজেপি ছেড়ে অর্জুনকে তৃণমূলের ফিরতে হল। বারাকপুরের সাংসদের আক্ষেপ, তিনি বিজেপি ছাড়তে চাননি, আসলে বিজেপি তাঁকে বুঝতে পারল না।