হাঁসখালির ইস্যুতে এবার বক্তব্য রাখলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়(Mamata Banerjee)। সোমবার বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণের মঞ্চ থেকে তিনি প্রশ্ন তুললেন, কেন ঘটনার পাঁচদিন পর পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করল নির্যাতিতার পরিবার। সোমবার বিশ্ববাংলা মেলা প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠানে হাঁসখালির ঘটনা নিয়ে মমতা বলেন, ‘‘আপনি রেপ বলবেন নাকি প্রেগনেন্ট বলবেন নাকি লাভ অ্যাফেয়ার্স বলবেন, এটা এনকোয়ারি করেছেন কি? আমি পুলিশকে জিজ্ঞাসা করলাম। ঘটনাটি কী। ঘটনাটা খারাপ। গ্রেফতার হয়েছে। কিন্তু ছেলেটার সঙ্গে মেয়েটার নাকি লাভ অ্যাফেয়ার্স ছিল শুনেছি। মেয়েটি মারা গিয়েছে ৫ তারিখ। অভিযোগ জানানো হয়েছে ১০ তারিখে। যদি কারও কোনও অভিযোগ থাকে তবে ৫ তারিখে অভিযোগ দায়ের করলেন না কেন?’’
এর পর ডিজি-র উদ্দেশ্যে জানতে চান তিনি ঠিক বলছেন কি না। মমতা যোগ করেন, ‘‘মেয়েটি মারা গিয়েছে ৫ তারিখে। পুলিশে জানানো হয়েছে ১০ তারিখে। যদি কারও কোনও অভিযোগ থাকে তবে ৫ তারিখে অভিযোগ দায়ের করলেন না কেন?’’ মুখ্যমন্ত্রী এও দাবি করেন, কাউকে কিছু না জানিয়ে নির্যাতিতার দেহ পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এখন কী ভাবে এর তদন্ত করবে পুলিশ!
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'আমি সবটা না জেনেও বলছি, প্রমাণ পাবে কোথা থেকে? সত্যিই রেপ হয়েছে, না প্রেগনেন্ট ছিল, না অন্য কোনও কারণ হয়েছে, না কেউ ধরে দুটো চড় মেরেছে, না শরীরটা খারাপ হয়েছে। অ্যাফেয়ার্স তো ছিলই। বাড়ির লোকেরা সেটা জানতো, পাড়ার লোকেরাও জানতো।"
অভিযোগ, ধর্ষণের পাঁচদিন পর নদিয়ার হাঁসখালির এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসে। পরিবারের অভিযোগ, স্থানীয় তৃণমূল নেতা(TMC Leader) সমর গোয়ালার ছেলে ব্রজগোপালের জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ডেকে ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ করা হয় ৷ পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে ওই নাবালিকার মৃত্যু হয়। পরে প্রমাণ লোপাটের জন্য পরিবারকে হুমকি দিয়ে দেহ দাহ করা হয় বলে অভিযোগ ।
অভিযোগ, বিষয়টি জানাজানি হতেই নির্যাতিতার বাড়ি এসে হুমকি দেয় তৃণমূল নেতা(TMC Leader) সমর গোয়ালার দলবল। তাই ভয়ে এলাকার বিশেষ কাউকে কিছু জানায়নি পরিবারের সদস্যরা। মঙ্গলবার ভোরেই কার্যত নিঃশব্দে শ্মশানে দাহ করা হয় নাবালিকার দেহ। এমনকি নিহত কিশোরীর মায়ের দাবি, থানায় অভিযোগ জানাতে গেলেও তা নেওয়া হয়নি।
এরপর চাইল্ড লাইনে(Child Line)) খবর যায়। তাঁদের সহযোগিতায় আবার শনিবার হাঁসখালি থানায়(Hanskhali police Station) যান মৃতার বাড়ির সদস্যরা। তাঁদের অভিযোগ, জন্মদিনের পার্টির নামে ডেকে নিয়ে গিয়ে নাবালিকাকে ধর্ষণ করে প্রেমিক ব্রজগোপাল গোয়ালা অর্থাৎ তৃণমূলের(TMC) পঞ্চায়েত সদস্যের ছেলে। এরপর মৃতার পরিবারকে ভয়ও দেখানো হয় বলে অভিযোগ। সেই কারণেই পুলিশে খবর না দিয়ে নাবালিকার দেহ দাহ করে দেওয়া হয়। তবে ঘটনার পর থেকেই উধাও অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা(TMC Leader) এবং পরিবারের বাকি সদস্যরা।