তৃণমূল কংগ্রেস সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভার পরেই মুখে হাসি ফুটল চা বাগানের শ্রমিকদের। বোনাস নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অসন্তোষ ছিল চা শ্রমিকদের মধ্যে। বারবার সেটা তাঁরা আন্দোলনের মাধ্যমে প্রকাশও করেছেন। রবিবার চা শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে সরব হয়েছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তার পর থেকেই যেন আশার আলো দেখছেন চা শ্রমিকরা। তাঁরা নিজেদের দাবির জন্য আন্দোলন করতে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছেন। যদিও সোমবার গয়েরকাটা চা- বাগানের শ্রমিক নেতা বিরাজ লাকড়া বলেন, ডুয়ার্সের কালচিনি ও রায়মাটাং-সহ বিভিন্ন চা বাগানে বোনাস,প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্র্যাচুইটির সমস্যা থাকলেও গয়েরকাটা চা বাগানে এই ধরনের সমস্যা নেই। তবে, কয়েকজন শ্রমিকের আধার কার্ড লিঙ্ক না থাকায় কারণে কিছু সমস্যা রয়েছে।
রবিবার মালবাজারে তৃণমূলের চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ান। বলেন, চা বাগান মালিকরা যদি শ্রমিকদের পিএফ এবং গ্র্যাচুইটি নিয়ে প্রতারণা করেন, তাঁদের বিরুদ্ধে এফআইআর করে ফৌজদারি মামলা করা হবে। এছাড়াও অভিষেকের অভিযোগ, চা ওয়ালা বলে নিজেকে দিল্লির মসনদে প্রতিষ্ঠা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আর তাঁর আমলেই সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ দেশের এবং বিশেষ করে বাংলার চা শ্রমিকরা। বাজাটে চা শ্রমিকদের জন্য যে হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল, তার দশ পয়সাও বাগানের উন্নয়নে ব্য়বহার করা হয়নি। তাঁর মতে, বিজেপির আমলে আচ্ছে দিন শুধু এসেছে জন বার্লা, নিশীথ প্রামাণিক এবং জয়ন্ত রায়দের মতো বিজেপি সাংসদের। সাধারণ মানুষের তাতে কোনও লাভ হয়নি। এদিন তিনি আরও বলেন, এই বছরের শেষের মধ্য়ে চা শ্রমিকদের প্রভিডেন্ট ফান্ড ও গ্র্যাচুইটির সমস্যা না মিটলে আগামী বছরের প্রথম দিন থেকে বিজেপির তিন সাংসদ এবং নয় বিধায়কের বাড়ি ঘেরাও করা হবে।
এছাড়াও এদিন চা শ্রমিকদের মন পেতে একধিক ঘোষণা করেন অভিষেক। তিনি বলেন, ছোট বাচ্চা বাড়িতে রেখে বাগানে কাজ করতে আসতে পারেন না চা শ্রমিকরা। যে কারণে পিঠে বা কাঁখে ছোট বাচ্চাদের বেঁধে কাজ করতে হয় তাঁদের। তাই সরকার চা শ্রমিকদের শিশুদের জন্য ৫০টি ক্রেশ তৈরি করে দেবে। সেখানেই বাচ্চাদের রেখে কাজ করতে পারবেন মহিলারা। পরে ক্রেশের সংখ্যা বাড়ানো হবে বলেও জানান। এরপরেই কার্যত স্বস্তির হাসি দেখা গেল চা শ্রমিকদের মুখে। চা শ্রমিক সুনিতা কেরকাট্টা বলেন, রবিবার অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় তিনি গিয়েছিলেন। তিনি খুশি। তাঁদের জন্য হাসপাতাল হবে বাচ্চাদের জন্য ঘর হবে এই ঘোষণায়।