প্রতিনিয়ত হুহু করে দাম বাড়ছে জিনিসপত্রের| এহেন সময়ে, মধ্যবিত্তের সংসার টানতে কার্যত হিমশিম খেতে হয়| হালফিলে সন্তান-সন্ততি নিয়ে যাঁরা সংসার টানছেন তাঁদের খরচ অনেক সময় বেতনের থেকেও বেড়ে যায়| অর্থাৎ মাস গেলে সঞ্চয় বলে কিছুই থাকে না|
কিন্তু মধ্যবিত্তের সঞ্চয় না থাকার মতো বিপদ আর কিছুতে নেই| হাতে টাকা থাকলে সকলেই একটু চান শখ পূরণ করতে, একটু ভালভাবে বাঁচতে| কিন্তু তিনদিনের অতিরিক্ত বিলাসিতাই আবার মাসের শেষে টানাটানির কারণ হয়ে দাঁড়ায়| অথচ, সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য সঞ্চয় থাকাটা আবশ্যিক| অসুখ বিসুখ বিপদ আপদে তাহলে মোকাবিলা করা সম্ভব হবে| আসলে অনেকেই বুঝতে পারেন না, যে সঞ্চয়টা করবেন কীভাবে? সেক্ষত্রে কিছু টিপস মেনে চললেই দেখবেন মাসের শেষে টানাটানি তো থাকছেই না বরং কিছু টাকা আপনি জমাতেও পারবেন|
প্রথমেই হিসেবে:
মাসের প্রথমে টাকা পেয়েই প্রত্যেকটা মানুষেরই কিছু নির্দিষ্ট খরচ থাকে, যা দিতেই হবে| যেমন গ্যাসের বিল, কারেন্টের বিল, কারও বা বাড়ি ভাড়া, পরিচারিকাদের মাইনে সহ অনেককিছুই| সেক্ষেত্রে প্রথমেই সেই টাকা সরিয়ে রেখে, কতটা টাকা হাতে রইল তাঁর একটা স্বচ্ছ হিসেবে রাখতে হবে| ধরা গেল, আপনার বেতন 1000 টাকা (1000 টাকার গুণিতকের ভিত্তিতে হিসেব করতে পারেন) | সমস্ত আবশ্যিক খরচ মিটিয়ে দেওয়ার পর আপনার হাতে রয়েছে আর 700 টাকা| এর মধ্যে থেকেই চলতে হবে বাকিটা|
হিসেবের পর বাজেট:
আপনার হাতে আবশ্যিক খরচের ঠিক পরে যে টাকাটুকু রয়েছে, তারমধ্যে থেকে প্রথমেই খুব অল্প পরিমাণ অর্থ আগেই অন্যত্র সরিয়ে রাখুন| অর্থাৎ, পূর্বতন হিসেবের ভিত্তিতে যদি আপনার কাছে ৭০০ টাকা (১০০০ টাকার গুণিতকের ভিত্তিতে হিসেব করতে পারেন) থেকে থাকে তার মধ্যে থেকে ১৫০ কিংবা ২০০ টাকা আগেই সরিয়ে রাখুন, এবার আপনার হাতে যা থাকছে সেটিই আপনার সংসারের বাজেট| এরমধ্যেই মেটাতে হবে আমোদ, শখ পূরণ থেকে শুরু করে নিত্য প্রয়োজন | যেই টাকা হাতে পড়ে থাকছে, তা ৩০ দিয়ে ভাগ করে দেখে নিতে পারেন রোজ খরচের জন্য আপনার হাতে ঠিক কত টাকা থাকছে| প্রতিদিন খরচের সময় সেইটা মাথায় রাখতে হবে |
লিখে রাখুন:
দোকান, বাজার , জ্যুস, রেস্তোরাঁর বিল থেকে জামাকাপড় শপিং সমস্ত কিছুর খরচ লিখে রাখুন| সেক্ষেত্রে মাসের শেষে, বুঝতে পারবেন কোথায় আপনার টাকাটা বেশি চলে গেল| বা কোন খরচটা না করলেও চলত| পরের মাস থেকে সেই খরচটা কমিয়ে ফেলতে হবে| আর এতে আবশ্যিক খরচ বাদেও মাসে মোটামুটি সুস্থ স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে আপনার ঠিক কত টাকা খরচ হয় তারও একটা ধারণা পাওয়া যাবে|
দৈনিক খরচেও বাঁচবে টাকা:
আপনার রোজকার খরচ সমান হয় না, কোনও দিন বেশি কোনও দিন কম হয়| যেদিন কম হবে, সেদিন বাকি টাকাটা চেষ্টা করুন আবার সরিয়ে ফেলতে| অর্থাৎ আপনার টাকাটা না লাগলে উড়িয়ে না ফেলে রেখে দেওয়ার চেষ্টা করুন| সেক্ষেত্রে যেদিন হাতে টাকা থাকবে না কাজে আসবে, এই সঞ্চয়ই|
পিগি ব্যাংক:
বাড়িতে একটা ঘট বা পিগি ব্যাংক থাকলে মন্দ হয় না| দশ টাকা কুড়ি টাকা যা যখন বাঁচছে রেখে দেবেন |
নো ইউপিআই:
UPI আসার পর থেকে অনেকেই ক্যাশের কথা ভুলে গিয়েছেন, কিন্তু জানেন কি এতেই খরচটা বেশি হয়? ক্যাশ না থাকলে আগে মানুষ কিছু না কিনেই ফিরে যেতেন| কিন্তু UPI থাকায় সে অসুবিধে নেই| তাই খুব প্রয়োজন ছাড়া UPI ব্যবহারটাই কমিয়ে ফেলুন |
অটো পে অফ রাখুন :
অনেকেই অনেক APP দরকারে সাবস্ক্রাইব করার সময় অটো পে ও রাখেন, অথচ হয়ত এক মাস-দু মাস পর তার আর সেই APP এর দরকারটাই নেই| তবুও ঘ্যাচাং করে কেটে যায় টাকা| তাই প্রথমেই অটো পে অফ রাখুন|
বাইরে পা রাখা মানেই খরচ:
অনেকেই ঘরে থাকতে পছন্দই করেন না| আর জানেন তো এতেই হয় খরচটা? বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেবেন? তো বাড়িতেই দিন| বাইরে বের হওয়া মানেই কিন্তু খরচ|