মাসের ৩০ তারিখে মাইনেটা অ্যাকাউন্টে ঢুকতেই যা সময়! কারণ বেতন অ্যাকাউন্টে ঢুকতে না ঢুকতেই হাজারো খরছ। ফলে মাসের ১৫ তারিখ আসতে না আসতেই পকেট গড়ের মাঠ। ফলস্বরূপ আবার টানাপোড়েন শুরু। আবার পরের বেতন কবে আসবে, তার জন্য দিন গুনতে থাকা। অনেকে আবার এই সমস্যায় পড়েন অতিরিক্ত ব্যয়ের কারণে। কিন্তু এভাবে চললে কখনই সঞ্চয় করা সম্ভব হয় না। তাই আজ রইল সহজে সঞ্চয় করার বেশ কয়েকটি টিপস।
বাজেট
অল্প আয় করেও সঞ্চয় সম্ভব যদি আপনি মাসের শুরুতেই বাজেট তৈরি করে ফেলেন। প্রথমেই আপনার কত টাকা ঋণ, কত টাকা রেশন, ঘর ভাড়া, বিদ্যুতের বিল, শিশুর খরচ, চিকিৎসা, এসবের হিসেব করে নিন। এবার বাজেটের টাকা অ্যাকাউন্টে রেখে বাকি টাকা সঞ্চয়ের জন্য রেখে দিন।
ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা জমান
বাজেটের পর বাড়তি টাকা যাতে অ্যাকাউন্ট থেকে কেটে সরাসরি সঞ্চয়ের খাতায় চলে যায় এরকম কিছু স্কিম করে রাখুন। টাকা মাসের প্রথমেই সঞ্চয়ের খাতায় চলে গেলে বাড়তি খরচের ভয় থাকে না।
বড় কেনাকাটা
হঠাৎ করেই কোনও বড় কিছু কেনার সিদ্ধান্ত না নেওয়ায় ভাল। আবেগপ্রবণ হয়ে অনেকে সবকিছু কেনাকাটা করেন, এটি থেকে দূরে থাকতে হবে। কারণ হঠাৎ কোনও কেনাকাটা মাসিক বাজেট নষ্ট করে আর কোনও ভাবেই সঞ্চয় সম্ভব হয় না। প্রয়োজনে কয়েকমাস একটু টাকা জমিয়ে তারপর বড় কেনাকাটা করুন।
খরচে রাশ টানুন
বিদ্যুতের বিল, জলের বিল,বা গ্যাসের বিল এই ধরণের খরচগুলি দৈনন্দিন জীবনের অংশ। কিন্তু এই খরচ লাগামছাড়া হয়ে গেলে টাকা বাঁচানো মুশকিল হয়ে যায়। তাই এই ধরণের খরচে লাগাম টানতে হবে। ঘরে না থাকলে আলো, পাখা, এসি এগুলি বন্ধ রাখুন। জলের খরচে রাশ টানুন। রান্নার গ্যাস যাতে বেশি দিন ব্যবহৃত হয় সেই দিকে নজর রাখুন।
অনলাইনের পরিবর্তে নগদে কেনাকাটা
আপনি কেনাকাটার জন্য যত টাকা বরাদ্দ করেছেন সেই টাকা হাতে রাখুন। এক্ষেত্রে হাতে যে পরিমাণ টাকা থাকবে সেই টাকাতেই কেনাকাটা করুন অনলাইনে কেনাকাটা করলে বাড়তি খরচ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর কাছে অতিরিক্ত নগদ থাকলেও বেশি খরচ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাই বাজেট অনুযায়ী টাকা হাতে রাখুন।
কিছু খরচ বাদ দিয়ে দিন
খুব বেশি ব্র্যান্ডেড জামাকাপড়, গ্যাজেট, পার্টি এসবের দিকের খরচ একটু কমিয়ে আনার চেষ্টা করুন। প্রয়োজন ছাড়া অতিরিক্ত কেনাকাটাতেও রাশ টানুন।
OTT সাবস্ক্রিপশন
মাসের শুরুতে বেতন ঢুকলেই OTT সাবস্ক্রিপশনের জন্য গুচ্ছের টাকা খরচ হয়ে যায়। অথচ সব OTT দেখা সম্ভব হয় না সারা মাস। এক্ষেত্রে আপনি যে ক'টা OTT নিয়মিত দেখেন সেগুলোর জন্যই খরচ করুন।
বাড়িতে রান্না করুন
টুকটাক বাইরের খাবার রোজই কমবেশি খাওয়া হয়। কিন্তু বাইরের খাবার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক। পাশাপাশি, বাইরের খাবার খাওয়ার জন্য অতিরিক্ত খরচ হয়ে যায়। তাই মাসে এক আধবার বাইরে খাওয়া ছাড়া বাকি দিনগুলি বাড়িতেই রান্না করুন। এতে সাশ্রয় হবে।
ঋণ মেটান
টাকা এলেই ঋণ মিটিয়ে দিন আগে। কারণ ঋণ রেখে দিলে সুদের পরিমাণ বাড়তে থাকে। এর ফলে আপনার খরচ বাড়ে বই কমে না। ঋণ থাকলে সঞ্চয় সম্ভব হয় না। প্রয়োজনে ঋণ না নেওয়ার চেষ্টা করুন। বরং সঞ্চয় করে তারপর খরচ করার সিদ্ধান্ত নিন।
নিজের কাজ নিজেই করুন
শহরের ব্যস্ত জীবনে নিজের কাজ অনেক সময়েই নিজের পক্ষে করা সম্ভব হয় না। সেক্ষেত্রে অন্যের উপর ভরসা করতে হয়। এতে খরচ বাড়ে। প্রয়োজনে পরিবারের সব সদস্যদের মধ্যে কাজ ভাগ করে নিজের কাজ নিজেরা চেষ্টা করুন। এতে খরচ বাঁচবে সঞ্চয় সম্ভব হবে।
স্বাস্থ্যবীমা
আজকাল মানুষের স্বাস্থ্যের কথা বলা যায় না। সেই সময় অনেকটা টাকা একসঙ্গে খরচ হয়ে যায়। এতে সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। এক্ষেত্রে আপনি মাসের শুরুতেই একটা স্বাস্থ্যবীমা করিয়ে রাখুন। যাতে আচমকা কোনও বড় খরচের ধাক্কা না এসে পড়ে।
খুচরো পয়সা জমান
রোজ বাড়ি ফেরার পর দেখবেন হাতে কিছু খুচরো পয়সা থেকে যায়। সেগুলো নিয়ম করে জমাতে শুরু করুন। মাসের শেষে দেখবেন বেশ কিছু টাকা জমে গিয়েছে।