টেলি জগতের ও টলিউডের জনপ্রিয় অভিনেতা রণজয় বিষ্ণু । সম্প্রতি আবার বলিউডে পাড়ি দেওয়ার খবরেও সকলকে কার্যত চমকে দিয়েছেন অভিনেতা । কিন্তু, তারপরেও বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না রণজয়ের । শুরু সোহিনী-শোভনের বিয়ের পর থেকে । বারবার চর্চায় উঠে আসছে রণজয়ের নাম । তাঁকে নিয়ে চলছে বিস্তর কাঁটাছেড়া । এদিকে, আবার রণজয়ের এক প্রাক্তনের অভিযোগ, প্রেমিকাদের এটিএম কার্ড হিসেবে ব্যবহার করেছেন রণজয় । তিনি নাকি ‘লেডিস ভার্সাস রিকি বহেল’ ছবির বাস্তবের রিকি বহেল । এবার এই যাবতীয় অভিযোগের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন রণজয় । অভিনেতা জানিয়েছেন, তিনি সব উত্তর দেবেন আইনি পথে ।
ইনস্টাগ্রামে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছেন রণজয় । যেখানে তাঁর দাবি, বিগত কয়েকদিন ধরে বেশ কিছু অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটছে, যার জন্য তিনি ও তাঁর পরিবার একেবারেই প্রস্তুত ছিলেন না । যেসব ঘটনা ঘটে চলেছে, তাঁকে নিয়ে যে কাল্পনিক ও অসত্য কথা রটানো হচ্ছে, তার জন্য তিনি ও তাঁর পরিবার ব্যথিত । তাঁরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত । যার প্রভাব পড়ছে অভিনেতার কর্মজীবনেও ।
রণজয়ের অভিযোগ, শুধুমাত্র প্রচারের লোভে তাঁর ব্যক্তিগত জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করা হচ্ছে । তাঁর পরিবারকে পাব্লিক ফোরামে ছোট করা হচ্ছে । আর সেসবের বিরুদ্ধে তিনি প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন । তবে, এর জবাব তিনি স্যোশাল মিডিয়া বা নিউজ আর্টিকেলে দেবেন না । শুধুমাত্র প্রচারের লোভে যাঁরা এই অন্যায় ক্রমাগত করে চলেছেন, তাঁদের যাবতীয় উত্তর আইনি পথেই দেবেন তিনি ।
রণজয় লেখেন, " বিগত দিনের বেশ কিছু খবরে আমি এবং আমার পরিবার ব্যথিত ও মর্মাহত। আমরা পরিবার হিসেবে প্রস্তুত ছিলাম না এরকম অনভিপ্রেত কিছু ঘটনার জন্য। যে ঘটনাগুলোতে আমার ও আমার পরিবারের মানসিক শান্তি বিঘ্নিত।আমার কর্মজীবন ক্ষতিগ্রস্ত।যে সমস্ত মানুষজন আমাকে নিয়ে বিভিন্ন কাল্পনিক ঘটনা ও বক্তব্য পাব্লিক ফোরাম এবং মিডিয়া পোর্টালের কাছে অবতারনা করে বর্তমান সময়ে গুরুত্ব পাওয়ার করুণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন তাদের প্রতি পূর্ণ সমবেদনা রইল । তবু শুধুমাত্র প্রচারের লোভে আমার ব্যক্তিগত জীবনকে এইভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করা এবং আমার পরিবারকে পাব্লিক ফোরামে ছোটো করার জন্য আমায় এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতেই হতো ।...আমি জানি স্যোশাল মিডিয়া বা নিউজ আর্টিকেলে তার প্রত্যুত্তর সম্ভব নয়,কারণ আমার বিরুদ্ধে বলা মিথ্যে কথাগুলো ক্রিমিনাল অফেন্স এবং কথাগুলো যদি সত্যি হয় আমি ক্রাইমের সঙ্গে যুক্ত। তাই এই সমস্ত মিথ্যে কথার উত্তর আমি আইনী পথেই দেব ।এবং শুধুমাত্র প্রচারের লোভে যারা এই অন্যায় ক্রমাগত করে চলেছেন তাদের যাবতীয় উত্তর আইন দেবে । আমি এবং আমার পরিবারের মর্যাদা যারা শুধুমাত্র ব্যক্তি স্বার্থ আর ক্ষুদ্র প্রচারের লোভে ক্ষুন্ন করলেন তাদের মানসিক সুস্থতা কামনা করি।"
উল্লেখ্য, সম্প্রতি রণজয়ের প্রাক্তন প্রেমিকা ও অভিনেত্রী প্রিয়াঙ্কা মণ্ডল দাবি করেন, রণজয়ের সঙ্গে থাকা মানে ওর ভরণপোষণের দায়িত্ব নেওয়া। ওর পিছনে টাকা খরচ করতে না পারলে সম্পর্ক টেকানো মুশকিল। ২০১৫ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সম্পর্কে ছিলেন প্রিয়াঙ্কা ও রণজয় । সেইসময় নাকি রণজয়ের জামাকাপড় থেকে শখ-শৌখিনতা...সবরকম দায়িত্ব নিতে হয়েছিল প্রিয়াঙ্কাকে । পরে যখন অভিনেত্রীর হাতে কাজ না থাকায় অর্থনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ ছিল, সেইময় রণজয়ের সঙ্গে তাঁর প্রেম ভাঙে ।
প্রিয়াঙ্কার দাবি, রণজয়ের জীবনে প্রিয়াঙ্কা আসার আগে শিবাঙ্গী শর্মা নামে এক টেলি অভিনেত্রীর সঙ্গে সম্পর্ক হয় । মুম্বইয়ের বেশ কিছু ধারাবাহিকে কাজ করেছেন শিবাঙ্গী । সেইসময় শিবাঙ্গীর কাছ থেকে প্রায় ৫০ হাজার টাকা নিয়ে মুম্বই থেকে চলে এসেছিলেন রণজয় ।
রণজয়ের পিছনে নারি সবথেকে বেশি খরচ করেছেন সোহিনী । এমনই দাবি প্রিয়াঙ্কার । অভিনেত্রী সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, "যখন রণজয়ের সঙ্গে সম্পর্কে ছিলাম, ও সোহিনীর সম্পর্কে নানা কুকথা বলত। তার এক বছর পরে দেখি, তার সঙ্গেই সম্পর্কে। তবে এটুকু বুঝেছিলাম যে, আমার মতো এ বার সোহিনীকেও জবাই করবে। পরে যখন সোহিনীর সঙ্গে কথা হল, সব জানতে পারলাম। খরচের দিক থেকে অন্য প্রেমিকাদের তুলনায় সবচেয়ে উপরে রয়েছে সোহিনী।"
প্রিয়াঙ্কার আগে অবশ্য রণজয়ের বিরুদ্ধে প্রথম মুখ খোলেন প্রাক্তন প্রেমিকা সায়ন্তনী গুহঠাকুরতা । তিনি লেখেন, 'প্রাক্তন প্রেমিকার বিয়ে হয়ে যাওয়ার পর সেটাকে নিয়ে পাবলিসিটি করতে খুব কম গুণী মানুষই পারেন… এঁরা হলেন তাঁরা, যাঁরা মৃতদেহের পাশে শুয়েও ইন্টারভিউ দিতে পারেন।'
উল্লেখ্য, বর্তমানে জি বাংলার কোন গোপনে মন ভেসেছে ধারাবাহিকে অভিনয় করছেন রণজয় । জানা গিয়েছে, ছোট পর্দা, টলিউডের গন্ডি পেরিয়ে রণজয় এবার পসার জমাতে চলেছেন বলিউডে। মুলায়ম সিং যাদবের বায়োপিক আসছে। সেখানেই একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র, অজিত সিংয়ের ভূমিকায় দেখা যাবে। ইতিমধ্যেই প্রকাশ্যে এসেছে ছবির ট্রেলার। যেখানে স্বমহিমায় দেখা গিয়েছেন রণজয়কে। আগামী ২৬ জুলাই মুক্তি পাচ্ছে এই ছবিটি।