এই দু'দশক আগেও কেউ বিয়ে না করলে, সারাজীবনই তাঁর নামের পাশে জুড়ে যেত 'আহা রে' গোছের সমবেদনাসূচক শব্দ, সে নারী পুরুষ নির্বিশেষেই। তবে ভারতের মতো দেশে, যেখানে পরিবারের জনপ্রিয়তা বিপুল, সেখানেও কিন্তু ছবিটা বদলাচ্ছে। গবেষণা বলছে, সিঙ্গলরা যে জীবনটা যাপন করেন, সেটা অনেক বেশি স্বাধীন। নিজের শর্তে বাঁচা একটা জীবন।
সম্প্রতি, দ্য সাইকোলজি টুডে ডট কমে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনেই এমনটা বলা হয়েছে। সেই প্রতিবেদন বলছে, জীবনের বেঁচে থাকার যে কারণ, তা অনেক বেশি অর্থবহ হয়ে ওঠে সিঙ্গল যাপনে।
বিয়ে করে চেনা ছকে জীবন কাটানোর রাস্তাটা তুলনামূলক সহজ, তবে একঘেয়েও। সিঙ্গলরা নিজেদের ইচ্ছে মতো কিছু জীবন বদলে দেওয়া সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, যেমন জীবনের যে কোনও পর্যায়েই জায়গা বদল করার সিদ্ধান্ত, পেশা বদলানোর সিদ্ধান্ত। কিন্তু জীবনসঙ্গী থাকলে একা সিদ্ধান্ত নেওয়ার স্বাধীনতা থাকে না খুব স্বাভাবিক ভাবেই। সেখানে দু'টো মানুষের সিদ্ধান্ত একসাথে জুড়ে থাকে, ফলে দু'দিক থেকেই অথবা এক দিক থেকে আপোষ করতে হয়, যা কাম্য নয়।
আর্থিক ঝুঁকিও অনেক বেশি নিতে পারেন সিঙ্গলরাই। এবং স্বাধীনতার সঙ্গে ভালো থাকার সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে, এটি প্রমাণিত সত্য।
বিয়ে করলে কী হয়? আপনি আপনার জীবনসঙ্গীর অ্যাটেনশন পান, তাঁর মনোযোগের কেন্দ্রে থাকেন, কিন্তু সিঙ্গল লাইফে একাধিক মানুষের ভাবনার অনেকটা জুড়ে থাকা যায়।
বিয়ে করলে সম্পর্কের একটা নির্দিষ্ট অর্থই প্রকট হয়, এবং সেই সম্পর্কের ছাতা খুব একটা বড় নয়, সিঙ্গল জীবনে আপনি এই পৃথিবীর নানা রকমের সম্পর্কের অনুভূতি অনেক বেশি করে পেতে পারেন, আত্মীয়-পরিজনদের সম্পর্ক, বন্ধুত্বের সম্পর্ক, চেনা, পরিচিত, পড়শিদের সঙ্গে সম্পর্ক। সম্পর্কের ছাতাটা বড় হতে থাকে। একই ব্যাপার ঘটে ভালবাসার ক্ষেত্রে, একা থাকলে ভালবাসার ব্যাপ্তি অনেক বড় হয়।
বিবাহিত জীবনে পরিবারের অর্থ খুব নির্দিষ্ট হয়, আক্ষরিক অর্থের বাইরের যে পরিবার, তাকে গ্রাহ্য করা হয়না চট করে। সিঙ্গল জীবনে যে মানুষের সঙ্গে আত্মার টান, তাকে পরিবার হিসেবে ধরা খুব সহজ।
বিবাহিত জীবনে নৈকট্য বললে শাররীরিক নৈকট্যের বাইরে খুব বেশি দূর যাওয়া যায় না। সিঙ্গল জীবন নৈকট্যের মানে অনেক বড়, যার সঙ্গে নিজের ভয়, ভালবাসা, পছন্দ, আনন্দ ভাগ করতে পারবেন, সেই-ই কাছের, যাকে জড়িয়ে ধরতে পারবেন, সেই-ই কাছের।