বারো মাসে তেরো পার্বণ প্রবাদটা এখন আর শুধু বাঙালির ক্ষেত্রে খাটে না! গোটা দেশজুড়েই উৎসব উদযাপন লেগে রয়েছে, আর সে সবকে কেন্দ্র করে সেলের হিড়িক পড়ে যায় সর্বত্রই। এই মুহূর্তে ফোন ঘাঁটলেই সোশ্যাল মিডিয়া সবচেয়ে বেশি বিজ্ঞাপন যার, সে হলো ব্ল্যাক ফ্রাইডে সেল। অনলাইনে-অফলাইনে দোকানে বাজারে স্পেশাল ডিসকাউন্ট।
ব্ল্যাক ফ্রাইডে সেলের অতিকায় হোর্ডিং-এ ছয়লাপ রাস্তাঘাট-শপিং মল। কেনাকাটায় আগ্রহীরা এমন সুযোগ ছাড়বেন কেন? ডিজিটাল জমানায় কেনাকাটার নতুন ঠিকানা অনলাইন শপিং।নানা ই কমার্স সংস্থা তাদের সেলের পসরা সাজিয়ে রেখেছে ক্রেতাদের জন্য। কেউ পন্যের ওপর দিচ্ছে ৫০% ছাড়, কেউ ৭৫%।
কোথাও ছাড় পোশাকে, কোথাও জুতোতে, ঘড়িতে কোথাও আসবাবে, কোথাও আবার মেক ওভারে। সেলের নিরিখে কে কাকে টেক্কা দেয়, যেন তারই প্রতিযোগিতার মাস এই নভেম্বর। কোয়েস্ট মল সহ শহরের সব শপিং মলেই চলছে ব্ল্যাক ফ্রাইডে সেল। আর অনলাইনে, মিন্ত্রা, আজিও, ডেকাথলন, ফ্লিপকার্ট কোনও ই কমার্স সংস্থাই বাকি নেই।
ব্ল্যাক ফ্রাইডে সেলের নামটা এল কোথা থেকে? একটু জেনে নেব। তার আগে বলে রাখা ভাল, ব্ল্যাকফ্রাইডে এবং থ্যাঙ্কস গিভিং, এই দুটি দিনের ধারণাই পশ্চিমী দুনিয়া থেকে নেওয়া। প্রতি বছর নভেম্বরের চতুর্থ বৃহস্পতিবারটা থ্যাঙ্কসগিভিং হিসেবে পালিত হয়, পরের দিনিটা ব্ল্যাক ফ্রাইডে। প্রতি বছরই থ্যাংকসগিভিং-এর পরের এই দিনটিতে শহরে ভিড়, চুরি-চামারি, যানজট, ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে পুলিশদের অসুবিধার সম্মুখীন হতে হতো। ১৯৬০ এ ফিলাডেলফিয়ায় থ্যাংসগিভিং-এর পরের শুক্রবার বেশ বড় দুর্ঘটনা ঘটেছিল। সেই প্রথম ব্যবহার করা হল 'ব্ল্যাক ফ্রাইডে' শব্দটা। তারপর কিন্তু দীর্ঘ সময় ধরে নেতিবাচক অর্থেই ব্যবহার করা হত শব্দটা।
অনলাইন শপিং-এর (Online shopping) হিড়িক ক্রমে বেড়েই চলেছে। সারা বিশ্বজুড়েই গ্রাহকরা অভ্যস্থ হয়ে পড়ছেন এই ধরনের শপিং-এ। ওয়ান্ডারম্যান থম্পসনের (Wunderman Thompson) নয়া রিপোর্ট বলছে, ভারতীয়রা দুনিয়ার মধ্যে সবথেকে বেশি অধৈর্য অনলাইন শপার। রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতীয় ক্রেতাদের (Indian customers) মধ্যে ৩৮ শতাংশই চান তাঁদের সামগ্রী যেন ২ ঘণ্টার মধ্যে ডেলিভার করা হয়ে যায়। ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি (e-commerce industry) মূলত টিকেই রয়েছে ভারতীয়দের এই চাহিদার যোগান দেওয়ার জন্য, এমনটাও জানাচ্ছে সমীক্ষা।
এই রিপোর্টের মাধ্যমে আরও জানা গিয়েছে যে, অনলাইনে সবথেকে বেশি ডিজিটাল সামগ্রী কেনায় এগিয়ে রয়েছেন ভারতীয়রা। ৪৫ শতাংশ ডিজিটাল প্রোডাক্ট কেনেন তাঁরা। শুধু তাই নয়, যে সামগ্রী অনলাইন মাধ্যমে তাঁরা কেনেন, সেটিও ফিরিয়ে দেওয়ার নিরিখে ৩৭ শতাংশ ক্ষেত্রে এগিয়ে ভারতীয়রা।