বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ তো লেগেই ছিল, সেই কোন কাল থেকেই। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের উপনিবেশ থাকায় ব্রিটিশ আদব কায়দা, খাওয়ার ধরণও বেশ খানিকটা রপ্ত করে ফেলেছিল মাছে ভাতে বাঙালি। তাই কেক ছাড়া বড়দিন ভাবা যেত না কয়েক'শ বছর ধরেই। তবে কিনা, সময় যত এগোচ্ছে, বাঙালির উৎসবের উদযাপনের ধারা বদলে যাচ্ছে কেবলই। কেকযাপনের গল্পটাও একই।
বড়দিন বললে এই কয়েক বছর আগেও শহর কলকাতায় সবার চোখে ভাসত, নিউমার্কেটের নাহুম'সের বাইরের ক্রমবর্ধ্মান লাইন, কিমবা বো ব্যারাক চত্ত্বরের বড়ুয়ার কেক, অথবা সালদানহা বেকারির সিঁড়িতে উপচে পড়া ভিড়। কবে যেন ছবিটা একটু একটু করে পালটে গেল। আলাদা করে বড়দিনের জন্য তোলা থাকল না কেক। জন্মদিন, বিয়ে, অন্নপ্রাশন, ফেয়ারওয়েল, সব উদযাপনেই প্রাধান্য পেল কেক।
বাড়িতে বেকিং-এর চলও যেমন বাড়ল, সঙ্গে মুঠোফোন থাকলে তো কথা-ই নেই,ফুড ডেলিভারি অ্যাপে বুক করলেই ঘরের দরজায় পৌঁছে যায় রকমারি, বাহারি কেক। আগে থেকে বলা থাকলে আপনার পছন্দের নক্সা করা থাকবে তাতে, কেকেও থাকবে থিমের ছোঁয়া। হালের বড়দিনের কেকেও সাবেকি স্বাদের ফ্রুট কেকের তুলনা চাহিদা বাড়ছে কাস্টোমাইজড কেকের। তাতে কোথাও সান্টার মুখ আঁকা, কোথাও আবার জিঙ্গল বেল-স্লেজ গাড়ি দিয়ে সাজানো।
এইভাবে, একটু একটু করে সময় বদলে যায়, উদযাপনের ধারা বদলে যায়, কেক পেস্ট্রির গন্ধ বদলে যায়, আর বদলে যাওয়ার ইতিহাসকে একটু একটু করে ধরে রাখে শহর কলকাতা।