জীবন বড়ই বিচিত্র! কখন কাকে কার মনে ধরে, কোন আলাপ প্রেমে গড়ায়, কিচ্ছু বলা যায় না। আবার তেমনই অনিশ্চিত বিয়ে। আবার কোন বিয়ে টিকবে, কোন সম্পর্কে অল্প দূরেই রাস্তা আলাদা হবে, তা-ও আঁচ করা যায় না আগে থেকে। যে কোনও বিচ্ছেদেই লেগে থাকে করুণ সুর, কিন্তু বিচ্ছেদের পেছনে কারণ যে সব একরকম হয়, এমনটা নয় মোটেই।
উদ্ভট কারণের জন্য ডিভোর্সের নজির রয়েছে নানা সময়ে। আজ সেরকমই কিছু কিম্ভূত ঘটনার উল্লেখ করব দর্শক পাঠকদের জন্য।
কর্ণাটকের ঘটনা। স্বামী স্ত্রীয়ের কাছ থেকে ডিভোর্স চেয়ে আদালতে গিয়েছিলেন। কারণ? স্ত্রী ম্যাগি ছাড়া কিছু রান্না করতে জানত না। সকালের জলখাবারে, দুপুরে, রাতে সবসময় স্ত্রী স্বামীর জন্য ২ মিনিটে রেঁধে আনতেন ম্যাগি।
গতবছরের ঘটনা, উত্তরপ্রদেশের। স্বামী বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন জানিয়েছিলেন, এই অভিযোগে, যে তাঁর স্ত্রী রোজ স্নান করেন না। এখানেই শেষ নয়, স্বামী আদালতে জানিয়েছিলেন, স্ত্রীকে স্নান করতে বললেই রোজ তাঁদের মধ্যে অশান্তি শুরু হয়ে যায়।
এবার যে ঘটোনাটি বলব, সেটি আরও অদ্ভুত। জনৈক ব্যক্তি বিয়ে করেছিলেন এক প্রেশার কুকারকে। ইন্দোনেশিয়ার এক যুবক ঘটা করে ঘোষণা করেছিলেন, তিনি তাঁর প্রিয় প্রেশার কুকারকে বিয়ে করতে চলেছেন। ধূমধাম করে বিয়ে হয়েছিল। ৪ দিন টিকেছিল সেই বিয়ে। তারপর বিবাহবিচ্ছেদ। কারণ, নতুন বউকে বড্ড 'ভারী' মনে হয়েছিল যুবকের।
তাইওয়ানের একটি ব্যাঙ্কের ক্লার্ক আরও অদ্ভুত কাণ্ড ঘটিয়েছিলেন৷ তিনি একই মহিলাকে ৩৭ দিনের মধ্যে চারবার বিয়ে করেন এবং তিনবার ডিভোর্স দেন! অবাক হচ্ছেন তো? আসলে তাইওয়ানের নিয়ম অনুযায়ী, প্রত্যেক কর্মীকে বিয়ের জন্য ৮ দিনের ছুটি দিতে বাধ্য সংশ্লিষ্ট সংস্থা। ওই ব্যাঙ্ককর্মী প্রথমে বিয়ে করে ৮ দিনের ছুটি পেয়েছিলেন। ছুটি শেষ হতে না হতেই তিনি সদ্যবিবাহিতাকে স্ত্রীকে ডিভোর্স দেন, তারপরেই ফের বিয়ে করেন৷ ফলে আরও ৮ দিন ছুটি৷ এমন করে বিয়ে-ডিভোর্স-বিয়ের মাধ্যমে তিনি মোট ৩২ দিন ছুটি আদায় করার পর ব্যাঙ্ক বেঁকে বসে। তারা আর ছুটি দিতে নারাজ। কর্তৃপক্ষের এমন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে যান ওই ব্যাঙ্ককর্মী। আদালত তাঁর পক্ষে রায় দেয়। ব্যাঙ্কের জরিমানা হয় ৫২, ৮০০ ভারতীয় টাকা।
আচ্ছ, স্বামীর ভালোবাসা চান না, এমন স্ত্রী-ও আছেন? আলবৎ আছেন। শুধু তাই নয়, স্বামীর 'অত্যধিক ভালোবাসা'য় তিতিবিরক্ত হয়ে ডিভোর্স চেয়েছেন উত্তরপ্রদেশের এক মহিলা। বিয়ের মাত্র ১৮ মাসের মাথায় তিনি ডিভোর্সের আবেদন করেন। কারণ কী? না, তাঁর স্বামী কখনও তাঁর সঙ্গে ঝগড়া করেন না। মাত্রাতিরিক্ত ভালোবাসেন৷ কখনও চিৎকার করে কথা বলেন না৷ গেরস্থালির কাজকর্মে সবসময় সাহায্য করেন৷ ওই মহিলা জানান, এত ভালোবাসায় তাঁর দমবন্ধ দশা৷ তাই তিনি বিবাহবিচ্ছেদ চান।
ইউপিএসসি পরীক্ষায় সফল হতে কে না চায়? বিয়ের বাজারে ইউপিএসসি পাশের দামও তো অনেক। কিন্তু ইউপিএসসির প্রস্তুতি নেওয়ার দোষে ভোপালোর এক নবদম্পতির বিয়ের যায় যায় দশা। বধূটির অভিযোগ, তাঁর স্বামী দিনরাত ইউপিএসসির প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত। তাঁর দিকে একফোঁটা মনোযোগ দেন না। সিনেমা দেখতে নিয়ে যাওয়া, বেড়াতে যাওয়া তো দূরস্থান। এমনকি ভালো করে কথাটুকুও বলেন না। এমন বই পাগল হবু আমলার সঙ্গে তিনি এক্কেবারে থাকতে চান না।
কথায় আছে, বিয়ের লাড্ডু যে খেয়েছে সে পস্তিয়েছে তো বটেই, যে খায়নি, সেও পস্তিয়েছে। তা উত্তরপ্রদেশের মীরাটে লাড্ডুর জন্য ১০ বছরের সংসার ভাঙতে চেয়েছেন এক ব্যক্তি। তাঁর অভিযোগ, তাঁর স্ত্রী তাঁকে লাড্ডু ছাড়া কিচ্ছু খেতে দেন না। নেপথ্যে নাকি এক তান্ত্রিকের নির্দেশ। সকালেও চারটি লাড্ডু, সন্ধেবেলাতেও তাই৷ আর কিচ্ছু না৷ এমন লাড্ডুময় বিয়েতে থাকা তাঁর পক্ষে অসম্ভব। তাই ডিভোর্স ছাড়া পথ নেই।