ফ্যাশন আইকল বলতে আমরা যাঁদের বুঝি, তাঁদের সঙ্গে হয়তো একেবারেই মেলানো যায় না মহাত্মা গান্ধীকে (Mahatma Gandhi)৷ কিন্তু যদি একটু তলিয়ে ভেবে দেখি? মহাত্মার ফ্যাশন স্টেটমেন্ট আলোড়িত করেছিল গোটা জাতিকে। তিনি সবরমতী আশ্রমে চরকা কাটতেন প্রতিদিন। তা থেকেই ধীরে ধীরে জনপ্রিয় হয়েছিল খাদি (Khadi Revolution)। এত বছর পরেও ভারতীয় পোশাক হিসাবে গোটা বিশ্বে জনপ্রিয়তার শীর্ষে খাদি।
পোশাক আশাকে গান্ধীজি ছিলেন সাদামাটা। একটি খাটো ধুতি। গায়ে চাদর। গান্ধীজি বলতেই চোখে ভাসে এই ছবিটি। কিন্তু এই পোশাক কেবল গান্ধীজির নিজস্ব ফ্যাশন স্টেটমেন্ট ছিল না, হয়ে উঠেছিল ভারতীয় জাতির সাবলম্বী হয়ে ওঠার আন্দোলনের প্রতীক। হয়ে উঠেছিল ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের চিহ্ন। একইসঙ্গে তাঁর নামে তৈরি হয় 'গান্ধী টুপির' ব্যবহার।
ভারতে ফিরে রাজনীতিতে পা রাখার আগে দক্ষিণ আফ্রিকায় আইনজীবী হিসেবে গান্ধীজি বিলিতি কায়দায় স্যুট পরতেন। ১৯১৫ সালে গান্ধীজি দেশে ফিরলেন। কিছুদিন পর রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে ‘মহাত্মা’ নামে অভিহিত করেন৷ গান্ধীজি হয়ে ওঠেন জাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের অবিসংবাদী নেতা। এই সময়েই তিনি খাদির ব্যবহার শুরু করেন, যা আমৃত্যু তাঁর সঙ্গী ছিল।
মূলত বয়ন ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা আনার জন্যই এই আন্দোলন শুরু হয়। প্রতিটি গ্রামে সুতো তৈরির জন্য কাঁচা মালের চাষ, পুরুষ এবং মহিলাদের সুতো পাকানোর কাজে যুক্ত করা ও সেই সুতোয় তৈরি কাপড় ব্যবহারের জন্য উদ্বুদ্ধ করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন গান্ধীজি। তাঁর রাজনৈতিক ভাবনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল এই কর্মসূচি। ক্রমশ এই আন্দোলন বিপুল জনপ্রিয়তা পায়। রাজনৈতিক কর্মীদের অধিকাংশই পোশাক পরতে শুরু করেন। খাদি হয়ে ওঠে জনপ্রিয় ফ্যাশন স্টেটমেন্ট। এখনও গোটা বিশ্বে বিপুল জনপ্রিয় খাদি৷ রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে বিনোদন জগতের তারকা- সকলেরই প্রথম পছন্দ খাদি। এর নেপথ্যে কিন্তু সেই শীর্ণকায় মানুষটি।