রাজ্যে শীত ঢোকার এই সময়টা ঘরে ঘরে জ্বর সর্দি। সঙ্গে কাশি। সকাল হলে শিরশিরানি ঠান্ডা, বেলা বাড়লেই গরম। আবহাওয়ার এই ‘মুড স্যুইং’ এর জেরে নাস্তানাবুদ বঙ্গবাসী। ঠান্ডা গরমে ঘরে ঘরে হাঁচি, কাশি, জ্বর ,সর্দি। সঙ্গে তো পেটের সমস্যা রয়েইছে। কিন্তু এই জ্বর সর্দি সারতে প্রাথমিকভাবে তিন দিন, এবং খুব বাড়াবাড়ি হলে সারতে দিন পাঁচেক লাগে। কিন্তু মুশকিল হল, আর সব সেরে গেলেও কিছুতেই সারতে চায় না নাছোড়বান্দা কাশি।
গলা খুশখুশ আর শুকনো কাশি যে কতটা কষ্টের, যাঁদের হয় তারাই জানেন। প্রায় ১ মাসেও এই কাশি না সারলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যিক। কী কী কারণে কাশি সারে না জানেন?
কেবল ঠান্ডা লাগা থেকেই কিন্তু কাশি হয় না। কাশি না সারার আরও অনেক কারণ রয়েছে। যার মধ্যে অন্যতম দূষণ এবং ধূমপান। বাতাসে অতিরিক্ত মাত্রায় দূষণ বাড়ছে, সঙ্গে যারা নিয়মিত ধূমপান করেন তাঁদের ক্ষেত্রে স্মোকিং কাফ হয়ে ওঠে নিত্যসঙ্গী।
অ্যাসমা:
এছাড়াও চিকিৎসকরা বলছেন, যাঁদের অ্যাসমা আছে, ঠান্ডা লাগলে তাঁদেরও কাশি সারতে চায় না। এটি একটি শ্বাসকষ্টজনিত রোগ, যেখানে শ্বাসনালীর প্রদাহ এবং সংকোচন ঘটায়। এতে কাশি, শ্বাসকষ্ট এবং হাঁপানি জাতীয় রোগ দেখা যায়।
টিবি:
টিবি (টিউবারকুলোসিস) একটি সংক্রামক রোগ যা মূলত ফুসফুসে আক্রমণ করে। টিবি সাধারণত Mycobacterium tuberculosis নামক ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে ছড়ায়। যখন একজন ব্যক্তি টিবি আক্রান্ত হন, তখন তার ফুসফুসে প্রদাহ বা ইনফেকশন সৃষ্টি হয়। এই প্রদাহের কারণে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয়, তার মধ্যে কাশি অন্যতম।টিবি ব্যাকটেরিয়া ফুসফুসে শ্লেষ্মা বা মিউকাস উৎপন্ন করে, যার ফলে কাশি হয়। টিবি যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে ফুসফুসে ক্ষত বা গর্ত তৈরি হতে পারে, যা কাশি আরও তীব্র করে তোলে। শুধু তাই নয়, টিবির কারণে কাশি সাধারণত দীর্ঘস্থায়ী (২ সপ্তাহ বা তার বেশি) হয়, এবং এতে রক্ত, ক্ষুদ্র রক্তক্ষরণ, এবং শ্বাসকষ্ট হতে পারে। এজন্য টিবি আক্রান্ত ব্যক্তির দ্রুত চিকিৎসা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
অ্যাসিডিটি:
জানলে অবাক হয়ে যাবেন, নিয়মিত অ্যাসিডিটির সমস্যায় গ্যাস্ট্রোইসোফ্যাজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজে ভুগলে বুক জ্বালাপোড়া থেকে কাশি হতে পারে, যা রাতে বা খাবারের পরে বেড়ে যায়। এছাড়াও ব্রঙ্কাইটিস বা নিউমোনিয়া সহ ফুসফুসের কোনো সংক্রমণ কাশির কারণ হতে পারে।
তাই যারা কাশিকে খুব ছোট অসুখ বলে পাত্তা দিচ্ছেন না, তাঁদের কিন্তু বিপদ দরজায় কড়া নাড়ছে। শুধু ধূমপানই নয়, কাশি না সারার আরও একাধিক কারণ রয়েছে, তাই দীর্ঘদিন কাশি না সারলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।