বাংলায় শারদীয়ার পর আশ্বিন মাসের শেষে পূর্ণিমা তিথিতে লক্ষ্মী দেবীর (Laxmi Puja 2022) আরাধনা করা হয় ৷ লক্ষ্মী ধন সম্পদের দেবী । ধন সম্পদের আশায় বাঙালির ঘরে ঘরে কোজাগরী লক্ষ্মীর (Kojagari Laxmi Puja) আরাধনা করা হয় । মা লক্ষ্মীর আরাধনা শুধু আশ্বিন নয়, ভাদ্র, পৌষ, চৈত্র মাসেও পূজিতা হন মা । তবে, আশ্বিন মাসের কোজাগরী পূর্ণিমায় লক্ষ্মী পুজোর এক বিশেষত্ব রয়েছে । 'কোজাগরী' নামের মধ্যেও রয়েছে এক বিশেষ অর্থ ।
‘কোজাগরী’ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ‘কঃ জাগর’ শব্দবন্ধ থেকে । ‘কঃ’ মানে কে, ‘জাগর’ শব্দের অর্থ জেগে আছ । অর্থাৎ, কে জেগে আছ? মানুষের বিশ্বাস, এদিন রাতে স্বর্গ থেকে মর্ত্যে নেমে আসেন দেবী ৷ যে ভক্ত রাত জেগে তাঁর আরাধনা করেন, তাঁকে আশীর্বাদ করে যান তিনি ৷ তাঁর ঘর ধনসম্পত্তিতে ভরে ওঠে । লক্ষ্মীপুজোয় যে আলপনা দেওয়া হয়, তাতে মায়ের পায়ের ছাপও আঁকা হয় । বিশ্বাস ওই পথেই মা ঢুকবেন গৃহস্থের ঘরে ।
আরও পড়ুন, Laxmi Puja 2022 : কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোয় কোথাও থাকে খিচুড়ি, জোড়া ইলিশের ভোগ, কোথাও লুচি-সুজি
লক্ষ্মীপুজোর দিন সন্ধেবেলাতেই মায়ের আরাধনা করার নিয়ম । তবে অনেকে এখন, সুবিধার জন্য সকালেই পুজো করে নেন । সাধারণত লক্ষ্মীপুজোর দিন সন্ধেবেলায় বাঙালির ঘরে ঘরে জ্বলে ওঠে সন্ধ্যাপ্রদীপ । শাখ, কাঁসরের ঘণ্টায় মুখরিত হয় আকাশ-বাতাস । রাত জেগেই মায়ের পুজো হয় । পূর্ণিমার রাতে মা মর্ত্যে এসে আশীর্বাদ করে যান তাঁর ভক্তদের । কোথাও মা লক্ষ্মীকে মূর্তি হিসেবে, কোথাও আবার সরায় আঁকা পটে পুজো করা হয় । অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘বাংলার ব্রত’ বইতে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো সম্পর্কে বিস্তৃত আলোচনা করেছেন । সেখানেই তিনি জানিয়েছেন, দেবীর কাছে ভাল ফলনের কামনা করাই আসলে এই পুজোর নৃতাত্ত্বিক কারণ ।