২৫ সেপ্টেম্বর, রবিবার । ছুটির দিন । আজ ১০টা-৫টার ছোটাছুটি নেই, নেই কোনও ব্যস্ততা । কিন্তু,আজ ছুটির দিনেও বাঙালির ঘুম ভেঙেছে সেই কাক ভোরে । চোখ কচলাতে কচলাতে উঠে পড়েছে বাড়ির ছোটরাও । চারপাশ থেকে ভেসে আসছে 'বাজল তোমার আলোর বেণু',বীরেন্দ্রকৃষ্ণভদ্রের কণ্ঠে মহিষাসুরমর্দিনীর স্তোত্র...। আজ মহালয়া (Mahalaya 2022 ) ।
কথায় আছে, বাঙালি নাকি আত্মবিস্মৃত জাতি। পুরনো ঐতিহ্য ধরে না রেখে অবহেলা করে, এমন অভিযোগ আছে। কিন্তু, মহালয়ার ভোর মনে হয় ব্যতিক্রম । পুরনো ঐতিহ্য বজায় রেখে আজও বাঙালি ভোর ভোর উঠে রেডিও চালিয়ে বসে পড়ে । বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের কণ্ঠে মহিষাসুরমর্দিনী না শুনলে পুজোর (Durga Puja 2022) সেই আমেজটা যেন আসে না । যদিও এখন যুগ বদলেছে, তাই মহালয়ার ভোরের কাহিনীও কিছুটা বদলেছে । মোবাইল, ইন্টারনেটের যুগে রেডিওয় মহালয়া শোনা হয় এখন হাতে গোনা কয়েকটা বাড়িতে । তাছাড়া, টিভিতে, বিভিন্ন চ্যানেলে দেখানো হয় 'মহিষাসুরমর্দিনী'প্রোগ্রাম । কিন্তু, তাতে কী ? ভোরে উঠে মহালয়া দেখার সেই পুরনো অভ্যাসে,উৎসাহে এতটুকু ভাটা পড়েনি ।
আরও পড়ুন, Durga Puja 2022: 'মুখ ঢেকে যায় বিজ্ঞাপনে', পুজোর কলকাতা যেন হোর্ডিংনগরী
মহালয়া শব্দটির অর্থ, মহান আলয় বা আশ্রম। এক্ষেত্রে দেবী দুর্গাই হলেন সেই মহান আলয়। পুরাণ থেকে মহাভারত, মহালয়া ঘিরে নানা কাহিনি রয়েছে । মহালয়ার দিন পিতৃপক্ষের অবসান, দেবীপক্ষের শুরু । অর্থাৎ মহালয়া থেকেই পুজো শুরু হয়ে যায় । এদিন,অসুর ও দেবতাদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছিল। হিন্দু ধর্মে মহালয়ার গুরুত্ব অনেক । এদিন, পিতৃপুরুষদের উদ্দেশে ঘাটে ঘাটে তর্পণ করে বাঙালি । পূর্বপুরুষদের জল প্রদানের রীতি হয়েছে । মহালয়াতেই দেবীর চক্ষুদানের রীতি রয়েছে । তবে, এখন সেই রীতিতে পরিবর্তন এসেছে । এখন মহালয়ার দিন বা মহালয়ার আগের থেকেই পুজো উদ্বোধন হয়ে যায় । তাই দেবীর চক্ষুদানও অনেক আগেই হয়ে যায় ।
মহালয়া মানেই পুজো পুজো গন্ধ আকাশে-বাতাসে । editorji বাংলার তরফ থেকে সকলকে শারদীয়ার প্রীতি ও শুভেচ্ছা ।