রাখি ভাই-বোনের চিরকালীন উৎসব। রাখি উৎসবকে বিভিন্ন সময়ে দেখা হয়েছে বিভিন্ন আঙ্গিক থেকে। ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ প্রতিরোধ করার জন্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রাখী বন্ধন উৎসব পালন করেছিলেন। হাজার হাজার হিন্দু ও মুসলিম ভাই ও বোনকে একতার প্রতীক হিসাবে রাখী বন্ধন উৎসব পালন করার জন্য আহ্বান করেন তিনি। তবে, পুরাণ অনুযায়ী, এই রাখি প্রথম একজন স্ত্রী তাঁর স্বামীর হাতে পরিয়ে দিয়েছিলেন। পুরাণমতে, ভাই-বোনের সম্পর্কের চিরকালীন উৎসবের সূচনা আক্ষরিক অর্থেই হয়েছিল এক দম্পতির হাত ধরে। ঘটনাটি কী, জানেন?
দেবতা-অসুরদের সংগ্রাম চলছে। কিন্তু জয় কী ভাবে আসবে? রাজা বলির কাছে হারতে বসেছেন দেবরাজ ইন্দ্র। অবশেষে ইন্দ্র চললেন বৃহস্পতির কাছে জয়ের উপায় জানতে। পথ আটকালেন ইন্দ্রাণী। বললেন, তিনি জানেন জয়ের উপায়। সেই উপায়েরই অঙ্গ হিসাবে ইন্দ্রাণী পরের দিন শ্রাবণী পূর্ণিমার রাতে স্বামীর হাতে বেঁধে দিলেন রক্ষাকবচ, যে রক্ষাকবচ তিনি পেয়েছিলেন ভগবান বিষ্ণুর কাছে প্রার্থনা করে। আর সেই রক্ষাকবচের জোরেই দেবতারা সে দিন জয়ী হয়েছিলেন। সেই রক্ষাকবচই হল রাখি। পৌরাণিক কাহিনিতে স্ত্রী রাখি বেঁধে দিয়েছিলেন স্বামীর হাতে।
গণেশের দুই পুত্র শুভ ও লভ যখন দেখেন যে গণেশের বোন তাঁকে রাখি পরাচ্ছে, তখন তাঁরাও একটি বোনের জন্য প্রার্থনা করেন। তাঁদের প্রার্থনা শুনেই আগুন থেকে একটি কন্যার সৃষ্টি করেন গণেশ, যিনি সন্তোষী মা নামে পরিচিত হন। মহাভারতে পাওয়া যায়, একবার ঘুড়ি ওড়াতে গিয়ে শ্রীকৃষ্ণ নিজের হাত কেটে ফেলেন। তখন দ্রৌপদী নিজের শাড়ি থেকে একটা টুকরো ছিঁড়ে কৃষ্ণের হাতে বেঁধে দেন। এর বিনিময়ে কৃষ্ণ তাঁকে সারাজীবন রক্ষা করার প্রতিশ্রুতি দেন। যা তিনি দ্রৌপদীর বস্ত্রহরণের সময় পালন করেছিলেন।