'অনেক তো দিন গেল বৃথাই সংশয়ে
এসো এবার দ্বিধার বাধা পার হয়ে'
পয়লা মে ঐতিহাসিক মে দিবস। ১৮৮৬ সালের পয়লা মে আমেরিকার হে মার্কেটে ৮ ঘণ্টা কাজ এবং শ্রমিকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের দাবিতে পথে নেমেছিলেন শ্রমিকরা। সেই মিছিলে গুলি চালিয়েছিল পুলিশ। শহীদ হয়েছিলেন চারজন শ্রমিক। তখন থেকেই এই দিনটি শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তারিখ হিসাবে পরিচিত। বিশ্বের প্রতিটি মহাদেশে, প্রায় সবকটি দেশে পালিত হয় মে দিবস। মিছিল, সভা, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হয় মে দিবস।
দেহ ব্যবসায় বিরতি, মে ডে-তে বন্ধ সোনাগাছি
এই দিনকে সম্মান জানিয়েই, ১লা মে, শ্রমিক দিবসে ছুটি থাকে বিশ্বের বহু দেশেই। কলকাতার যৌন পল্লি সোনাগাছিও বন্ধ থাকবে পয়লা মে। শ্রমিকের মর্যাদার দাবিতে এই পদক্ষেপ সোনাগাছির দেহব্যবসায়ীদের। তাঁদের কথায়, যারাই শ্রম বেচেন, তাঁরাই শ্রমিক, কেউ মগজ বেচেন, তাঁরা বেচেন দৈহিক শ্রম, অতএব শ্রমিকের মর্যাদা চাই, এই-ই তাঁদের দাবি।
সেই দাবিতেই সকল যৌনকর্মীদের পথে নামার ডাক দিয়েছে দুর্বার মহিলা সমন্বয় কমিটি। ৩০ এপ্রিল বিকেল ৪টে থেকে একটি জমায়েতের ডাক দিয়েছেন দুর্বার কর্মীরা। শহরের বিভিন্ন অঞ্চলের যৌনকর্মীরা তাঁদের দাবি, দাওয়া, সম্মান চেয়ে পথে নামবেন। তাঁদের স্লোগান, “গতর খাটিয়ে খাই। শ্রমিকের অধিকার চাই।” শ্রমিকের সরকারি মর্যাদা চেয়ে লড়বেন তাঁরা।
কোন দাবিকে সামনে রেখে লড়বে দুর্বার?
দুর্বার সংগঠনের দাবি, যৌনকর্মীদের রেশন কার্ড, ভোটার কার্ডে তাঁদের ঠিকানার উল্লেখ বাধ্যতামূলক করা যাবে না, কারণ ঠিকানা-সোনাগাছি, এটুকু শুনলে, দেখলেই শত শত প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয় যৌনকর্মীদের। তাই চাই, ঠিকানা গোপন রাখার অধিকারও। আরও দাবি, দেহব্যবসার ক্ষেত্রে উভয়পক্ষের সম্মতি থাকলে পুলিশের অনুপ্রবেশ বরদাস্ত করা হবে না কেউ নিজের সম্মতিতে দেহ ব্যবসায় নামলে, পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে পারবে না। এ সব অধিকার সুনিশ্চিত করেছে দেশের শীর্ষ আদালত, কিন্তু আইনি অধিকার তো শুধু খাতায় কলমে। বাস্তবেও সেই অধিকার সুনিশ্চিত হোক, দাবি দেহ ব্যবসায়ীদের।
এই মুহূর্তে শহরের যৌনকর্মীরা যে সমস্ত শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত তাদের কোনও সরকারি স্বীকৃতি নেই। নেই রেজিস্ট্রেশন নম্বর। নিজেদের শ্রমিক সংগঠনের জন্য সরকারি রেজিস্ট্রেশন নম্বরের দাবি রেখেছেন দেহ ব্যবসায়ীরা।
আসলে এই দিন অধিকার বুঝে নেওয়ার। শ্রমিকদের শোষণ, বঞ্চনার বিরুদ্ধে আওয়াজ তোলার। ইতিহাস অন্তত তাই বলছে। ১৮৮৬ সালের পর থেকে আজও ১ মে দেশ-কালভেদে শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের এক প্রতিবাদস্বরূপ হয়ে রয়ে গিয়েছে। বর্তমানে বিশ্বের নানা দেশে পালিত হয় মে দিবস। মিছিল, সভা, বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পালিত হয় এই বিশেষ দিন।
Dilip Ghosh in Election: 'হামলার বদলে হামলা হবে', ফের বিতর্কিত মন্তব্য দিলীপ ঘোষের
ভারতে মে ডে:
ভারতে প্রথম মে দিবস পালিত হয় ১৯২৩ সালের পয়লা মে। হিন্দুস্তান লেবার কিষাণ পার্টির ডাকে মাদ্রাজে প্রথম মে দিবসের আয়োজন করা হয়। বর্তমানে ভারতের প্রায় সবকটি শ্রমিক সংগঠনই মে দিবস পালন করে থাকে।