সর্দি, গলা ব্যাথা, জ্বর...এসব কোভিডের লক্ষণ হতেই পারে । তবে, এই ধরনের লক্ষণ দেখা যায় ইনফ্লুয়েঞ্জার ক্ষেত্রেও । শুধু তাই নয়, দূষণের ফলে বুকে সংক্রমণ ছড়ালে কোভিডের মতোই এরকম লক্ষণ দেখা দিতে পারে আপনার শরীরে । সম্প্রতি, আতঙ্ক ছড়়াচ্ছে কোভিডের নতুন ভ্যারিয়ান্ট জেএনওয়ান । ফের দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে । কোভিডের এই ভ্যারিয়্যান্টের লক্ষণও সেই সেই সর্দি কাশি । তাই আপনাদের শরীরে লক্ষণগুলি কোভিডের না সাধারণ ঠান্ডা লাগার নাকি কোনও ফ্লু -এর ? তা জানতে একমাত্র উপায় পরীক্ষা ।
নিউ দিল্লির ম্যাক্স সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ইন্টারনাল মেডিসিনের ডিরেক্টর ডাঃ রোমেল টিকু ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন, বায়ু দূষণ এবং ঠান্ডার কারণে দিল্লিতে ফ্লু, কাশি, গলা ব্যথা এবং অন্যান্য ভাইরাস ঘটিত রোগ দেখা যাচ্ছে মানুষের শরীরে । সেক্ষেত্রে লক্ষণগুলিকে অনেকে কোভিড ভেবে ভুলও করছেন । তাই শরীরে সেরকম কোনও লক্ষ্মণ থাকলে, দেরি না করে আরটি পিসিআর পরীক্ষা করা উচিত বলে মনে করেন তিনি । আর নতুন কোভিড ভ্যারিয়্যান্টেরর ক্ষেত্রে যত বেশি সম্ভব টেস্ট করাতে হবে । বিমানবন্দরে থার্নাল স্ক্রিনিং শুরু করা উচিৎ । যদিও করোনা ভাইরাসের এমন কিছু উপসর্গ আছে, যা আজও অজানা । তাই ভাইরাসের চরিত্রটা কী, নতুন ভ্যারিয়্যান্টের আক্রান্ত কি না তা জানতে কোভিড টেস্ট করাতে হবে আর জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য নমুনা পাঠাতে হবে । তবেই সাধারণ, ঠান্ডা লাগা, ফ্লুয়ের সঙ্গে কোভিডের তফাৎ করা যাবে । ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে কোভিড সম্পর্কে আরও খুঁটিনাটি তথ্য দিয়েছেন ডাঃ রোমেল টিকু । জেনে নিন
কোভিডের নয়া ভ্যারিয়্যান্টের উপসর্গ
আলাদ কোনও উপসর্গ নেই । কোভিডের যা লক্ষণ, এই ভ্যারিয়্যান্টেও সেই একই ধরনের উপসর্গ । এখন সাধারণত লক্ষণগুলি হল আপার রেসপিরেটারি সিস্টেমে অস্বস্তি, জ্বর, মায়ালজিয়া (অর্থাৎ হাতে-পায়ে-কাঁধে তীব্র ব্যথা ) ক্লান্তি, হাঁচি, গলা ব্যথা এবং কাশি, ডায়রিয়া বা গ্যাস্ট্রো-ইনটেস্টাইনাল সমস্যা ইত্যাদি ।
কোভিডের নতুন স্ট্রেন নিয়ে উদ্বেগের কারণ আছে ?
ডাঃ রোমেল টিকু জানিয়েছেন, ফ্লু, ভাইরাসঘটিত রোগ সাধারণত শীতকালেই বৃদ্ধি পায় । তবে আমরা বলতে পারি না যে আগে যা ঘটেছে তা আবার ঘটবে। সব মিলিয়ে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে । এটা ঠিক যে, নতুন ভ্যারিয়্যান্ট দ্রুত ছড়াচ্ছে, তবে, ভ্যাকসিন, ইমিউনিটি আমাদের রক্ষাকবচ । যা আমাদের হাসপাতালে ভর্তি এবং নিউমোনিয়ার মতো অন্যান্য জটিলতা থেকে রক্ষা করতে পারে।
উপসর্গের সূত্রপাত হলে কী ওষুধ খেতে হবে?
ডাক্তার জানিয়েছেন, প্যারাসিটামল সবচেয়ে নিরাপদ । তবে তা সাবধানে, সতর্কভাবে ব্যবহার করতে হবে । কারণ এই ওষুধ এটি গ্যাস্ট্রাইটিস ও কিডনির সমস্যা তৈরি করতে পারে । বয়স্ক এবং ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে সবথেকে সতর্ক থাকতে হবে ।
সাধারণ সর্দি-কাশির উপসর্গ থাকলেও কি প্রত্যেকের পরীক্ষা করা উচিত?
আপনার শরীরে যে লক্ষণগুলি রয়েছে, তা যদি খুব সামান্য হয়, আপনি যদি সুস্থবোধ করেন, তাহলে পরীক্ষার বিষয়টি এড়িয়ে যেতে পারেন । কিন্তু গুরুতর অসুস্থ হলে দেরি না করে টেস্টগুলি করিয়ে নিতে হবে । বিশেষ করে আপনার বয়স যদি ষাটের উপরে হয় কিংবা আপনি যদি গর্ভবতী হন, তাহলে অবশ্যই পরীক্ষা করিয়ে নেবেন ।
কোন পর্যায়ে ডাক্তার দেখাবেন ?
ডাঃ রোমেল টিকু জানিয়েছেন, উপসর্গ দুই দিনের বেশি থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে । যদি, তৃতীয় দিনেও আপনার ১০০-র বেশি জ্বর, গা-হাত পা ব্যথা, কাশি থাকে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে ।