Social Media Ban: বয়স ১৬-এর কম? আর ব্যবহার করা যাবে না সোশ্যাল মিডিয়া

Updated : Nov 15, 2024 12:32
|
Editorji News Desk

Social Media Ban: মোবাইল ফোন, আমাদের জীবনের সঙ্গে মিশে যাওয়া এক যন্ত্রের নাম। আমাদের সার্বক্ষণিক সঙ্গী। আধুনিক জীবনের নানা হিসেব পালটে দিয়েছে মুঠোফোন। নানা কাজে অকাজে মুঠো ফোন ব্যবহার করতে করতে কখন যেন ওই এতটুকু যন্ত্রটাই চালাতে শুরু করেছে আমাদের। বুঝতেই পারিনি। তবে মোবাইল ফোনের ওপর আমরা সবাই-ই কম বেশি নির্ভরশীল, কিন্তু কারোর কারোর ক্ষেত্রে সেটা আসক্তির পর্যায়ে। বিশেষ করে শিশু-কিশোরদের আসক্তির পর্যায় ভয়ানক হয়ে উঠেছে। 

এইবার সেই নিয়ে নড়েচড়ে বসল অস্ট্রেলিয়ার প্রশাসন। সে দেশে, ১৬ বছরের নীচে যাদের বয়স, তাঁদের সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারি করল সেই দেশ। অর্থাৎ যাদের বয়স ১৬ হয়নি, তারা এখন থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট খুলতেই পারবে না অস্ট্রেলিয়ায়। তবে ১৬ বছরের কম বয়সী যাদের ইতিমধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা কীভাবে লাগু হবে, তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে। 

মোবাইল ফোন মনঃসংযোগ নষ্ট করছে পড়ুয়াদের। এবার স্কুলে পুরোপুরি নিষিদ্ধ হচ্ছে মোবাইল ফোনের ব্যবহার। নয়া নিয়ম চালু করতে চলেছে ইংল্যান্ডের সরকার। 

সারা দিন ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, স্মার্ট ফোনে আটকে থাকা শৈশবের রঙটা বদলে যেতে শুরু করেছে বেশ কিছু দিন ধরেই। সাম্প্রতিক অন্য আরেকটি সমীক্ষা বলছে, শুধু শৈশবের সংজ্ঞা নয়, বদলে যাচ্ছে শিশু-কিশোরদের মস্তিষ্কের গঠনও। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই ক্ষয়ে যেতে শুরু করেছে মস্তিষ্কের কর্টেক্স।

ইন্টারনেটের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার টিনএজারদের মস্তিষ্কের গঠন বদলে দিচ্ছে! বিশেষ করে মস্তিষ্কের যে অংশ 'অ্যাকটিভ থিংকিং' বা সক্রিয় চিন্তা করে, বদল হচ্ছে সেখানেই। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের গবেষণা এই মারাত্মক তথ্য জানিয়েছে৷ এই বদলের ফলে টিনএজাররা আরও বেশি করে ইন্টারনেটের প্রতি আসক্ত হচ্ছে। তার সঙ্গেই প্রভাবিত হচ্ছে তাদের বৌদ্ধিক ক্ষমতা, শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য।

ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের মাস্টার্সের ছাত্র ম্যাক্স চাং বলেছেন, "বয়ঃসন্ধি হল এমন এক সময়, যখন মানুষ নানাবিধ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায়। তার ব্যক্তিত্ব বদলায়, বদলায় শারীরিক ও মানসিক গঠন। এই সময়ে ইন্টারনেটের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার তাদের মস্তিষ্কে প্রভাব ফেলে।"

ইন্টারনেটে আসক্ত ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সী ২৩৭ জনের মস্তিষ্কে ফাংশনাল রেসোন্যান্স ইমেজিং স্ক্যান করা হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, ইন্টারনেট ব্যবহার কিছুতেই কমাতে পারছে না ওই টিনএজারদের মস্তিষ্ক। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, ড্রাগ বা জুয়ায় আসক্তদের তুলনায় এর প্রভাব কিছু কম নয়।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথ-এর তত্ত্বাবধানে প্রায় ১১ হাজার শিশু-কিশোরকে নিয়ে অন্য একটি সমীক্ষার প্রাথমিক ফলাফল বলছে, দিনে সাত ঘণ্টা কিমবা তার বেশি সময় মুঠোফোন, ট্যাবলেট কিমবা ল্যাপটপে কাটায় যারা তাদের মস্তিষ্কের কর্টেক্স সময়ের আগেই ক্ষয়ে যেতে শুরু করেছে।

তবে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথ -এ গবেষণারত চিকিৎসক ডাউলিং বলছেন, সমীক্ষার চূড়ান্ত ফলাফল না আসা পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না ডিজিটাল দুনিয়ায় কাটানো সময়ের সঙ্গে মস্তিষ্কের গঠনগত পরিবর্তনের সম্পর্ক ঠিক কতটা? আবার কর্টেক্সের ক্ষয়ে যাওয়া অথবা সরু হয়ে আসাও আদৌ শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক কিনা, অথবা কতটা ক্ষতিকারক, সে ব্যাপারেও সুনিশ্চিত ভাবে বলা যাচ্ছে না কিছুই।

প্রসঙ্গত, মাস কয়েক আগেই ‘অ্যাক্টিভ হেলদি কিডস গ্লোবাল অ্যালায়েন্স’-এর রিপোর্ট প্রকাশ পেয়েছে। রিপোর্ট বলছে, ডিজিটাল যাপন ক্রমশ বদলে দিচ্ছে শৈশবের সংজ্ঞা। সার্বিক জীবনযাপনে নগরায়ণের প্রভাব যত গাঢ় হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মনের এবং শরীরের স্বাস্থ্য।

মস্তিস্কের গঠন শুধু যে আবার কৈশোরেই বদলে যাচ্ছে, এবং মোবাইলের অধিক ব্যবহারেই বদলাচ্ছে, তেমনটা নয়। ক্যালিফোর্নিয়া ভিত্তিক ন্যাচারাল হিস্ট্রি মিউজিয়ামের বিজ্ঞানী জেফ মরগান স্টিবলের গবেষণা বলছে,  পরিবর্তনশীল জলবায়ু একটু একটু করে বদলে দিচ্ছে মগজের গঠন। সে কারণে মানুষের মস্তিষ্ক অনেকটা সংকুচিত হয়ে আসছে। আর এর প্রভাব পড়ছে মানুষের আচরণেও। এমনকি লোপ পাচ্ছে স্মৃতি শক্তিও পেতে পারে।

প্রযুক্তির যথেচ্ছ ব্যবহার ভাল নয়, সে কথা বহু কাল আগে থেকেই বলে আসছেন বিজ্ঞানীরা। কিন্তু আম জনতার সেদিকে হুঁশ নেই! সম্প্রতি জানা গেল, মোবাইল ফোনের জনক নিজেই মোবাইল থেকে দূরে থাকেন। অথচ আমাদের সারাদিনে গড়ে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা কেটে যাচ্ছে এই যন্ত্র হাতেই। 

মোবাইল ফোনের আবিষ্কর্তা ৯৩ বছরের মার্টিন কুপার বলছেন স্মার্টফোন ব্যবহার কমিয়ে মানুষের উচিত জীবন উপভোগ করা। একটি টেলিভিশন প্রোগ্রামে মার্টিন জানিয়েছেন সারাদিনে খুব কম সময় ফোন ব্যবহার করেন তিনি। 

 আচ্ছা, আপনি কি জানেন বিশ্বের কোন দেশের মানুষ সবচেয়ে বেশি আসক্ত সোস্যাল মিডিয়ায়? দৈনিক কত ঘণ্টা তাঁরা কাটান সমাজমাধ্যমে? ২০২৪ সালের তথ্য বলছে, দিনে সবচেয়ে বেশি সময় সমাজমাধ্যমে কাটান ব্রাজিলের অধিবাসীরা। প্রতিদিন গড়ে ৩ ঘণ্টা ৪৯ মিনিট। তুলনায় অনেকটাই কম মার্কিনদের সমাজমাধ্যমের আসক্তি৷ গড়ে দৈনিক ২ ঘণ্টা ১৬ মিনিট।

বিশ্বের সবচেয়ে বেশি মানুষ ব্যবহার করেন গুগল। তারপরেই জনপ্রিয় ইউটিউব। তারপরেই ফেসবুক। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ফেসবুক ব্যবহারকারী আছেন ভারতে। ৩১৪.৬ মিলিয়ন! অনেক পিছনে দ্বিতীয় স্থানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ সেখানে ফেসবুক ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৭৫ মিলিয়ন।

গত দেড় দশকে আমাদের জীবনের অনেকখানি দখল করে নিয়েছে সোস্যাল মিডিয়া। এই স্বেচ্ছাবন্দিত্বের ভালো খারাপ দুটি দিকই আছে৷ তবে সম্ভবত আশু মুক্তির সম্ভাবনা নেই।

ভারতের মতো বিপুল জনসংখ্যার দেশে অস্ট্রেলিয়ার মতো ডিজিটাল নিষেধাজ্ঞা জারি, সম্ভব নয় বলেই বহু সমাজ বিশ্লেষকের মত। বরং এ দেশে ডিজিটাল সাক্ষরতার প্রয়োজনীয়তা বেশি বলেই মনে করছেন অনেকে। 

 

Social Media

Recommended For You

editorji | লাইফস্টাইল

Purulia : বসন্তে শিমুল-পলাশের দেশ, ঘুরে আসুন লেক-ঝর্ণা-পাহাড় ঘেরা পুরুলিয়ায়

editorji | লাইফস্টাইল

Mahashivaratri 2025 : ১৪৯ বছর পর এই মহাশিবরাত্রি, কেরিয়ারে উন্নতি হবে কোন রাশির? দেখে নিন

editorji | লাইফস্টাইল

Exam Preparation: পরীক্ষার সিজন, 'ব্রেক লার্নিং মেথড' কাজে লাগালেই হাতেনাতে ফল ! জানুন ম্যাজিক টোটকা

editorji | লাইফস্টাইল

International Mother Language Day: 'কেন কী' থেকে 'কান্না করলাম'... অদ্ভুত বাংলার দাপট সোশ্যাল মিডিয়ায়

editorji | লাইফস্টাইল

Valentine's Day-Gen Z style: 'বেঞ্চিং' থেকে 'স্লো ফেড'! উফফ...ডেটিং কী কঠিন!