দুর্গা পুজো-কালী পুজো সব শেষ... সেই একঘেয়ে ঘটনাবিহীন জীবনে ফেরার পালা। এদিকে বাতাসে হেমন্তের হালকা হিমেল ভাব, সব মিলিয়ে এই বিষণ্ণতা কাটাতে একটু বেরিয়ে পড়া যায় না? সপ্তাহান্তে খুব দূরে কোথাও ঘুরতে গেলে যাওয়া আসায় সময় যাবে অনেকটা, সফরের পর থাকবে ক্লান্তির রেশ। তার চেয়ে বরং রইল কাছে পিঠে ঘোরার কিছু ঠিকানা
ম্যাকলাস্কিগঞ্জ
পায়ে পায়ে হেঁটে দেখতে ভালো লাগে ঝাড়খণ্ডের এই গ্রাম। সাহেবদের পুরনো বাংলোগুলো এখন পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে আছে। নিরিবিলি জঙ্গলের রাস্তা ধরে হাঁটতে হাঁটতে হারিয়ে যাবেন কোন অজানায়। একটু দূরেই রয়েছে ডেগাডেগি নদী ও কুমারপাত্রা নদী। হেসালাং ওয়াচ টাওয়ারে উঠলে গোটা ম্যাকলাস্কিগঞ্জ দেখা যায় ওপর থেকে। এরিয়াল ভিউ দেখতে পাওয়া যায়। দেখুন কান্তি ফলস। কাছেই দুল্লি গ্রামে একসঙ্গে রয়েছে মন্দির-মসজিদ-গুরুদ্বার-গির্জা।ম্যাকলস্কিগঞ্জের নাট্টা পাহাড় থেকে সূর্যাস্তের শোভা অসাধারণ।
কীভাবে যাবেন:
হাওড়া শক্তিপুঞ্জ এক্সপ্রেস সোজা ম্যাকলাস্কিগঞ্জে নামায়। তবে সেটা রাত ১২টার পরে। ম্যাকলাস্কিগঞ্জে থাকার জায়গা হাতে গোনা। গোর্ডন গেস্ট হাউজ, রানাস কান্ট্রি কটেজ, ম্য়াকলাস্কিগঞ্জ গভরমেন্ট গেস্ট হাউজ, ড্রিম ডেস্টিনেশন, রাজা বাংলো-তে থাকতে পারেন।
শিমুলতলা
আগের মতো সারি সারি শিমুল গাছ আর নেই। তবে ছোটখাটো জঙ্গল, ইউক্যালিপ্টাসের সারি, চারিদিকে ছোট ছোট পাহাড় আর সবুজের সমারোহ এখনও একইরকম আছে। আর সঙ্গে রয়েছে অজস্র কুঠি বাড়ি বা ভিলা। রেলস্টেশন থেকে বেরিয়ে পড়তেই ডাইনে বাঁয়ে স্টেশন রোডে অতীতে গড়ে উঠেছিল স্বাস্থ্য গড়ার আনন্দ নিকেতন। টিলা টিলা শিমুলতলায় যে কয়েকটা ভিলা বা কুঠিবাড়ি অবশিষ্ট, তা সারিয়েই চলছে ‘হোম স্টে’। ভূতুড়ে কুঠিতে রাত কাটানোর সুযোগ হাতছাড়া করবেন না পারেন পাঠক।
বাঁদিকে সে কালের হাউজ অফ লর্ডস আর ডানদিকে হাউজ অফ কমন্স। চারপাশ ঘিরে দিকচক্রবাল রেখা ঢেকে প্রহরী হয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে রয়েছে পাহাড়শ্রেণি।
হাওড়া-দিল্লি জনতা এক্সপ্রেস মধুপুর এবং শিমুলতলায় যায়। উদ্যান আভা এক্সপ্রেসও শিমূলতলায় থামে।
বেতলা অভয়ারণ্য
মনটা একটু জঙ্গল জঙ্গল করলে যেতে পারেন ঝাড়খণ্ডের বেতলা ফরেস্টে। জঙ্গলের রাস্তায় ঘুরতে ঘুরতে বাঘের দেখা মিলতে পারে। রয়েছে হাতিও।। একশো চুয়াত্তর ধরনের পাখি দেখা যায় এই অভয়ারণ্যে। প্যারাডাইস, ফ্লাই ক্যাচার সহ একাধিক নাম না জানা পাখি। বেতলা যেতে হলে হওড়া এবং শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে ডাল্টনগঞ্জে নামতে হবে। সেখান থেকে গাড়িতে চলে আসা যাবে বেতলা । থাকতে পারেন ফরেস্ট ডিপার্টমেন্টের বনবাংলোয়।