পাহাড়ের রাজনীতিতে উত্থান হল এক নতুন নক্ষত্রের। বদলে গেল সব সমীকরণ। দার্জিলিং পুরসভার (Darjeeling) দখল নিল সদ্যোজাত রাজনৈতিক দল হামরো পার্টি। নতুন এই শক্তিতে স্বাগত জানালেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee), গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার সুপ্রিমো বিমল গুরুং (Bimal Gurung)।
কিছুদিন আগে পর্যন্ত জিএনএলএফ (GNLF) করতেন অজয় এডোয়ার্ডস (Ajoy Edwards)। তাঁর রেস্তোঁরা কাম কাফে গ্লেনারিজ দার্জিলিংয়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ আকর্ষণ। কয়েক মাস আগে জিএনএলএফ ছেড়ে নতুন দল হামরো পার্টি তৈরি করেন অজয়।
অপ্রত্যাশিতভাবে বিজেপি, তৃণমূল, মোর্চা, জিএনএলএফ, কংগ্রেস সহ পাহাড়ের সবকটি রাজনৈতিক দলকে পরাজিত করেছে অজয় এডওয়ার্ডের 'হামরো পার্টি'। ৩২ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ১৮ টি ওয়ার্ডে একক সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতা দখল করল তারা। সদ্যোজাত দলটির কাছে পরাজিত হয়েছে অনিত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা, বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা এবং মন ঘিসিংয়ের জিএনএলএফ এবং তৃণমূল, বিজেপি। পাহাড়ের রাজনীতিতে এমন ফলের এই প্রত্যাশা অনেকেই করেনি।
অজয় নিজে হারলেও বোর্ড গঠন করবে তাঁর দল। ফলপ্রকাশের পর তিনি বলেন, "পাহাড়ে আর বন্ধ্যা বনধের রাজনীতি নয়, কোনও দুর্নীতি নয়, গা জোয়ারি নয়। নতুন পথে হাঁটবে দার্জিলিং।" আগামী পাহাড়ের অন্যত্রও তাঁরা ভোটে লড়বেন বলে জানিয়েছেন অজয়।
দার্জিলিংয়ের ৩২ টি ওয়ার্ডের হামরো পার্টি ১৮ টি আসন পেয়েছে। অন্যদিকে, অনিত থাপার দল ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা আটটি, গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা চারটি ও তৃণমূল কংগ্রেস দুটি ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে। দশটি আসনে লড়ে তৃণমূল কংগ্রেসের ভোট ৩৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। গত পুর নির্বাচনে একটি মাত্র ওয়ার্ড পেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। এবার ৫ ও ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয় তারা। অন্যদিকে, বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ২২, ২৭, ২৮ ও ২৯ নম্বর ওয়ার্ডে জয়ী হয়েছে। অনিত থাপার দল ১, ৩, ১৭, ২১, ২৩, ২৪, ২৬ ও ৩২ নম্বর ওয়ার্ডে জয় লাভ করেছে। বিজেপির সঙ্গে জোট করেও খাতাই খুলতে পারেনি জিএনএলএফ।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: 'জয় মানে দায়িত্ব বাড়িয়ে দেওয়া,' জয়ী প্রার্থীদের বিশেষ বার্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের
হামরো পার্টিকে অভিনন্দন জানিয়ে বিমল গুরুং বলেন, "পাহাড়ের তরুণ প্রজন্ম ওঁদের ভোট দিয়েছেন। শুভকামনা রইল।" মমতা বলেন, "পাহাড়ে শান্তিপূর্ণ ভোর হয়েছে। যে ৫টি দল লড়াই করেছে, সকলের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক রয়েছে।"