পার্থ চট্টোপাধ্যায়-অর্পিতা মুখোপাধ্যায় দুর্নীতি রহস্যে নয়া মোড়। প্রাক্তন মন্ত্রী-ঘনিষ্ঠ অর্পিতার দু’টি ফ্ল্যাটে বিপুল অঙ্কের টাকা পাওয়ার ঘটনায় নড়ে বসেছে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থাগুলিও। বাংলাদেশে পার্থের প্রভাব বলয়কে খতিয়ে দেখে পশ্চিমবঙ্গের এই প্রাক্তন মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ কয়েক জনকে বাংলাদেশের গোয়েন্দারা চিহ্নিত করেছে, যাঁরা তাঁর স্বার্থে কাজ করেছেন বলে মনে করা হচ্ছে। এই তালিকায় যেমন একজন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এবং শেখ হাসিনা মন্ত্রিসভার এক সদস্য রয়েছেন, রয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর ‘কাছের লোক’ বলে পরিচয় দেওয়া প্রাক্তন এক সেনাকর্তাও।
জানা গিয়েছে, পার্থের বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের ফ্ল্যাটে প্রথম দফায় উদ্ধার হওয়া টাকার যে ছবি প্রকাশিত হয়েছিল, তাতেই ‘বাংলাদেশ যোগ’-এর বিষয়টি তাঁদের নজরে আসে। ডাঁই করা নোটের মধ্যে একটি সাদা ব্যাগ ছিল, যার গায়ে কালো রঙে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি আঁকা ছিল। টাকা যে ভাবে শক্তপোক্ত খামে ভরে ‘স্কচ টেপ’ দিয়ে প্যাক করা ছিল, তা যে সচরাচর হাওয়ালায় পাচারের জন্য করা হয়, সেটাও গোয়েন্দারা বুঝেছেন। বস্তুত প্রথম দিন থেকেই পার্থর বাংলাদেশ যোগের তদন্ত শুরু করে দেন সে দেশের গোয়েন্দারা।
আরও পড়ুন- Tet Scam Update : ক্য়ামাক স্ট্রিটে রাতভর ধরণায় টেট উত্তীর্ণরা, অভিষেকের দফতরের সামনে অবস্থান
উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে আসার কথা। প্রধানত দিল্লিতে তাঁর কর্মসূচি থাকলেও কলকাতার বেশ কয়েকটি সংগঠন একই সফরে কলকাতা ঘুরে যাওয়ার জন্য তাঁকে আমন্ত্রণ জানিয়ে রেখেছে। তার আগে পার্থর এই কেলেঙ্কারির বাংলাদেশ যোগ কতটা গভীরে, সেটিও দেখে নিতে চান ওপার বাংলার গোয়েন্দারা।
ইডি-র সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্থের টাকার একটা অংশ হাওয়ালার মাধ্যমে কয়েক দফায় বাংলাদেশে গিয়েছে বলে ইঙ্গিত মিলেছে। সেই টাকার একাংশ দিয়ে বাংলাদেশে বেনামে জমি-বাড়ি কেনা হয়েছে বলেও তাঁরা সূত্র পাচ্ছেন। বাকি অংশ তৃতীয় কোনও দেশে চালান হতে পারে। এ কাজে কলকাতার দু’টি ব্যবসায়িক সংস্থার যোগ প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে। ইডি-র দাবি, এই দুই সংস্থা পার্থের অর্থ পাচারে যুক্ত। একটি তৈরি পোশাকের কারবারি, অন্যটি শিক্ষার ব্যবসায় যুক্ত। তৈরি পোশাকের কারবারি সংস্থাটি দু’দেশেই ব্যবসা করে। শিক্ষার ব্যবসায়ে যুক্ত সংস্থাটিও বাংলাদেশে ইঞ্জিনিয়ারিং ও কারিগরি কলেজ এবং ইংরেজি মিডিয়াম স্কুল খুলতে আগ্রহী।