উৎসব মানেই সাম্প্রদায়িক-সম্প্রীতির মিলন। সে দুর্গা পুজো হোক কিংবা ঈদ অথবা বড়দিন। একে অপরের উৎসবে সামিল হয়ে আনন্দ ভাগ করে নেওয়াই যেন বাংলার রীতি। দীর্ঘ দু'বছর করোনার কারণে সব উৎসবেই ভাঁটা পড়েছিল। এই বছর করোনা পরিস্থিতি কাটতেই পুরনো ছন্দে ফিরেছে বাঙালি। মহা ধুমধাম করে পালিত হচ্ছে বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। আর এই উৎসবের মরশুমে কাজী নজরুল ইসলামের 'আমরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান', যেন এই মন্ত্রকে পাথেয় করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির নয়া নজির দেখা গেল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ঘাটাল পৌরসভার ১৩ পল্লীর দুর্গোৎসবে।
এই ক্লাবের দুর্গা পুজোর আয়োজন করেছে হিন্দু মুসলিম দুই সম্প্রদায়ের মানুষ। এই বছর ২৭ তম বর্ষে পদার্পন করছে এই পুজো। এবছরে ক্লাবের থিম তিরুপতি বালাজি মন্দির। এই মন্দিরের আদলে মণ্ডপসজ্জা থেকে প্রতিমা সবৈ বানানো হয়েছে।
ঘাটালের এই ১৩ পল্লীর পুজোর আয়োজনের সমস্ত কাজে বরাবরই সাহায্য করেন এলাকার মুসলমান সম্প্রদায়ের বেশ কয়েকজন যুবক। এই বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পুজোর মণ্ডপসজ্জা থেকে শুরু করে কুমোরটুলি থেকে প্রতিমা নিয়ে আসা। এমনকি পুজোর সময়ে সবরকম ভাবে সাহায্য করেন তাঁরা। পুজো শেষে প্রতিমা বিসর্জনেও দেখতে পাওয়া যায় সেখ মইদুল আলিদের। শুধুমাত্র সাহায্যই নয় এই পুজো কমিটির কোষাধ্যক্ষের দায়িত্বভারও দেওয়া হয়েছে খোদ মইদুল আলির কাঁধেই।
কেন তাঁরা এই দুর্গা পুজোয় অংশ নেন? তাঁদের কথায়,পশ্চিমবঙ্গে হিন্দু-মুসলমানে কোনও ভেদাভেদ নেই। সবাই মানুষ। এখানে সবাই মনুষ্য ধর্ম পালন করে। আর তাই তাঁরা হাতে হাত লাগিয়ে প্রতিবছর দুর্গা পুজোর আয়োজন করেন।