তিনি যে এত সহজে ধরা দেওয়ার বান্দা নন, তা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন বনকর্মীরা। ওড়িশার রয়্যাল বেঙ্গল বাঘিনী ‘জিনাত’। দীর্ঘ ৯ দিন নাকে দড়ি দিয়ে ঘুরিয়েছে সে। তাঁকে বন্দি করতে হিমসিম খেতে হয়েছে বন দফতরকে। গত ১২ ডিসেম্বর থেকে জঙ্গলমহল এলাকায় সে ঢুকে পড়ে। তারপর থেকে এলাকাবাসী যেন কেবল তাঁরই গর্জন শুনে চলেছে। ওড়িশার সিমলিপাল থেকে দলছুট হয়ে বাংলায় ঢুকে পড়েছিল জিনাত। তারপর থেকে তাঁর ‘মুড’ বুঝতেই লেগে গিয়েছে দিনের পর দিন।
দফায় দফায় চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হয়েছিল বনদফতর। কিন্তু, রবিবার একেবারে আদা জল খেয়ে মাঠে নেমেছিল তাঁরা। এদিকে ওড়িশা থেকে দলছুট হয়ে ঢুকে তখন বেঙ্গলট্যুরে ব্যস্ত জিনাত। কখনও ঝাড়গ্রাম, পুরুলিয়া কখনও বা বাঁকুড়া। এদিকে তাঁর আনাগোনায় এলাকা একেবারে থমথমে হয়েছিল। ভয়ে স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল পড়ুয়ারা। শনিবার তাকে টার্গেট করে ট্রাঙ্কুলাইজার দেওয়া হলেও, তা জিনাতের গায়ে লেগেছিল কিনা তা নিয়ে সংশয় ছিল। এরপর বদল আনা হয় ছকে।
অবশেষে রবিবার বাঁকুড়ার গোসাঁইদিঘিতে বাগে আনা গিয়েছে বাঘিনী জিনাতকে। বিকেল ৩.৫৮ মিনিটে চতুর্থ বার চেষ্টা করে তাঁকে ঘুম পাড়ানো গিয়েছে। গ্রিন করিডর করে রবিবার রাতেই বাঁকুড়া থেকে আলিপুর চিড়িয়াখানায় নিয়ে আসা হয় জিনাতকে। ১২ টা ১০ মিনিট নাগাদ কনভয় করে বাঘিনীকে নিয়ে আসা হয় আলিপুর চিড়িয়াখানার পশু হাসপাতালে।
রবিবারের মহাযজ্ঞে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন বাঁকুড়ার ডিএম এবং এসপি। ড্রোন উড়িয়ে জিনাতের অবস্থান দেখে নেওয়া হয়। প্রথমে ১০বিঘা জমি জাল দিয়ে ঘেরা হয় পরে তা কমিয়ে ৩ বিঘা কমিয়ে আনা হয়। জাল টপকে সে যাতে না পালতে পারে তার জন্য আনা হয় জলের ট্যাঙ্কার। অবশেষে চার নম্বর গুলিতে ঘুমে ঢুলে পড়ে জিনাত। 'বেঙ্গল সাফারি' শেষে, এবার তাঁর ডেরায় ফেরার পালা। আলিপুর থেকে সুস্থ হয়ে সোজা সে ফিরবে সিমলিপালের জঙ্গলে..