আর জি কর মামলার নিষ্পত্তি এখনও হয়নি । এরই মধ্যে কামরাহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসক ও নার্সদের মারধরের অভিযোগ উঠেছে মৃত রোগীর পরিবারের বিরুদ্ধে । ডাক্তারদের উপর হামলার ঘটনায় আবারও একবার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে । ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার রাত থেকেই উত্তাল হাসপাতাল চত্বর । ঘটনার প্রতিবাদে ও নিরাপত্তার দাবিতে কর্মবিরতি করছেন হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা । আংশিক কর্মবিরতিতে রয়েছেন হাসপাতালের নার্সরা । সুপ্রিম কোর্টের তরফে রাজ্যকে হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা বিষয়টি সুনিশ্চিত করার কথা বলা হলেও, এখনও কোনও পদক্ষেপ করেনি প্রশাসন । এমনই অভিযোগ করছেন জুনিয়র ডাক্তাররা । সাগর দত্ত মেডিক্যালের জুনিয়র চিকিৎসকদের অভিযোগ, মেডিক্যাল কলেজগুলিতে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সিসি ক্যামেরা বসানো নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যে আশ্বাস দিয়েছিল রাজ্য, তা এখনও বাস্তবায়িত হয়নি ।
সাগর দত্তের জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি, ১৭ সেপ্টেম্বর আর জি কর মামলার শুনানিতে রাজ্যের সরকারি হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা বৃদ্ধি নিয়ে বেশ কয়েকটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাজ্য । তার মধ্যে একটা হল সাত থেকে ১৪ দিনের মধ্যে পর্যাপ্ত সিসি ক্যামেরা লাগানো । কিন্তু, ১০-১২ দিন কেটে গেলেও সে কাজ এগোয়নি । জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি, সাগর দত্তে বর্তমানে ১০০ টি সিসি ক্যামেরা রয়েছে । কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছিল, ৩৬০টি সিসি ক্যামেরা লাগানো হবে । কিন্তু, শনিবার পর্যন্ত হাসপাতালে মোট ৪০টি সিসি ক্যামেরা পৌঁছেছে । যদিও তা এখনও চালু করা সম্ভব হয়নি । সেক্ষেত্রে, ১৪ দিনের মধ্যে ৩৬০ টি সিসি ক্যামেরা লাগানো প্রায় অসম্ভব । কেন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে না, সেই বিষয়ে ফের প্রশ্ন তুলেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা ।
শুক্রবার রাতে রোগী মৃত্যুকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় কামারহাটির সাগর দত্ত মেডিক্যাল কলেজ এবং হাসপাতালে। অভিযোগ, রোগী মৃত্যুর কারণে রোগীর পরিবার চিকিৎসকদের উপর হামলা করে । চলে ধাক্কাধাক্কি। সেই সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে গিয়ে আহত হন চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা । রোগীর পরিজনদের অভিযোগ, এদিন শ্বাসকষ্টের সমস্যা নিয়ে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কোনও রকম চিকিৎসা হয়নি। দীর্ঘক্ষণ সেখানে বিনা চিকিৎসায় ফেলে রাখা হয়। আক্রান্ত হাসপাতালের স্বাস্থ্য কর্মীদের অভিযোগ, রোগী মৃত্যুর পরেই রোগীর পরিজনেরা চিকিৎসকদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন, চিকিৎসকদের ধাক্কাধাক্কি করা হয়। তাঁরা এগিয়ে গেলে আহত হন।
ঘটনার পরই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা । কর্মবিরতি শুরু করেন তাঁরা । এরপর বিক্ষোভে সামিল হন নার্সিং স্টাফেরাও । হাসপাতালের সুপার ও অধ্যক্ষে ঘিরে চলে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ । তাঁদের অভিযোগ, মৃত রোগীর পরিবারের তরফে আর জি কর করে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয় নার্সদের ।