রাজ্য বিধানসভায় শোরগোল । এক বিধায়ক মেডিক্যাল বিল জমা দিয়েছেন । তাতে দেখা যাচ্ছে, এক বেসরকারি হাসপাতালে প্রসবকালীন চিকিৎসায় খরচের পরিমাণ ৬ লাখ টাকা ! তার মধ্যে চিকিৎসকের ফি ৪ লাখ টাকা । ভাবতে পারেন ! বিলে অর্থের পরিমাণ দেখে তো বিধানসভা চত্বরে হইচই পড়ে গিয়েছে । দু'টো প্রশ্ন উঠছে । একটা হল প্রসবকালীন চিকিৎসায় বিপুল খরচ ও আরেকটা হল চিকিৎসকদের ফি । জানেন কোন বিধায়কের কথা বলা হচ্ছে ?
কাঞ্চন মল্লিক । উত্তরপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক । কয়েকদিন আগেই বাবা হয়েছেন । ৩ নভেম্বর দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি হাসপাতালে কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছেন শ্রীময়ী চট্টরাজ । বিয়ের একবছর পূর্তির আগেই মা-বাবা হয়েছেন তাঁরা । আর সেই নিয়ে কম জলঘোলাও হয়নি । ট্রোলড হতে হয়েছে । বছর শেষে আবারও বিতর্কে জড়ালেন কাঞ্চন । তাও আবার মেডিক্যাল বিল নিয়ে ।
বিলে ৪ লাখ টাকা চিকিৎসকদের খরচ হিসেবে দেখানো হয়েছে । আর বাকি ২ লাখ টাকা অন্যান্য খরচের খাতায় । সূত্রের খবর, বেসরকারি হাসপাতালে প্যাকেজ হিসেবে চিকিৎসা হলেও, চিকিৎসকদের ফি কি আদৌ ৪ লাখ হতে পারে ? জানা গিয়েছে, ছোট প্রাইভেট হাসপাতালগুলিতে ডাক্তারদের ফি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা হতে পারে আর বড় বেসরকারি হাসাপাতালগুলিতে সর্বোচ্চ ফি হতে পারে দেড় থেকে দুই লাখ । সেখানে কাঞ্চনের মেডিক্যাল বিলে অঙ্কটা অনেকটা বেশি ষ অনেকে তাতে দুর্নীতির গন্ধ পাচ্ছেন । একইসঙ্গে এত পরিমাণ বিলের খরচ আদৌ বিধানসভা দেবে কি না সেই বিষয়ে প্রশ্ন উঠেছে ।
এই বিষয়ে বিধানসভার স্পিকার কী বলছেন ? বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিল ছাড়পত্র দেওয়ার আগে তিনি নিজে সব খতিয়ে দেখেন । সেক্ষেত্রেও তিনি নিজেই সব কাগজপত্র খুঁটিয়ে দেখবেন । তার পর যদি কোনও প্রশ্ন দেখা দেয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ডেকে পাঠিয়ে কথা বলবেন ।
কাঞ্চন মল্লিক জানিয়েছেন, বিলের সপক্ষে সমস্ত রিপোর্ট, তথ্য প্রমাণ রয়েছে। এটা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয় । তিনি এই নিয়ে কথা বলতে চান না ।
শুধু কাঞ্চন নয়, বিধানসভায় বিল কেলেঙ্কারি আগেও ঘটেছে । তৃণমূল সরকারের আমলেই ২০১১ সালে তৎকালীন নারী-শিশু ও সমাজকল্যাণ উন্নয়ন মন্ত্রী সাবিত্রী মিত্র চশমার জন্য প্রায় লক্ষ টাকার বিল জমা দেন । সেই নিয়ে কম বিতর্ক হয়নি । উল্লেখ্য, বিধানসভায় স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিলের কোনও উর্ধ্বসীমা নেই। তবে একমাত্র চশমার বিল তৈরিতে রয়েছে । কিন্তু তা বলে প্রসবকালীন চিকিৎসায় ৬ লাখ, একটু ভাবনার বিষয় বৈকি ।