কুয়াশার চাদর ছিঁড়ে, পাহাড় ঘেরা ঝাউ-পাইনের বনের পাশ দিয়ে ধোঁয়া ওড়াতে ওড়াতে ছুটে যাওয়া টয়ট্রেন- শৈলপুরী দার্জিলিং-এর ঐতিহ্য। কিন্তু গতির তাগিদ, এবং প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে মোকাবিলা করতে করতে খানিক থমকে গিয়েছিল দার্জিলিং-এর ঐতিহ্যবাহী এই টয়ট্রেন। দীর্ঘ চার মাস বন্ধ ছিল নিউ জলপাইগুড়ি (NJP) থেকে দার্জিলিং টয়ট্রেন পরিষেবা। তবে শীত বাংলায় ঢুকতেই, সুখবর…
বঙ্গে এখন ভরপুর শীতের আমেজ। সন্ধে হলেই শিরশিরানি, দুপুরে মিঠে রোদ, আর সকাল ঢাকা ধোঁয়াশা ও কুয়াশায়। দক্ষিণবঙ্গে যখন গুটিগুটি পায়ে শীত সবে ঢুকছে, তখন উত্তরে শীতের কামড় আরও কয়েকগুণ বেশি। এক কথায় এই সময় উত্তর বঙ্গের আবহাওয়া ভারী মনোরম। বছর শেষে এই সময়টা সারা বাংলা থেকে অসংখ্য পর্যটক ঢুঁ মারেন উত্তরবঙ্গে। একটু শীতের পরশ পেতে পর্যটকদের ভিড় দার্জিলিং, কালিম্পং, সিকিম সহ উত্তর পূর্বের সব শৈল শহরে। দীর্ঘ চার মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে রবিবার থেকে ফের গড়াল টয় ট্রেনের চাকা।
রবিবার, ১৭ নভেম্বর থেকে আবার চেনা রুটে, চেনা ছন্দে ছুটল টয় ট্রেন। রবিবার সকাল ১০টা নাগাদ দেশ-বিদেশের পর্যটক সহ মোট ৩৫ জন যাত্রী বগি বোঝাই করে NJP থেকে টয়ট্রেন ছুটেছে দার্জিলিং-এর উদ্দেশে। কাটিহার ডিভিশনের ডিআরএম সুরেন্দর কুমার-সহ অন্যান্য আধিকারিক সবুজ পতাকা নেড়ে ঐতিহ্যবাহী ডিএইচআর-এর সূচনা করেন।
বাইট:
প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কয়েক মাস বন্ধ রাখতে হয়েছিল ঐতিহ্যবাহী টয় ট্রেন। বিভিন্ন জায়গায় ধস নামার কারণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল পাহাড় এবং সমতলের যোগাযোগ ব্যবস্থা। রংটং এবং কার্শিয়াঙের মধ্যেকার একাধিক রাস্তায় খানা-খন্দ তৈরি হয়েছিল। গর্ত ছিল লাইনে। সেসব সারিয়ে ফের শীতের দার্জিলিং-এ ফিরল টয়ট্রেন। প্রথম দিনেই দেশ বিদেশের পর্যটক নিয়ে ছুটল ট্রেন। ঐতিহ্যবাহী এই টয় ট্রেনে চড়ে বেজায় খুশি পর্যটকেরাও।
বাইট
১৯৯৯ সালের ২ ডিসেম্বর ইউনেস্কো ডিএইচআরকে বিশ্ব ঐতিহ্য তকমা দেয়। দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ে, ডিএইচআর বা খেলনা ট্রেন নামেও পরিচিত এই পরিষেবা। ১৮৭৯ থেকে ১৮৮১ এর মধ্যে নির্মিত এটি প্রায় ৮৮ কিমি (৫৫ মাইল) দীর্ঘ। তাই দার্জিলিং গেলে জয়রাইডে ভ্রমণ মিস করতে চান না পর্যটকেরা। তাই এই ছুটিছাটায় যদি দার্জিলিং প্ল্যান করেই থাকেন, তবে টয়ট্রেনের সফর কিন্তু কিছুতেই মিস করবেন না।