স্কুল সার্ভিসে নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে রাজ্য়ের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির পর, বৃহস্পতিবার হতে চলেছে রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠক। তার আগে মঙ্গলবার সন্ধ্য়ায় বিধানসভায় নিজের সরকারি গাড়ি ফেরত পাঠিয়ে দিলেন পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়। তৃণমূলের মহাসচিব ছাড়া, বর্তমানে তিনি রাজ্যের পরিষদীয়, শিল্প এবং তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রী। সূত্রের দাবি, সোমবার বিকেলেই পার্থর দফতর থেকে বিধানসভাকে জানানো হয়েছিল, মন্ত্রী গাড়ি ফেরত দিতে বলেছেন। মঙ্গলবার বিকেলে সেই গাড়িই ফিরল বিধানসভার গ্যারাজে। গাড়ির চাবি তুলে দেওয়া হয় বিধানসভা কর্তৃপক্ষের হাতে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে রাজ্য রাজনীতিতে শুরু নতুন গুঞ্জন। তাহলে কী এবার মন্ত্রীত্ব হারাতে চলেছেন পার্থ ? রাজনৈতিক মহলের এই প্রশ্ন, কারণ সোমবার বঙ্গ-সম্মানের মঞ্চ থেকেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, দুর্নীতিকে তিনি রেয়াত করবেন না। আইনের দরবারে যদি কেউ দোষী সাব্যস্ত হন, তা-হলে তাঁর সাজা হবে। তিনি এও জানিয়েছিলেন, তৃণমূল দুর্নীতিকে প্রশয় দেয় না। এমনকী দুর্নীতির প্রশ্নে তিনি দলের নেতা-মন্ত্রীকেও রেয়াত করেন না। মুখ্য়মন্ত্রীর এই কথার ২৪ ঘণ্টার মধ্য়েই বিধানসভায় জমা পড়ল রাজ্য়ের পরিষদীয় মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের গাড়ি।
স্কুল সার্ভিসে নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনায় পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের গ্রেফতারি ও অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায়ের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার ২২ কোটি টাকার সঙ্গে সরকার ও তৃণমূলের যে কোনও যোগ নেই, তা-ও সোমবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়। রাজনৈতিক মহলের দাবি, গ্রেফতারির পর তৃণমূল মহাসচিবের ভূমিকায় এমনিতেই চটে আছে তৃণমূলের একাংশ। বিশেষ করে, নিজের অ্য়ারেস্ট মেমোয় মুখ্যমন্ত্রী নাম ও ফোন নম্বর দিয়ে দলের কাছেই বিরাগভাজন হয়েছেন পার্থর।
আরও পড়ুন : পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ওজন ১১১ কেজি! আর কী রয়েছে মেডিক্যাল রিপোর্টে?
এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠক। তৃণমূলের একটি অংশ অবশ্য় দাবি করছে, এই ব্য়াপারে তারা শেষ পর্যন্ত দেখতে চায়। অর্থাৎ পার্থ দোষী সাব্যস্ত হচ্ছেন কীনা, তার উপরেই আগামীর সিদ্ধান্ত ঠিক করা হবে। কারণ, এই ঘটনার পর তৃণমূলের ঘোষিত নীতি, পার্থ দোষী সাব্যস্ত না হওয়া পর্যন্ত তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না। কিন্তু মঙ্গলবার বিধানসভায় গাড়ি ফেরতের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এখন নতুন জল্পনা উসকে উঠল। রাজনৈতিক মহলের দাবি, পার্থকে মন্ত্রী হিসেবে রেখে দেওয়া হবে। কিন্তু পার্থ যদি নিজে ইস্তফা দেন? মঙ্গলবার বিকালে বিধানসভা চত্বরে দাঁড়িয়ে থাকা ‘সাদা গাড়ি’ সেই জল্পনায় অক্সিজেন জোগাচ্ছে।