চলতি বছরের ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই আবাসের টাকা দিয়ে দেবে রাজ্যসরকার। সম্প্রতি নবান্ন থেকে এই বিবৃতিই দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু , এই বিবৃতি আসার আগেই বাংলায় নতুন করে মাথাচাড়া দিয়েছে আবাস যোজনাকে ঘিরে দুর্নীতির অভিযোগ। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মালদা, মুর্শিদাবাদ, দক্ষিণবঙ্গের বীরভূম সহ একাধিক জেলায় আবাসের দুর্নীতিকে হাতিয়ার করেছিল বিরোধীরা। অভিযোগ করা হয়েছিল নিজেদের মেশিনারিকে কাজে লাগিয়ে গরীবের টাকা লুঠ করেছে তৃণমূল সরকার। রাজ্যের বিরোধী দল বিজেপিকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করে তৃণমূল এই ব্যাপারে শ্বেতপত্র প্রকাশের দাবি করেছিল।
২০২৪ এর লোকসভা নির্বাচনে ভোট ময়দানে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিশ্রুতি ছিল, বাংলার বাড়ি বাংলাই বানাবে। তার এই প্রতিশ্রুতিকে শুরু থেকেই সমর্থন করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কার্যত সেই প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন হিসেবেই সম্প্রতি নবান্ন থেকে দাবি করা হয়েছিল আবাসের তালিকাভুক্ত যাঁরা, তাঁরা ২৫ ডিসেম্বরের মধ্যেই একাউন্টে টাকা পেয়ে যাবেন।
কিন্তু পুজোর পর ফের দুর্নীতিতে রাজ্যকে বিদ্ধ করতে তৎপর হন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। সম্প্রতি হাওড়ার শ্যামপুরে এক জনসভা থেকে শুভেন্দুর অভিযোগ কেন্দ্রের দেওয়া টাকা নিজেদের নামে চালাতে চাইছে রাজ্য সরকার। তাঁর কটাক্ষ গত লোকসভা ভোটে যে যে পঞ্চায়েত অঞ্চলে তৃনমূল জমি হারিয়েছে তা ফের মজবুত করতে এবার আবাসের টোপ দেওয়া হচ্ছে।
শুভেন্দুর এই অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল রাজ্যসম্পাদক কুনাল ঘোষ জানিয়েছিলেন, তৃণমূল সরকারের উনন্নয়নকে ভয় পায় বিজেপি। ২০২৬ লোকসভার আগে রাজ্যের উন্নয়ন মানচিত্রে আবাস যোজনা একটা বড় ভূমিকা নিতে চলেছে বলেও দাবি করেছিলেন তৃণমূল নেতা।
রাজনৈতিক এই চাপানউতরের মধ্যেও আবাসের টাকা নিয়ে অভিযোগ এখনও উঠছে। উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট মহকুমার হিঙ্গলগঞ্জ ব্লক যোগেশগঞ্জ গ্রাম পঞ্চায়েতের ৯ নম্বর হেমনগর গ্রামের ঘটনা। ২০২১ এবং ২২ সালে প্রায় ৯০০ জন গ্রামবাসীর আবাস যোজনার জন্য নাম নথিভুক্ত করা হয়েছিল। কিন্তু গ্রামে বারংবার প্রশাসনিক সার্ভে করার পরও মাত্র ৩ জনের নাম এসেছে বলে অভিযোগ।
২০২১ ও ২০২২ সালে এই গ্রামের ৯০০ জন, গ্রামে উপভোক্তা আবাস যোজনা পাওয়ার জন্য তাদের নামের তালিকা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু গ্রামে বারবার প্রশাসনিক ভাবে সার্ভে করার পরও মাত্র তিনজনের নাম এসেছে। আর এই ঘটনাতেই কার্যত ফেটে পড়েছে গ্রামবাসীরা।
শুক্রবার সকাল থেকে গ্রামে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন গ্রামবাসীরা। হিঙ্গলগঞ্জের বিডিও দেবদাস গঙ্গোপাধ্যায়ের কাছে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে অভিযোগ। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, নতুন করে সার্ভে হবে , উপভোক্তা আবাস যোজনার ঘরের বেনিফিসিয়ারি পাওয়ার যোগ্য কিনা বিচার করার পরেই দেওয়া হবে ঘর। ইতিমধ্যে উত্তর ২৪ পরগনা জেলাশাসক শরৎকুমার দ্বিবেদী সহ বিডিও ঘরের দুয়ারে গিয়ে নামের তালিকা নিয়ে পরিদর্শন শুরু করেছেন।