রাজ্য়ে আবার ফিরছেন টাটারা। মেদিনীপুর সফরে যাওয়ার আগে সোমবার কলকাতায় এই ঘোষণা করেছেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। বিজেপির নবান্ন অভিযানের আগে মমতার এই ঘোষণাকে মাস্টারস্ট্রোক বলেই দাবি করছে রাজনৈতিক মহল। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, জলপাইগুড়ির রানিনগরে ৬০০ কোটি টাকার বিনিয়োগ করছে টাটারা। রাজনৈতিক মহলের মতে, নবান্ন অভিযানের আগে মমতার এই ঘোষণায় আপাতত ব্যাকফুটে বিরোধী বিজেপি। সোমবার কলকাতা ছাড়া আগে মমতার এই ঘোষণা সুকৌশল বলেই দাবি রাজনৈতিক মহলের। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না বাংলাকে কৃষি মানচিত্রে উপরের সারিতে তুলে আনার পর শিল্পই এখন মুখ্যমন্ত্রীর পয়লা নম্বরের অগ্রাধিকার। তাই সময় বুঝেই সোমবার রাজ্যে টাটার ফেরত আসার কথা ঘোষণা করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
হুগলির সিঙ্গুর থেকে টাটারা ফিরে যাওয়ার পর অনেকেই তাঁকে কাঠগড়ায় তুলেছিল। এমনকী বাংলায় মসনদে বদল ঘটলেও সিঙ্গুর থেকে ন্যানো গাড়ি তৈরির কারখানা গুজরাতের সানন্দে চলে যাওয়ার জন্য বামেরা বরাবর তাঁর জঙ্গি আন্দোলনকেই দায়ী করে এসেছে। কিন্তু রাজনৈতিক মহলের মতে, রাজ্য়ে ফের টাটাদের ফিরিয়ে এনে বিরোধীদের মুখ আপাতত বন্ধ করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কবে থেকে জলপাইগুড়িতে কাজ শুরু করবেন টাটারা, তা তিনি জানাননি। তবে এটা স্পষ্ট করেছেন রাজ্য়ে ৬০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে টাটারা।
একইসঙ্গে আজ মেদিনীপুর সফর শুরুর আগেই রাজ্য়ে কর্মসংস্থানের দরজা হাট করেছেন তিনি। নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামের অনুষ্ঠান থেকে তিনি জানিয়েছেন, পুজোর আগেই রাজ্য়ে ৩০ হাজারের বেশি যুবক-যুবতীর হাতে নিয়োগ পত্র তুলে দেওয়া হবে। এরমধ্যে ১১ হাজার নিয়োগ পত্র সোমবারই তুলে দেওয়া হয়েছে। বাকি নিয়োগপত্র তিনি তুলে দেবেন তাঁর মেদিনীপুর সফরের মধ্যেই। কারিগরি শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে আগামী দিনে পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর এবং দেউচা-পচামিতে লক্ষাধিক কর্মপ্রার্থীকে নিয়োগ করবে সরকার।
সোমবার বিকেলেই খড়গপুর পৌঁচ্ছে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। আজ, মঙ্গলবার সেখানে তাঁর প্রথম বৈঠক। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলাপরিষদের সভাধিপতি দেবব্রত দাস মারা গিয়েছেন। তাঁর জায়গায় অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব সামলাচ্ছেন সহ সভাধিপতি শেখ সুফিয়ান। তৃণমূল সুপ্রিমোর সামনেই খড়গপুর শিল্পতালুকের বৈঠকে নতুন জেলা পরিষদের সভাধিপতি নিবার্চন করা হতে পারে। এর জন্য এই বৈঠকে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পরিষদের সদস্যদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে এই বৈঠক থেকে পূর্ব মেদিনীপুর তৃণমূল নেতৃত্বকে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।