সময়ের সঙ্গে সঙ্গেই পুজোর সংখ্যা ক্রমে বেড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই চাহিদা বেড়েছে পুরোহিতদেরও। কিন্তু, চাহিদা বাড়লেও পুরোহিতের সংখ্যা অপ্রতুল। নতুন প্রজন্মের এই পেশার প্রতি উৎসাহ তেমন নেই বললেই চলে। তার ওপর গোদের ওপর বিষফোঁড়া মতো রয়েছে শাস্ত্রীয় নীতি- 'ব্রাহ্মণ ছাড়া পুজো হবে না'!
কিন্তু, এর একটা সমাধান তো চাই! সেই সমাধানের লক্ষ্য নিয়েই নদিয়ার হাঁসখালি ব্লকের বগুলায় নতুন পুরোহিতদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করার জন্য বেশ কিছুদিন আগেই চালু করা হয়েছে 'গৌরহরি মডার্ন টোল' নামের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র। যেখানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে ব্রাহ্মণ-অব্রাহ্মণ সকলকেই সেই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে পৌরহিত্য করার জন্য প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন অব্রাহ্মণ মহিলারাও। তাঁরা সকলেই পৌরহিত্যের প্রশিক্ষণ নিয়ে পুজো করার ব্যাপারে অত্যন্ত আগ্রহী।
ওই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা অভিরাম বিশ্বাস জানান, বাড়ির মহিলারা সকাল থেকে উপোস থেকে পুজো সম্পন্ন করতে চান। কিন্তু, ইদানিংপুজো করার জন্য পুরোহিতের ভীষণ অভাবের ফলে পুজোর জোগাড় করার পরেও দীর্ঘক্ষণ ধরে অপেক্ষা করেও ঠিক সময়ে পুরোহিতের দেখা মেলে না।এই সমস্যার সাধনের জন্যই এই টোল তৈরি হয়েছে বগুলায়।
শাস্ত্রে মহিলাদের পূজো করার ক্ষেত্রে কোন বিধিনিষেধ না থাকায় পুরোহিতের অভাব মেটাতে পুরুষ ও মহিলা উভয়কেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে ওই টোলে, যাতে তাঁরা ভালোভাবে পুজো শিখে বিভিন্ন পুজো সম্পন্ন করতে পারেন।
মহিলা পুরোহিতদের চাহিদাও যে ক্রমে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাঁর আচ পাওয়া যায় টোলের প্রশিক্ষকদের কথায়। যাঁরা নিজেদের বাড়িতে পুজো করতে চান, কিন্তু আর্থিক অসঙ্গতির জন্য তা পারেন না, তাঁদের বাড়ির পুজোও করে আসেন এই টোল থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা। বিনা পয়সায়। সকলের একটাই আশা, মাত্র চার বছর পূর্ণ করা বগুলার এই টোল একদিনই বাংলার ঘরে ঘরে পুজো করার লোকের অভাব মিটিয়ে দেবে ঠিকই।