৯ দিনের জন্য গিয়েছিলেন মহাকাশে। অবশেষে সব ঝড় ঝাপটা সামলে পৃথিবীতে ফিরছেন সুনীতা উইলিয়ামসরা। মহাকাশ গবেষণার ইতিহাসেই এক বেনজির ঘটনা!। এলন মাস্কের সংস্থা স্পেস এক্সের মহাকাশযানে চেপেই প্রত্যাবর্তনের পরিকল্পনা রয়েছে। নাসার হয়ে ওভারটাইম করলেন সুনীতারা। ৯ মাস থাকার কথা ছিল স্পেস স্টেশনে, অথচ থাকতে হল ৯ মাস। তা, মোটা অংকের ওভারটাইম পাবেন তো? এই নিয়ে বিস্তর আলোচনা শুরু হয়েছে। আসল সত্যিটা জানলে চমকে যাবেন।
দিনে মাত্র ৩৪৭ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে সুনিতাদের। ৩৪৭ ডলার নয়, ভারতীয় টাকায়, ৩৪৭। ডলারে হিসেব করলে দৈনিক মোটে ৪ ডলার। সেটাও ঠিক সে অর্থে ক্ষতিপূরণ নয়, মহাকাশচারীরা বেতনের পাশাপাশি এটুকু টাকাই পেয়ে থাকেন নাসার নিয়ম অনুসারে। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থার এক অবসরপ্রাপ্ত মহাকাশচারী ক্যাডি কোলম্যান এই হিসেব সামনে এনেছেন।
সুনীতারা নাসার যে স্তরের কর্মচারী, তাতে তাঁদের বেতন বার্ষিক ১ কোটি ৮ লক্ষ টাকা থেকে ১ কোটি ৪১ লক্ষ টাকার মধ্যে। সেই হিসেবে, ৯ মাসের এই মহাকাশ অভিযানে সুনীতারা সর্বনিম্ন ৮২ লক্ষ থেকে সর্বোচ্চ ১ কোটি ৬ লক্ষ টাকার মধ্যে অর্থ পেয়েছেন।
ঘড়ি ধরে সুনীতাদের অবতরণের সময় মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা। আমেরিকার ফ্লরিডার উপকূলে স্থানীয় সময় অনুযায়ী মঙ্গলবার বিকেল ৫টা ৫৭মিনিটে তাঁরা নামবেন। ভারতীয় সময়, বুধবার ভোর সাড়ে ৩টে।
যে স্টারলাইন ক্যাপসুলে চড়ে তাঁরা মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিলেন সেই বাহন পৃথিবীতে ফেরত পাঠিয়ে নিজেরা থেকে গিয়েছিলেন মহাকাশেই। আগেই জানা গিয়েছিল, ২০২৫ এর ফেব্রুয়ারির আগে ফেরা হবে না সুনীতাদের। তারপরেও নানা অনিশ্চয়তার মাঝে পেরিয়ে গিয়েছে আরও এক মাস।
ভারতীয় সময়, সোমবার সকাল ৮টা ১৫ থেকেই সুনীতাদের অবতরণ প্রক্রিয়ার সরাসরি সম্প্রচার চালু হয়ে গিয়েছে নাসার ওয়েবসাইটে।
সুনীতাদের ফিরে আসার পর, আগামী কিছু দিন ISS পরিচালনার দায়িত্ব থাকবেন চারজন, এদের মধ্যে অ্যান ম্যাক্লেন, নিকোল আইয়ার্স নাসার প্রতিনিধি। , জাপানের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা জাক্সার প্রতিনিধি টাকুয়া ওনিশি এবং রাশিয়ার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা রসকসমসের প্রতিনিধি কিরিল পেসকভ।
৯ দিনের জন্য গিয়েছিলেন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশনে। দিনটা ছিল ৫ জুন, ২০২৪। দেখতে দেখতে পেরিয়ে গিয়েছে ৯ মাস। ফেরা হয়নি। মহাকাশযান বোয়িং সিএসটি-১০০ স্টারলাইনার ক্যাপসুলে চড়ে মহাকাশে রওনা দিয়েছিলেন সুনীতারা। আচমকাই একটি দুর্ঘটনায় বদলে যায় পরিস্থিতি। মহাকাশযানে যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়ে। মহাকাশযান থেকে হিলিয়াম গ্যাস লিক হওয়ায় পৃথিবীতে ফেরানো সম্ভব হয়নি। দু’বারের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে।
মহাকাশে দীর্ঘ দিন থাকলে মহাকাশচারীরা যে সমস্ত শারীরিক সমস্যায় পড়েন, সুনীতা এবং বুচও সেই সমস্যার মুখোমুখি হতে শুরু করেছেন। পেশি শিথিল হয়ে এসেছে। হাড় ক্ষয়ে যাওয়াও শুরু হয়েছে। তবে এগুলি মহাকাশচারীদের চেনা অসুস্থতা। এসবের জন্য মানসিক প্রস্তুতি থাকায়, মহাকাশে খোশ মেজাজেই ছিলেন তাঁরা। গত ১৯ সেপ্টেম্বর সুনীতা ঊনষাটের জন্মদিন কাটিয়েছেন মহাকাশেই। ভোটও দিয়েছেন আন্তর্জাতিক স্পেস স্টেশন থেকেই।