মনে করুন, আপনি একটি বদ্ধঘরে রয়েছেন। যেখানে টিভি নেই। ফোন নেই। ল্যাপটপ নেই। কারও সঙ্গে কথা বলার সামান্যতম সুযোগ নেই। শুধুমাত্র ঘরের ভিতরে একটা ছিদ্র আছে, যাতে চোখ রেখে বাইরেটা দেখা যাবে। এর পোশাকি নাম- ভলান্টিয়ারি কনফাইনমেন্ট ফর থ্রি ডেজ বা তিনদিনের স্বেচ্ছায় বন্দিদশা। দক্ষিণ কোরিয়াতে ঠিক এমনটাই শুরু হয়েছে। নতুন ট্রেন্ড। যেখানে অভিভাবকরা নিজেদের এই প্রক্রিয়ায় যুক্ত করছেন।
১৩ সপ্তাহের এই বিশেষ উদ্যোগের দায়িত্বে রয়েছে ব্লু হোয়েল রিকভারি সেন্টার এবং দ্য কোরিয়া ইউথ ফাউন্ডেশন। এখানে থাকতে গেলে ঘরের মধ্যে কোনও বৈদ্যুতিন ডিভাইস ছাড়াই দিনগুলো অতিবাহিত করতে হবে। এটাই প্রাথমিক শর্ত। ঘরে ছোট্ট একটি দরজা থাকবে। যেখান দিয়ে খাবার দেওয়া হবে। ঠিক যেন দক্ষিণ কোরিয়ার বিখ্যাত 'ওল্ড বয়' ছবির সেই দৃশ্য!
কারণ হিসেবে যা উঠে এসেছে, তা অত্যন্ত মানবিক। অভিভাবকরা জানতে চাইছেন এবং বুঝতে চাইছেন, ঠিক কী কারণে তাঁদের সন্তানরা সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে। কী কারণে তাদের গ্রাস করছে অবসাদ।
সন্তানদের অবস্থান বুঝতে পারার জন্য মা-বাবাদের নিজেদেরই অন্ধকার ও বদ্ধঘরে ঠেলে দিয়ে 'অগ্নিপরীক্ষা'-র মুখোমুখি হওয়ার এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাচ্ছেন বহু মনোচিকিৎসকও। 'আমার সন্তান কেন আর কথা বলতে চায় না, কেন সে কারও সঙ্গে মিশতে পারে না তেমন', এই প্রশ্ন আজকের দিনে 'আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে'র আশাটির থেকে যে কোনও অংশে কম গুরুত্বপূর্ণ নয়, সে কথাও ফের একবার মনে করিয়ে দেয় এই বিশেষ উদ্যোগ।