Teacher’s Day 2022 : পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ত মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা গ্রামের ছেলেটি তখন। বয়স ৯ বছর। নাম- বাবর আলি (Babar Ali)। স্রেফ বন্ধুদের পড়াশোনার আলোর কাছাকাছি নিয়ে আসবে বলে নিজেই ২০০২ সালে শুরু করে দিল একটি স্কুল! নাম- আনন্দ শিক্ষা নিকেতন।
মাত্র আটজন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে শুরু হয়েছিল সেই স্কুল। তারই বয়সী ছেলেমেয়েরা, যারা কেউ কাগজ কুড়োত, কেউ বিড়ি বাঁধত তারা সকলেই একে পড়তে এলো (Teachers day 2022) সেই স্কুলে। যা শুরু হয়েছিল একটা পেয়ারা গাছের তলায়। এমনকি বাবরের পাঁচ বছর বয়সী বোনটিও ছিল 'আনন্দ শিক্ষা নিকেতন'-এরই একজন ছাত্রী।
এই স্কুল তৈরির কাজে তাঁকে সবথেকে বেশি যাঁরা সাহায্য করেছিলেন, তাঁরা হলেন বানুয়ারা বিবি ও মহম্মদ নাসিরুদ্দিন। বাবরের মা ও বাবা।
আরও পড়ুন: ভারত থেকে আসা গরুর উপর নির্ভর করে না বাংলাদেশ, গরু পাচার নিয়ে মুখ খুললেন শেখ হাসিনা
২০০৯ সাল থেকেই দেশ-বিদেশের বিভিন্ন সম্মানে ভূষিত হতে আরম্ভ করেন বাবর আলি (Babar Ali)। ২০১২ সালে গিয়েছিলেন আমির খানের 'সত্যমেব জয়তে'-তে'ও। ফোর্বস এশিয়ার 'থার্টি আন্ডার থার্টি'র তালিকাতেও নিজের জায়গা করে নেন তিনি।
২০০৯ সালের অক্টোবর মাসে মাত্র ১৬ বছর বয়সী বাবর আলিকে বিশ্বের কনিষ্ঠতম প্রধানশিক্ষক (Youngest Headmaster of the world) হিসেবে সম্মানিত করে বিবিসি (BBC)। ইংরেজিতে স্নাতকোত্তর ২৯ বছর বয়সী বাবর আলির জীবনকাহিনী পড়ানো হয় কর্নাটক সরকারের একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে। এমনকি, সিবিএসই বোর্ডের দশম শ্রেণির পাঠ্যপুস্তকেও জায়গা করে নিয়েছে বাবর আলির কাহিনী। ২০২০ সালের প্রজাতন্ত্র দিবসের আগে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের মুখেও শোনা গিয়েছিল বাবরের সুখ্যাতি।
নিজের স্কুলটা শুরু করার পর, যে স্কুলে তিনি পড়তেন, সেখান থেকেই চক নিয়ে আসতেন বাবর। কারণ, চক ছিল না ৯ বছর বয়সী হেডমাস্টারের স্কুলে! এখন তাঁর কাছে বহু চক। বহু চোখও তাঁর দিকে। তাকিয়ে থাকে শিক্ষায় বেঁচে থাকার অমোঘ সুখ নিয়ে। এই ভরসা ও বিশ্বাসের চোখগুলোই তো তাঁর মত শিক্ষকের কাছে যা দেশ-বিদেশের সব সম্মানকেও ছাপিয়ে যায় নির্দ্বিধায়।
এই শিক্ষক দিবসে এমন কিছু বাবরের জন্য পৃথিবীটা আরও একটু সুন্দরের দিকে এগিয়ে যাক। বহু স্কুলছুট পড়ুয়া জীবনের নতুন মানে খুঁজে পাক কনিষ্ঠতম প্রধানশিক্ষকের শাসনে-আদরে, এমনটাই আশা।