বাংলাদেশে বসবাসকারী হিন্দুদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে মহম্মদ ইউনুস সরকারকে এবার সরাসরি বার্তা দিল ভারত। ঢাকা থেকেই এই বার্তা দিয়েছেন ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি। একদিকে, হাসিনা সরকারের পতন, অন্যদিকে বাংলাদেশের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতির মধ্যে বিদেশসচিব পর্যায়ে দু দেশের দ্বিপাক্ষিক বৈঠককে ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ বলেই দাবি করেছে কূটনৈতিক মহল। এদিনই সকালে ঢাকায় যান ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিশ্রি। বাংলাদেশের বিদেশসচিব জসীমউদ্দিনের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি জানান, বন্ধুত্বপূর্ণ ভাবেই আলোচনা হয়েছে।
অগ্নিগর্ভ বাংলাদেশ পরিস্থিতির মধ্যেই ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন বিএনপি নেতা রহুল কবীর রিজভি। রংপুরে এক জনসভা থেকে তাঁর হুমকি ছিল, শুধু কলকাতা নয়, দরকারে বাংলা-বিহার-উড়িশা দখল করা হবে। বঙ্গ বিধানসভা থেকে কট্টরপন্থী বিএনপি নেতাকে জবাব ফিরিয়ে দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, যাঁরা ভাবচ্ছেন দখল করবেন, তাঁরা ভুল করছেন।
এই বঙ্গ বিধানসভায় দাঁড়িয়ে বাংলাদেশে হিন্দুদের স্বার্থরক্ষার জন্য কেন্দ্রকে ঢাকায় শান্তিরক্ষা সেনা পাঠানোর জন্য দরবার করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই বিধানসভা থেকে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে তাঁর সরকারের অবস্থান ফের স্পষ্ট করলেন তিনি। এদিন তিনি জানান, পশ্চিমবঙ্গে এমন পরিস্থিতি তিনি কখনই বরদাস্ত করবেন না। তাঁর মতে, সমাজের যাঁরা বোঝা তাঁরাই চেষ্টা করেন হিংসায় প্ররোচনা দিতে।
তবে, বাংলাদেশ নিয়ে রাজ্যে তৃণমূল সরকারের অবস্থানের কড়া সমালোচনা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর অভিযোগ, বিধানসভায় মুখ্যমন্ত্রী ভ্রান্ত কথা বলছেন। বাংলাদেশ হিন্দুদের উপর যে অত্যাচার হচ্ছে, সেই ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে কোনও খবর নেই বলেও দাবি করেছেন শুভেন্দু।
বাংলাদেশে হিন্দু বিদ্বেষের আবহে দু দেশের মধ্যে বিদেশ সচিব পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। লোকসভায় তৃণমূলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ঢাকা যাওয়ার আগে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিদেশসচিব বিক্রম মিশ্রি একবার কথা বলতে পারতেন। কারণ, বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। যদিও কেন্দ্রীয়মন্ত্রী ও রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এই দাবিকে উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি আশা করছেন, ভারতের সরাসরি অনুরোধে বাংলাদেশে এবার শান্তি ফিরবে। কারণ, যে ছবি তৈরি হয়েছে, তা বাংলাদেশের জন্যও সুখকর নয়।