ভাই-বোনের ভালোবাসা, অটুট বন্ধনের প্রতীক ভাইফোঁটা । কালীপুজো বা দীপাবলির ঠিক দুদিন পরেই ভাইফোঁটা পালন করা হয় । শুধু পশ্চিমবঙ্গই নয়, দেশজুড়ে ভাইফোঁটার প্রচলন রয়েছে । কোথাও এটা যম দ্বিতীয়া, কোথাও ভাই বীজ, কোথাও আবার ভাতৃ দ্বিতীয়া বা টিক্কা নামে পরিচিত ।
ভাতৃ অর্থাৎ ভাই এবং দ্বিতীয়া... এই দুটি শব্দ নিয়ে গঠিত ভাতৃদ্বিতীয়া । এখানে 'দ্বিতীয়া'-র অর্থ অমাবস্যার দ্বিতীয় দিন । এই উৎসব কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় দিনে পালিত হয় । সেই অনুযায়ী এ বছর ৬ নভেম্বর দেশজুড়ে পালিত হবে ভাইফোঁটা বা ভাইদুজ ।
ভাইফোঁটার দিন প্রথমে ভাইকে আসনে বসানো হয় । এরপর তার সামনে রাখা হয়, থালা ভর্তি পাঁচ রকম মিষ্টি । সঙ্গে থাকে প্রদীপ, চন্দন বাটা । ঘিয়ের ফোঁটারও চল রয়েছে । শঙ্খধ্বনিতে ভাইয়ের মঙ্গল কামনায় বোনেরা নিজেদের ভাইয়ের কপালে ফোঁটা দেন । এবছর ফোঁটা দেওয়ার শুভক্ষণ হল দুপুর ১টা ১০ থেকে ৩টে ২২ পর্যন্ত ।
Bhaifota 2021: এই ভাইফোঁটায় কী উপহার দিতে পারেন আপনার ভাই অথবা বোনকে, জেনে নিন
পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, ভাইফোঁটার দিন যমরাজ তাঁর বোন যমুনার বাড়িতে গিয়েছিলেন । সূর্যের পুত্র যম ও যমী বা যমুনা ছিলেন ভাই-বোন । যমুনা একাধিকবার ভাই যমকে তাঁর বাড়িতে আসার জন্য নিমন্ত্রণ জানান । অবশেষে অমাবস্যার শুক্লপক্ষের দ্বিতীয় দিনে তাঁর বাড়িতে যান যমরাজ । এদিন, যমুনা ভাই যমরাজের কপালে তিলক বা ফোঁটা দিয়ে তাঁর সুখী জীবন কামনা করেন । সেইসঙ্গে, ভাই যমকে ভোজনও করান । যমরাজ বোনকে বর চাইতে বললে, যমুনা তাঁকে তাঁর বাড়িতে প্রতি বছর এই দিনেই তাঁর বাড়িতে আসার জন্য অনুরোধ করেন । সেইসঙ্গে তিনি বলেন, এই তিথিতে যে বোন নিজের ভাইকে ফোঁটা দিয়ে ভোজন করাবে, তাঁর কখনও যমের ভয় থাকবে না । তার পর থেকেই ভাই ফোঁটার রীতি পালিত হয়ে আসছে।
ভাই ফোঁটা সম্পর্কে আরেকটি কাহিনি রয়েছে । পৌরাণিক কাহিনি অনুসারে, যা শ্রী কৃষ্ণ নরকাসুর বধ করে দ্বারকায় ফিরে আসলে বোন সুভদ্রা ফল, ফুল, মিষ্টি এবং প্রদীপ জ্বালিয়ে তাঁকে স্বাগত জানান । সেইসঙ্গে কৃষ্ণের কপালে তিলক দিয়ে দীর্ঘায়ু কামনা করেন তিনি ।